ইসলামাবাদে সাংবাদিকের ওপর গুলি, তদন্ত ও বিচার নিশ্চিতের আহ্বান সিপিজের

    বাংলাদেশ মেইল ::

    পাকিস্তান সরকারের সমালোচক হিসেবে পরিচিত সাংবাদিক আবসার আলমের ওপর গুলি নিয়ে পুঙ্খানুপুঙ্খ তদন্ত এবং ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের শাস্তি নিশ্চিতে দেশটির কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে কমিটি টু প্রোটেক্ট জার্নালিস্ট (সিপিজে)। মঙ্গলবার সাংবাদিকদের অধিকার ও গণমাধ্যমের স্বাধীনতা রক্ষায় কাজ করা যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক প্রতিষ্ঠানটি এ নিয়ে একটি বিবৃতি প্রদান করে। এতে বিভিন্ন প্রতিবেদনের বরাত দিয়ে বলা হয়, পাকিস্তানি সাংবাদিক আবসার আলমকে ইসলামাবাদে তার বাড়ির সামনে অজ্ঞাত এক ব্যাক্তি গুলি করে। প্রায় ৩০ বছর বয়সী এই সাংবাদিক হামলার সময় একটি পার্কে হাটছিলেন। গুলিবিদ্ধ অবস্থায় তাকে হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। গুলিটি তার পাঁজরে আঘাত হানলেও বর্তমানে তিনি স্থিতিশীল অবস্থায় আছেন।

    এ নিয়ে সিপিজে’র এশিয়া বিষয়ক সমন্বয়ক স্টিভেন বাটলার বলেন, এই গুলির ঘটনা প্রমাণ করে পাকিস্তানে সাংবাদিকরা কী ভয়াবহ অবস্থার মধ্যে রয়েছে। দেশটির অভ্যন্তরে ব্যাপক ক্ষমতাধর সেনাবাহিনীর সমালোচনা করলে এমন পরিণতির মুখে পড়তে হচ্ছে তাদের। সাংবাদিক আলমকে যে গুলি করেছে ও এই পুরো পরিকল্পনার সঙ্গে যারা যারা যুক্ত রয়েছে, তাদের সবাইকে দ্রুত শনাক্ত করতে হবে এবং বিচারের মুখোমুখি করতে হবে ।

    আলম একজন সাবেক টিভি সাংবাদিক এবং পাকিস্তানের ইলেক্ট্রনিক রেগুলেটরি কর্তৃপক্ষের সাবেক প্রধান। সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তার পোস্টের কারণে দেশটির ফেডারেল ইনভেস্টিগেশন এজেন্সি তাকে তলব করেছিল। এই সংস্থা পাকিস্তানের সেনাবাহিনীর সঙ্গে যুক্ত। আলম নিয়মিত রাজনৈতিক স্ট্যাটাস প্রদান করেন। টুইটারে তার আছে প্রায় ১ লাখ ফলোয়ার। তিনি পাকিস্তানের সরকারের অন্যতম সমালোচক হয়ে উঠেন। সেনাবাহিনী তাকে নানাভাবে হয়রানি করে বলেও জানিয়েছে সিপিজে।

    মন্তব্যের জন্য পাকিস্তানের ফেডারেল ইনভেস্টিগেশন এজেন্সির কাছে ইমেইল করেছিল সিপিজে। কিন্তু তারা কোনো প্রতিক্রিয়া জানায়নি। তবে এই হামলার নিন্দা জানিয়ে টুইট করেছেন পাকিস্তানের তথ্যমন্ত্রী ফাওয়াদ চৌধুরি। তিনি জানিয়েছেন, হামলার ঘটনা নিয়ে তদন্ত করতে বলা হয়েছে পুলিশকে।

    বিশ্বের যেসব দেশে সাংবাদিকরা সবথেকে ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে তার মধ্যে প্রথম দিকেই রয়েছে পাকিস্তান। দেশটি সিপিজের ২০২০ সালের সূচকে ৯ম স্থানে ছিল। যেসব দেশে সাংবাদিকরা নিয়মিত হত্যার শিকার হন এবং তাদের হত্যাকারীদের বিচারের মুখোমুখি করা হয় না সেসব দেশ এই তালিকায় প্রথম দিকে স্থান পায়। সিপিজের হিসেবে, ১৯৯২ সালের পর থেকে পাকিস্তানে অন্তত ৩৪ সাংবাদিককে হত্যা করা হয়েছে।