এস এম শওকত হোসেনের একটি কবিতা

     

    কবিতা

    প্রকৃতি ও আমি

    মনটা আমার উড়ু উড়ু, বাঁধন মানে না।
    হেথায় হোথায় ছুটতে চায়,
    বন্ধন আমার ভাল লাগে না।
    ছুটে যেতে চাই-
    মুক্ত আকাশ, বিশাল সমুদ্র, পাহাড়ের মমতায়।
    ঝরনার গান, ঝিরি ঝিরি সূর,
    শুকনো পাতা, গা চম চম,
    গহীন অরণ্য,
    পাখির কলকাকলিতে খুঁজি ফিরি আমায়।
    সবুজ মাঠ, মৃদু হাওয়ার দোল,
    নবান্নের উৎসব,নতুন ধানের সোঁদা গন্ধ,
    পালা গান – কবিতা পাঠের আসর,
    খেজুরের রস, পিঠা-পায়েস,
    কাশফুলের শুভ্রতায় হৈমন্তির নব সাজ,
    শীতের শিশির, মুক্ত ঝরা ভোর,
    মধুমাসের হাজার ফলের ঘ্রাণে আমি জীবন খুঁজে পাই।
    নদীর জলের কূল কলতান, পালতোলা নৌকা,
    ভাটিয়ারী গান, বাউলের একতারা,
    ছায়া সুনিবিড় শান্ত গাঁ, মেঠ পথ,
    গাঁয়ের কূল বধুর জলকে যাওয়া,
    লাজুক চরণে আলতার আলপনা,
    বাহারি চুড়ি, রিনিঝিনি ঝঙ্কার,
    গাড়ীয়ালের দরাজ গলায় বিচ্ছেদ,
    কৃষকের হাসি, সোনালি ফসলে ভরা খেত,
    বটের তলায় বসা যুবকের বাঁশীর মূর্ছনায় আমি বিলিন হতে চাই।
    দিগন্ত জোড়া মাঠ, গোধুলী লগ্ন,
    কৃষাণ- কৃষাণীর নীড়ে ফেরা,
    হিমেল বাতাস, প্রকৃতির সোঁদা গন্ধ,
    দীঘির স্বচ্ছ জল, শাপলা-শালুক,
    পাতি হাঁস, ডাহুকের লুকোচুরি,
    ছোট্ট কিশোরির বড়শিতে ধরা পুঁটি মাছ,
    অনাবিল খুশির ঝরনা ধারা,
    মাছ রাঙা পাখি, কোকিলের কুহুতান-
    আর বাউলের গানে নিজেকে হারাতে চাই।
    চাঁদনি রাত, শুভ্র জোছনা,
    প্রেয়সির অপেক্ষা, প্রনয়ের সুখ,
    ব্যাথিতের পাশে বসে দু’দন্ড সময়,
    কপালে ভালবাসার আলতো ছোঁয়া,
    আর্তের ভালবাসায় আমি লিন হতে চাই।
    প্রকৃতি ও আমি একাকার হতে চাই।