বৃটিশ গোয়েন্দা রিপোর্ট, রাশিয়ার মূল টার্গেট যুক্তরাজ্য

    বাংলাদেশ মেইল ::

    যুক্তরাজ্যকে পশ্চিমা দুনিয়ার সবচেয়ে বড় লক্ষ্যবস্তুর একটি বলে মনে করে রাশিয়া। বৃটিশ পার্লামেন্টের নিরাপত্তা ও গোয়েন্দা সংক্রান্ত ইন্টেলিজেন্স অ্যান্ড সিকিউরিটি কমিটি (আইএসসি) এক রিপোর্টে এই মন্তব্য করেছে। এতে বলা হয়েছে, বৃটেনে রাশিয়ার হস্তক্ষেপ এক নতুন স্বাভাবিক নিয়মে পরিণত হয়েছে। এ বিষয়ে রাশিয়ার পক্ষ থেকে যে হুমকি আসছে তা মোকাবিলায় অবিলম্বে পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানানো হয়েছে। এতে আরো বলা হয়েছে, ইউরোপীয়ান ইউনিয়ন বিষয়ক গণভোটে হস্তক্ষেপের বিষয় সরকার সক্রিয়াভাবে এড়িয়ে গেছে। এই রিপোর্ট প্রকাশে বিলম্ব করার কোনো যুক্তি নেই বলে এতে উল্লেখ করা হয়। এ খবর দিয়েছে অনলাইন বিবিসি। এতে আরও বলা হয়, রিপোর্টে বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের সাথে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক এবং ‘পশ্চিমা বিশ্বে প্রধান রুশ-বিরোধী লবি’- এ কারণে বৃটেন রাশিয়ার লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হয়েছে।

    রিপোর্টটি আরও আগে প্রকাশিত হওয়ার কথা থাকলেও আজই সেটি প্রকাশ করা হলো। তবে এতে অনেক স্পর্শকাতর বিষয় থাকায় রিপোর্টের অনেক কিছুই জনগণের সামনে প্রকাশ করা হবে না। বিবিসি বাংলা লিখেছে, রাশিয়ার তরফে মিথ্যে তথ্য প্রচার, সাইবার আক্রমণ এবং বৃটেনে রুশ নাগরিকরা এই রিপোর্টের বিষয়বস্তু হিসেবে থাকছে। আইএসসির রিপোর্টে যুক্তরাজ্যে বিভিন্ন সময়ের সরকারের সমালোচনা করে বলা হয়, এরা ‘রুশ অলিগার্ক’ নামে পরিচিত বিত্তবান ও প্রভাবশালী ব্যবসায়ীদের বুকে টেনে নিয়েছে। রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন রুশ হস্তক্ষেপের অভিযোগ বরাবরই অস্বীকার করে আসছেন। যার ফলে বৃটেনের ওপর রুশ প্রভাব এখন এক ‘নিউ নর্মাল’ বা নতুন এক স্বাভাবিক বিষয়ে পরিণত হয়েছে বলে আইএসসির রিপোর্টে মন্তব্য করা হয়েছে। এই রিপোর্ট প্রকাশ উপলক্ষে এক সংবাদ সম্মেলনে আইএসসির একজন সদস্য কেভিন জোন্স রিপোর্টটি প্রকাশে দেরি করার জন্য প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনের সমালোচনা করেন। ডিসেম্বরে নির্বাচনের আগে রিপোর্টটি প্রকাশ করার কথা ছিল। প্রধানমন্ত্রীর দফতরের বিরুদ্ধে অভিযোগ করা হচ্ছে তারা সেটি আটকে রেখেছিল। তবে ডাউনিং স্ট্রিট অভিযোগ অস্বীকার করেছে। বৃটেনে নির্বাচনকে ঘিরে ভুয়া তথ্য প্রচারের জন্য সে দেশটিকে ‘পরিষ্কারভাবে টার্গেট’ করা হয়েছিল বলে আইএসসির রিপোর্টে বলা হয়েছে। কিন্তু সে সময় বিষয়টিকে ‘হট পটেটো’ বা বিতর্কিত বিষয় হিসেবে বিবেচনা করা হয়, এবং এর বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নিতে কোন একক সংস্থা প্রস্তুত ছিল না। আইএসসির সদস্য স্টুয়ার্ট হোসি বলেন, কেউ একে ১০ ফুট দীর্ঘ লাঠি দিয়ে স্পর্শ করতেও রাজি ছিল না।
    ব্রেক্সিট বা ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে বৃটেনের প্রত্যাহার প্রশ্নে ২০১৬ সালে যে গণভোট হয়েছিল সেখানে রাশিয়া কোনভাবে প্রভাব বিস্তার করেছিল কিনা, সে সম্পর্কেও কোন মূল্যায়ন করা হয়নি, বলছেন তিনি, ‘কারণ, তারা এ সম্পর্কে জানতে আগ্রহীও ছিল না।’ কেভিন জোন্স বলেন, ২০১৪ সালের স্কটল্যান্ডের স্বাধীনতার প্রশ্নে গণভোটের সময় কোন রুশ হস্তক্ষেপ ঘটেছিল কিনা সরকার তাও জানতে চায়নি।