পাকিস্থানে ধর্ষনের দায়ে দুই ধর্ষকের মৃত্যুদন্ড

    বাংলাদেশ মেইল ::

    সড়কে সন্তানের সামনে পাকিস্তানি বংশোদ্ভূত এক ফরাসি নারীকে ধর্ষণের দায়ে দুই ব্যক্তিকে মৃত্যুদণ্ডের রায় দিয়েছে আদালত। তারা হলো আবিদ মেহলি এবং শাফকাত আলি বাগগা। ওই নারী ও তার দুই সন্তান একটি সড়কে নিজেদের গাড়িতে করে যাচ্ছিলেন। কিন্তু লাহোরের কাছে একটি সড়কে তাদের গাড়ির তেল ফুরিয়ে যায়। এ সময় ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয় ওই দু’জন। তারা ওই নারীর গাড়ির দরজা ভেঙ্গে ভিতরে প্রবেশ করে। কেড়ে নেয় টাকাপয়সা ও ব্যবহার্য্য সব। এরপর সন্তানের সামনে তাকে ধর্ষণ করে।

    এ ঘটনা প্রকাশ পেলে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। জনগণের মধ্যে উত্তেজনা দেখা দেয়। এর প্রেক্ষিতে তদন্ত করা হয়। কেন ওই নারী গভীর রাতে এভাবে বেরিয়েছিলেন তা জানতে চায় পুলিশ। এমন প্রশ্ন করার কারণে জনক্ষোভ আরো তীব্র হয়। শনিবার লাহোরের বিশেষ আদালত আবিদ মেহলি এবং শাফকাত আলীকে গণধর্ষণ, অপহরণ, ডাকাতি ও সন্ত্রাসের অভিযোগে অভিযুক্ত করে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছে। আসামীদের আইনজীবী বলেছেন, তারা এ রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করবে।
    উল্লেখ্য, ২০২০ সালের ৯ই সেপ্টেম্বর ওই নারী লাহোর থেকে গভীর রাতে বেরিয়েছিলেন। তার সঙ্গে ছিল দুটি সন্তান। হঠাৎ তার গাড়ির তেল ফুরিয়ে যায়। তিনি গুজরানওয়ালায় আত্মীয়দের সঙ্গে ফোনে কথা বলেন। তারা তাকে মোটরওয়ে ইমার্জেন্সি নম্বরে ফোন করার উপদেশ দেন। ওই নারীর একজন আত্মীয় পুলিশের কাছে অভিযোগে বলেছেন, ২০ থেকে ৩০ বছরের মধ্যবর্তী বয়সী দু’জন যুবক গাড়ির দরজা ভেঙে ভিতরে প্রবেশ করে। নগদ অর্থ ও স্বর্ণালংকার কেড়ে নেয়। এরপর পাশেই এক ক্ষেতের ভিতর নিয়ে তার দুই সন্তানের সামনে তাকে ধর্ষণ করে এবং পালিয়ে যায়। পুলিশ বলেছে, এ ঘটনায় মানসিকভাবে আঘাতপ্রাপ্ত হয়েছেন ওই নারী। তিনি তাদেরকে ঘটনার শুধু মৌলিক কিছু বিষয় বর্ণনা করেছেন। পরের দিন লাহোরের সবচেয়ে সিনিয়র পুলিশ কর্মকর্তা উমর শেখ মিডিয়ার সামনে উপস্থিত হয়ে জানান যে, এ ঘটনার জন্য দায়ী ওই নারী। তিনি প্রশ্ন রাখেন ওই নারী কেন ব্যস্ত সড়কে যাননি। কেন তিনি বাসা থেকে বের হওয়ার আগে গাড়ির জ্বালানি চেক করে বের হননি। বেশ কয়েকটি টিভিতে তিনি বার বার এই পয়েন্ট উত্থাপন করেন। আরো যোগ করেন, ওই নারী ফ্রান্সে বসবাস করেন। তিনি পাকিস্তানকে ফ্রান্সের মতো করে ভেবেছেন। এর প্রতিবাদ যেভাবে হয় তা সচরাচর দেখা যায়নি। ভিকটিমকে দায়ী করার জন্য তাকে চাকরিচ্যুত করার দাবি ওঠে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। সারা পাকিস্তানে বিক্ষোভে অংশ নেন হাজার হাজার মানুষ। তারা নারীদের জন্য ন্যায়বিচার এবং উন্নত সুরক্ষা দাবি করে। ডিসেম্বরে ধর্ষণ বিরোধী নতুন আইন পাস হয়। এর অধীনে বিচার দ্রুত করার ব্যবস্থা করা হয় এবং কঠোর শাস্তির বিধান রয়েছে।