সিগারেট লুট করা করা ডাকাত চক্রের সন্ধান

    রানা নাহা , বাংলাদেশ মেইল ::
    গরু চুরির মধ্য দিয়ে ডাকাতির হাতেখড়ি হয় ৩০বছর বয়সী নোয়াখালীর নুর নবীর। এভাবেই একসময় বনে যান ডাকাত সর্দার। গড়ে তুলেন ২০/২৫ জনের আন্ত:জেলা ডাকাত গ্যাং । ধীরে ধীরে  খুবই ভয়ংকর হয়ে উঠে চক্রটি । তাদের ডাকাতিতে বাধা দিলেই গুলি ছোঁড়ে,ছুরিকাঘাত করে প্রয়োজনে হত্যাও করে । তাদের নিয়মিত ডাকাতির অংশ হিসেবে চট্টগ্রামে তারা লুট করে নেয় আবুল খায়ের গ্রুপের এক পরিবেশকের ৩৩ লাখ টাকার  সিগারেট ।

    পুলিশ জানিয়েছে , এ টিমের হাতে গত ৭ বছরে ২ জনের মৃত্যু হয়েছে । এছাড়া ১০ জেলায় ৩০টি ডাকাতির ঘটনায় ১০ কোটি টাকার সিগারেট লুট করেছে তারা । তবে  পুলিশের জালে ধরা পড়ে দীর্ঘ ৭ বছরের ডাকাতির অভিজ্ঞতার ইতি টানল ডাকাতির মূল নায়ক ৩০ বছর বয়সী নুর নবী। । তার বাড়ি নোয়াখালি জেলার হাতিয়া থানার পশ্চিম বড়ডেল গ্রামে । সে ঐ গ্রামের মৃত গিয়াস উদ্দিনের ছেলে।

    গত ৪ দিন আগে আবুল খায়ের গ্রুপের পরিবেশকের ডিপো থেকে লুট হওয়া ৩৩ লাখ টাকা মূল্যর সিগারেট গত রোববার ভোর রাতে (৩১ মে ) উদ্ধার করেছে ডবলমুরিং থানা পুলিশ। একইসাথে বাবা ছেলেসহ দলের ৩ সদস্যকে আটক করা হয়েছে। আটককৃতরা হলো,নুর নবী (৩০), মো,শাহজাহান (৬০),মো,এনায়েত উল্লাহ শান্ত(২৬)। তবে বাকীদের ধরতে অভিযান অব্যাহত রয়েছে জানিয়েছে পুলিশ । গত রবিবার ভোররাতে বিভিন্ন স্থানে অভিযান পরিচালনা করে তাদের আটক করা হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছে ডবলমুরিং থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ  মহসিন।

    সোমবার দুপুর ১২ টার দিকে ডবলমুরিং থানায় সংবাদ সম্মেলনে চট্টগ্রাম মেট্টোপলিটন পুলিশের পশ্চিম বিভাগের ডেপুটি কমিশনার আব্দুল ওয়ারিশ বলেন, ‘ডাকাতি সংগঠিত হওয়ার পরপরই থানায় একটি ডাকাতি মামলা দায়ের করে খাজা ট্রের্ডাস। এর পরপরই পুলিশ কমিশনারের নির্দেশে ৫ টি টিম গঠন করে শুরু হয় তদন্ত। ঠিক ৪ দিনের মাথায় প্রযুক্তির সহায়তায় অভিযান পরিচালনা করে চট্টগ্রাম জেলার সীতাকুন্ড থানার বারককুন্ড এলাকা থেকে ডাকাতির ঘটনায় মূল পরিকল্পনাকারী ও ডাকাত সর্দার মো নুর নবীকে আটক করা হয়েছে। আটকের পর জিজ্ঞাসাবাদে তার দেয়া তথ্য মোতাবেক কুমিল্লা জেলার সদর থানাধীন পশ্চিম বাগিছাগাঁও এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে পুলিশ ।  এ ঘটনায় জড়িত আরো ২ জনকে ৯২ কার্টুন সিগারেট এবং ২ কার্টুন সিগারেট বিক্রির ৬৮ হাজার টাকা উদ্ধার করা হয়েছে। আটককৃতরা সম্পকে বাবা ও ছেলে।

    ডবলমুরিং থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ও মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মো: মহসিন বলেন, ‘তারা ২৫/২৫ জনের আন্ত: জেলা ডাকাত গ্যাং। সেই দলের প্রধান নুরু। তাদের টার্গেট শুধু সিগারেট। লুট করা সিগারেটগুলো তারা এক জায়গায় মজুত করে থাকে ।  এগুলো বিক্রিও খুব সহজে করা যায় বলে চক্রটি শুধু সিগারেট লুট করে। এই চক্র খুবই ভয়ংকর। তাদের ডাকাতিতে বাধা দিলেই গুলি ছোঁড়ে,ছুরিকাঘাত করে,ক্ষেএ বিশেষে হত্যা ও করে। এ পর্যন্ত তাদের হাতে খুন হয়েছে ২ জন।

    তিনি আরো বলেন,গত ৭ বছরে ১০ জেলায় ৩০ টি ঘটনায় ১০ কোটি টাকার সিগারেট লুট করা হয়েছে। বাকীদের ধরার ব্যাপারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

    প্রসঙ্গত ,গত ২৭ মে নগরীর ডবলমুলিং থানাধীন পোস্তারপাড় এলাকায় আবুল খায়ের গ্রুপের পরিবেশক খাজা ট্রেডার্সের গোডাউনে সংঘটিত দুর্ধর্ষ ডাকাতি হয়। মধ্যরাতে গুদামের দরজার তালা ভেঙ্গে ১০/১২ জনের একটি ডাকাত দল অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে দাড়োয়ানসহ ৩ জনকে মারধর করে ৩২ লাখ টাকা মূল্যের সিগারেট ৩ টনের একটি ট্রাকে করে এসে লুট করে নিয়ে যায় ।