খাগড়াছড়ির সফল আত্মকর্মী বীনা ত্রিপুরা এখন স্বাবলম্বী নারী

    বাংলাদেশমেইল:  শুরুটা ছিল একেবারেই শূন্য থেকে। পৌর এলাকার অনেক নারীই তাঁর কাছ থেকে সেলাই’র প্রশিক্ষণ নিয়ে কাজ করছেন। সেলাই মেশিন বা সুঁচ আর সুতোয় নিপুণ হাতে প্রতিনিয়ত তৈরি করছেন বাহারি পোশাক। এমনই একজন নারী পৌর শহরের খাগড়াপুর এলাকার বীনা ত্রিপুরা।

    সাংসারিক কষ্ট থেকে বাঁচতে সংসারের এই অবস্থায় নিজেকে কিছু একটা করতে হবে ভেবেই বীনা ত্রিপুরা শুরু করলেন সেলাইয়ের কাজ।

    সেলাইয়ের কাজ করে গরিব মা এবং ছেলে মেয়েদেও নিয়ে সংসারের হাল ধরেছেন তিনি । দুই ছেলে মেয়েকে শেখাচ্ছেন লেখাপড়া। কাজের পাশাপাশি এখন তিনি সেলাই প্রশিক্ষণও দিয়ে থাকেন। এর মধ্যেই ভাল কাজ করে খাগড়াছড়ি জেলাতে বেশ সুনাম অর্জন করেছেন তিনি।

    সংসার চালানো থেকে শুরু করে ছেলে মেয়েদের লেখাপড়ার খরচ নির্বাহ করেন তার এই আয় থেকে। কাপড় সেলাই’র কাজের পাশাপাশি সংসারের সমস্ত কাজ করেন তিনি। জীবনের সঙ্গে যুদ্ধ করতে করতেই তিনি নিজেকে তৈরি করেছেন।

    বীনা ত্রিপুরা খাগড়াছড়ি এক সফল আত্মকর্মী । যার জন্ম খাগড়াছড়ি জেলা শহরের সন্নিকটে খাগড়াপুর গ্রামে। বীনার বাবা একজন বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর অবসর প্রাপ্ত সৈনিক। মা গৃহিনী। ছোট কাল থেকে বেড়ে উঠেছেন শহরের সন্নিকটে খাগড়াপুর গ্রামে।

    সম্প্রতি ২০১৮ সালে তিনি খাগড়াছড়ি জেলার একজন সফল আত্মকর্মী হিসেবে যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় থেকে সফল আত্মকর্মীর সম্মাননা পান বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় প্রধান মন্ত্রী স্বয়ং নিজ হাতে তুলেদেন এই সম্মাননা।

    এবং পেয়েছেন চট্রগ্রাম বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয় ও মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তর থেকে ২০১৮ বাংলাদেশ জয়িতা অন্বেষণ পুরস্কার।

    ১৯৯৬ সালে ৭ম শেণিতে পড়ার বাবা মার পছন্দের ছেলেকে বিয়ে করতে বাধ্য হয়। পরে ২০১৫ সালে স্বামীর সাথে তার ডিভোর্স হওয়ার পর অসহায় হয়ে পড়েন বীনা ত্রিপুরা। পরে দুই সন্তানের কথা চিন্তা করে শুরু করেন জীবন সংগ্রাম। তার এক মাসির পরামর্শে সেলাইয়ের প্রশিক্ষণ নেন খাগড়াছড়ি যুব উন্নয়ন অধিদপ্তর থেকে। ছয় মাস প্রশিক্ষণ শেষ করে যুব উন্নয়ন থেকে ঋণ নিয়ে শুরু করেন হেমি টেইলার্স নামে একটি দোকান। সেই দোকানে সেলাই করেন মেয়েদের ব্লাউজ,ট্রিপিজ,পেটিকোট,ছোট মেয়েদের ফ্রক,পেন্ট,স্কুল ড্রেসসহ বিভিন্ন কিছু।

    বীনা ত্রিপুরা কাজের মান দেখে তার কাছে কাজ শিখতে আসে ঘরে বসে থাকা অনেক বেকার যুবতি। তার কাজ থেকে কাজ শিখে অনেকে এখন স্বাবলম্বী হয়েছেন।

    বীনা ত্রিপুরা বলেন তার কাছে কাজ শিখে যারা তার দোকানে কাজ করতে চাই,তাদের তিনি নিদিষ্ট বেতনে কাজের সুযোগ দেন। আর যারা নিজ এলাকা বা বাড়ীতে কাজ করতে চাই.তাদের তিনি সেলাই মেশিন কিনে দেওয়ার সহযোগীতা করেন।

    বীনা ত্রিপুরা একজন সফল নারী কারন তিনি সংসারের বিভিন্ন সমস্যা থাকার পরও যুদ্ধ করে এতদুর পযর্šÍ এগিয়ে এসেছেন। তার এক ছেলে এক মেয়ে। বড় ছেলে অর্কিত ত্রিপুরা আর ছোট মেয়ে হেমি ত্রিপুরা পড়াশুনা করছেন।

    বাংলাদেশমেইল/প্রতিনিধি/ বিপ্লব তালুকদার/খাগড়াছড়ি