পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ
    মিরসরাইয়ে কাউন্সিলর রাজুর টর্চার সেলে যুবকের মৃত্যু

    বাংলাদেশ মেইল ::

    মিরসরাই পৌরসভার চার নং ওয়ার্ডে এক যুবককে পিটিয়ে হত্যার ঘটনা ঘটেছে৷ শুক্রবার (২৬ জুন) রাতে মিরসরাই পৌরসভার হোপ মা ও শিশু হাসপাতালে এমন ঘটনা ঘটে। মৃত্যুর পর গণমাধ্যম ও পুলিশকে প্রভাবিত করে ঘটনাটি ধামাচাপা দেবার চেষ্টা করা হয়৷

    নিহত তরুণের নাম মো. আজিম হোসেন শাহাদাত (২০)। অভিযোগ উঠেছে প্যানেল মেয়র এবং ৪ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর শাখের ইসলাম রাজু শাহাদতকে পিটিয়ে হত্যা করেছে । স্থানীয়   হোপ মা ও শিশু হাসপাতালে মোবাইল চুরির ঘটনার বিচার করতে গিয়ে পিটিয়ে শাহাদাত নামের ঐ যুবককে হত্যা করা হয়েছে।

    নিহত শাহাদাত ফেনী জেলার দাগনভূঁইয়া উপজেলার পূর্বচন্দ্রপুর ইউনিয়নের হাসানগণিপুর এলাকার আব্দুল বাতেনের ছেলে।

    শাহাদাতের পিতা আব্দুল বাতেন বলেন,  শুক্রবার বিকাল ৪টায় শাহাদাতকে কাউন্সিলর রাজুর লোকজন বাসা থেকে তুলে হোপ মা ও শিশু হাসপাতালে নিয়ে যায়। আমি রাত ৮টার দিকে ছেলেকে নিয়ে যাওয়ার খবর পেয়ে দ্রুত হাসপাতালে যাই। সেখানে গিয়ে দেখি হাসপাতালের একটি কক্ষে লাঠি দিয়ে রাজু এবং তার সঙ্গী ফরিদ, তারেক ও জাহিদ আমার ছেলেকে মারধর করছে। আমি বাঁধা দিলে তারা আমাকেও মারধর করে। রাজু গাছের লাঠি দিয়ে আমার ছেলের মুখের উপর জোরে আঘাত করলে তার সামনের দুটি দাঁত পড়ে যায়। এ সময় শাহাদাতের মুখ থেকে রক্ত ঝরতে থাকে। এরপর আমাকে ডেকে ছেলেকে নিয়ে দ্রুত এলাকা থেকে চলে যেতে বলে। এ সময় আমাকেও মেরে ফেলার হুমকি দেয়। আমি ছেলেকে নিয়ে ফেনী যাওয়ার পথে সে মারা যায়। ‘

    শনিবার বিকালে ফেনী সদর হাসপাতাল মর্গে শাহাদাতের লাশ ময়নাতদন্ত শেষে তার গ্রামের বাড়িতে নেওয়া হয়েছে।

    জানা গেছে, কাউন্সিলর রাজু মিরসরাই পৌরসভার ৪ নম্বর ওয়ার্ডে তার ব্যবসা প্রতিষ্ঠান হোপ মা ও শিশু হাসপাতালের একটি কক্ষকে ‘টর্চারসেল’ বানিয়েছেন। সেখানে বিভিন্ন সময় লোকজনকে ধরে নিয়ে মারধর করেন। কেউ তার ভয়ে প্রতিবাদ করার সাহস পান না। কয়েকদিন আগে বারইয়ারহাট পৌর মাইক্রো স্ট্যান্ডে একটি মোবাইল চুরির ঘটনা ঘটেছে। সেই ঘটনায় বিচার করার নামে শাহাদাতকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে।

    এদিকে শনিবার বিকেলে পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।

    মিরসরাই থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মজিবুর রহমান  বলেন, ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। নিহতের পিতা আব্দুল বাতেন বাদি হয়ে থানায় একটি হত্যা মামলা দায়েরের প্রক্রিয়া চলছে। হাসপাতালের একটি কক্ষ থেকে রক্তাক্ত তোষক জব্ধ করা হয়েছে। আসামিদের চিহ্নিত করে গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে। ফেনী যাবার পথে তার মৃত্যু হয়েছে ফলে মামলা প্রক্রিয়ায় বিলম্ব হয়েছে৷

    এদিকে, শনিবার ঘটনা জানাজানি হবার পর থেকে এলাকা ত্যাগ করেছেন অভিযুক্ত কাউন্সিলর শাখের ইসলাম রাজু।