পল্লবী থানায় বোমা বিস্ফোরণ
    মিরপুরের ডিসিসহ ছয় কর্মকর্তা বদলি

    বাংলাদেশ মেইল ::

    রাজধানীর পল্লবী থানায় বোমা বিস্ফোরণের ঘটনাকে কেন্দ্র করে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) ছয় কর্মকর্তাকে বদলি করা হয়েছে। গতকাল শনিবার ডিএমপি কমিশনার মোহা. শফিকুল ইসলাম স্বাক্ষরিত এক অফিস আদেশে এই বদলি করা হয়। এদিন অন্য এক আদেশে আরো ছয় কর্মকর্তাকে বদলি করা হয়েছে।

    ডিএমপি সদর দপ্তরের তথ্য মতে, মিরপুর বিভাগের উপপুলিশ কমিশনার (ডিসি) মো. মোস্তাক আহমেদকে উপপুলিশ কমিশনার (প্রটেকশন বিভাগ) হিসেবে বদলি করা হয়েছে। আর প্রটেকশন বিভাগের উপপুলিশ কমিশনার আ স ম মাহাতাব উদ্দিনকে উপপুলিশ কমিশনার মিরপুর বিভাগে বদলি করা হয়েছে। একই আদেশে পল্লবী জোনের অতিরিক্ত উপপুলিশ কমিশনার মো. মিজানুর রহমানকে অতিরিক্ত উপপুলিশ কমিশনার (অপারেশনস বিভাগ) হিসেবে বদলি করা হয়েছে। অপারেশনস বিভাগের অতিরিক্ত উপপুলিশ কমিশনার মো. আরিফুল ইসলামকে অতিরিক্ত উপপুলিশ কমিশনার পল্লবী জোনে বদলি করা হয়।

    এ ছাড়া পল্লবী জোনের সহকারী পুলিশ কমিশনার মো. ফিরোজ কাউছারকে সহকারী পুলিশ কমিশনার ওয়েলফেয়ার অ্যান্ড স্পোর্টস এবং ওয়েলফেয়ার অ্যান্ড স্পোর্টস বিভাগের সহকারী পুলিশ কমিশনার মো. শাহ কামালকে পল্লবী জোনের সহকারী পুলিশ কমিশনার হিসেবে বদলি করা হয়েছে।

    গতকাল ডিএমপি কমিশনারের অন্য এক আদেশে ছয় পুলিশ পরিদর্শককে (নিরস্ত্র) বদলি করা হয়েছে। তাঁরা হলেন ডিএমপির পল্লবী থানার ওসি মো. নজরুল ইসলামকে প্রসিকিউশন বিভাগে, সূত্রাপুর থানার ওসি কাজী ওয়াজেদ আলীকে ওসি পল্লবী থানা, পল্লবী থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত)  মোহাম্মদ আব্দুল মাবুদকে গোয়েন্দা লালবাগ বিভাগে, পুলিশ পরিদর্শক আবু সাঈদ আল মামুনকে পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) পল্লবী থানা, পল্লবী থানার নিরস্ত্র পুলিশ পরিদর্শক (অপারেশনস) মোহাম্মদ এমরানুল ইসলামকে গোয়েন্দা ওয়ারী বিভাগ এবং সিটিটিসির পুলিশ পরিদর্শক মো. ইয়ামিন কবিরকে পুলিশ পরিদর্শক (অপারেশনস) বিভাগে বদলি করা হয়েছে।

    গত ২৯ জুলাই দিবাগত রাত ১টা ৫৫ মিনিটে পল্লবীর কালশীতে অভিযান চালিয়ে রফিকুল ইসলাম, শহিদুল ইসলাম ও মোশারফ হোসেন নামের তিন ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় তাঁদের সহযোগী জনি ও আলমগীর নামের দুজন পালিয়ে যায়। গ্রেপ্তারকৃতদের কাছ থেকে দুটি আগ্নেয়াস্ত্র, চারটি গুলি ও একটি ডিজিটাল ওয়েট মেশিনের মতো ডিভাইস উদ্ধার করা হয়। সেগুলো থানার ওসির (তদন্ত) রুমের টেবিলে রাখার পরপরই বিস্ফোরিত হয়।

    তবে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, থানার ভেতরে বিস্ফোরিত বোমা ঘিরে রহস্যের জট এখনো খোলেনি। ওজন মাপার মতো একটি ডিজিটাল মেশিনে কেন বোমা রাখা হয়েছিল, তদন্তে তা গুরুত্ব পেলেও গোয়েন্দা পুলিশ এখনো জানতে পারেনি এর নেপথ্যের কারণ। তদন্তসংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, এই ঘটনার প্রকৃত সত্যতা জানতে আরো তদন্তের প্রয়োজন।

    থানার ভেতরে বোমা বিস্ফোরণের সঙ্গে নিষিদ্ধঘোষিত কোনো জঙ্গি সংগঠনের সংশ্লিষ্টতা পাওয়া গেছে কি না জানতে চাইলে ডিএমপির কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইমের (সিটিটিসি) স্পেশাল অ্যাকশন গ্রুপের (এসএজি) উপকমিশনার (ডিসি) আবদুল মান্নান বলেন, এই ঘটনার সঙ্গে এখনো কোনো জঙ্গিসংশ্লিষ্টতা পাওয়া যায়নি। তবে আসামিদের অস্ত্র ও গুলি সংগ্রহের নেপথ্যে মিরপুর এলাকার কাউকে টার্গেট কিলিং এবং আধিপত্য বিস্তারের তথ্য পাওয়া যাচ্ছে।

    গোয়েন্দা কর্মকর্তা আবদুল মান্নান বলেন, পল্লবী থানা পুলিশের হাতে অস্ত্র, গুলি ও বিস্ফোরকসহ তিনজন গ্রেপ্তারের সময় আরো দুজন ছিল, যারা পালিয়ে গেছে, তাদেরও গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।