চীনে দেশী পন্যের শুল্কমুক্ত সুবিধা লাভ, নাখোশ ভারত

    বাংলাদেশ মেইল ::

    এশিয়া প্যাসিফিক ট্রেড এগ্রিমেন্টে চীন বাংলাদেশকে  ৩০৯৫টি  পণ্য শুল্কমুক্ত করেছিল। এবার নতুন করে ছাড় দেওয়ায় চীনে শুল্ক মুক্ত প্রবেশাধিকার পেল বাংলাদেশের  ৮২৫৬টি  পণ্য।

    শুক্রবার বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ঘোষণা করেছে, বাংলাদেশ থেকে রফতানি হওয়া ৯৭% পণ্যে শুল্কমুক্ত হয়েছে চীনে। এর মধ্যে রয়েছে মত্‍স্য ও চামড়ার পণ্য। বিষয়টিকে দেশীয় পন্যের বাজার সম্প্রসারণে  কূটনৈতিক বিজয় হিসেবে দেখছে সরকার।

    কিন্তু সমালোচকরা বিষয়টিকে অর্থনৈতিক  কূটনীতির চেয়ে রাজনৈতিক মিত্রতার চাল হিসেবে দেখছেন।

    বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্র মন্ত্রণালয়ের  মুখপাত্র মুহম্মদ তোহিদুল ইসলাম মনে করেন ,” শুল্ক ছাড়ের বিষয়টি মিত্রতার নয় বরং অর্থনৈতিক কূটনীতির অংশ হিসেবে পণ্যে ছাড় দেওয়ার আবেদন করেছিল বাংলাদেশ সরকার। ওই আবেদনে সাড়া দিয়েছে চীনের শুল্ক কমিশন। বাংলাদেশ স্বল্পোন্নত দেশ, সে কারণেই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে চীন। বাংলাদেশের সাথে প্রতিবেশী রাস্ট্রগুলোর সাথে সবসময় সুসম্পর্কই ছিল। এখানে নতুন মিত্রতার কিছু নেই৷  ”

    চীন সরকার  স্বল্পোন্নত দেশের আর্থিক উন্নয়নে এমন সুবিধা দেওয়া হয়েছে বলে জানালেও ভারতীয় গণমাধ্যমগুলো বিষয়টিকে দেখছে ভিন্ন ভাবে  । আনন্দবাজারসহ বেশ কয়েকটি পত্রিকায় শুল্কমুক্ত সুবিধা সম্প্রসারণের বিষয়টিকে প্রতিকুল পরিবেশে বাংলাদেশকে কাছে টানা প্রচেষ্টা বলে সংবাদ ছাপিয়েছে।

    তবে শুধু শুল্ক ছাড়  নয়, বাংলাদেশে বিনিয়োগও বাড়িয়েছে চীন। মাসখানেক আগে করোনা মহামারী  নিয়ে আলোচনা করেছিলেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং। দ্বিপাক্ষিক আলোচনায় শুল্কমুক্ত সুবিধা দেয়া পণ্যের তালিকায় নতুন পন্য যুক্ত করার প্রস্তাবও ছিল৷

    কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে লাখাদ সীমান্তে চীন -ভারতের দ্বন্দের কারনে এখন কড়াকড়িভাবে  সামনে আনা হচ্ছে চীন থেকে বাংলাদেশি পন্যের শুল্কমুক্ত সুবিধা পাবার বিষয়টি।

    ভারতীয় বিশ্লেষকরা বলছেন  লাদাখে চীনা আগ্রাসনের মোকাবিলা করছে ভারত সরকার। পশ্চিম দিকে পাকিস্তান ইতিমধ্যেই চীনের কব্জায়। অতি সম্প্রতি আবার নেপালও ভারতীয় ভূখণ্ডের একাংশ নিজেদের দাবি করে মানচিত্র সংশোধন করেছে। শ্রীলঙ্কা ও ভূটানের সঙ্গেও আগের মতো সম্পর্ক নেই নয়াদিল্লির। মালদ্বীপে  জমি পুনরুদ্ধার করতে সক্ষম হয়েছে ভারত । এমন প্রেক্ষাপটে ভারতের অন্যতম বন্ধু রাষ্ট্র বাংলাদেশকে আর্থিক সুবিধা দিয়ে কূটনৈতিক খেলায় নেমে পড়েছে বেইজিং। নেপালের পর বাংলাদেশ। ভারতের সঙ্গে লড়াইয়ে পড়শিদের পাশে পাওয়ার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে চীন। বাংলাদেশ থেকে রফতানিকৃত ৯৭ শতাংশ পণ্যকেই শুল্কমুক্ত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে চীন।

    দেশের বিশ্লেষকদের মতে  বাংলাদেশি পণ্য শুল্কমুক্ত হওয়ায় চীন-বাংলাদেশ সম্পর্ক নতুন উচ্চতায় পৌঁছল। এদিকে,  শি জিনপিং সরকারের এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছে বাংলাদেশ । তবে সম্পর্কের পরিপূর্ণতা পাবে রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনে চীনের ইতিবাচক ভূমিকার উপর।