আবুধাবি দূতাবাসের সহযোগীতায় দেশে ফিরলেন ক্যান্সারে আক্রান্ত প্রবাসী নুর হোসেন

    সাইফুদ্দিন খালেদ, আবুধাবি ::

    আবুধাবিতে ক্যান্সারে আক্রান্ত এক প্রবাসীকে বাংলাদেশ দূতাবাসের সহযোগীতায় দেশে পাঠানো হয়েছে। জীবিকার তাগিদে পরিবারের সুখের আশায় ২০০৭ সালে প্রবাসে পাড়ি জমান
    চট্টগ্রামের পটিয়া থানার করনখাইন
    ইউনিয়নের বাসিন্দা মৃত সুলতান আহমেদ ছেলে নূর হোসেন (৫৩)।

    দীর্ঘ ১৩ টি বছর প্রবাসেই কাটিয়ে দিয়েছেন তিনি। অবশেষে অসুস্থ হয়ে বাকশক্তি হারিয়ে দেশের মাটিতে ফিরেছেন এই রেমিট্যান্স যোদ্ধা।তিনি এখন কথা বলেন ইশারা-ইঙ্গিতে। কেউ পাশে না দাঁড়ালে নিজের মনের কথা অব্যক্তই থেকে যায় ক্যান্সার আক্রান্ত এই রেমিটেন্স যোদ্ধার।

    মাত্র ছয় মাসের ব্যবধানে চোখের সামনে সব ধূসর হয়ে গেছে তার। অসুস্থতা সবকিছু কেড়ে নিয়েছে। আর কোনো উপায় না পেয়ে দেশে ফেরার সিদ্ধান্ত নেন। ব্যর্থ হয়ে যায় প্রথম দফায় দেশে ফেরার চেষ্টা। টিকিট করে বিমানবন্দর পর্যন্ত পৌঁছালেও সেখান থেকে ফেরত পাঠানো হয় তাকে।

    ইমিগ্রেশন কর্মকর্তারা জানান পাসপোর্টের মেয়াদ নেই। তাদের পরামর্শে দূতাবাসের দ্বারস্থ হন নুর হোসেন। শুরু হয় নতুন করে তার দেশে ফেরার প্রক্রিয়া। দূতাবাস ইস্যু করে তার বহির্গমনের অনুমিতপত্র। নবায়ন হয় পাসপোর্ট।

    এসময় মানবতার হাত বাড়িয়ে তার পাশে দাড়ান আবুধাবি প্রবাসী বাংলাদেশ প্রেস ক্লাব ইউএই’র যুগ্ম-সম্পাদক সনজিত শীল। তার সর্বাত্তক সহযোগীতায় তাকে করে দেওয়া হয় ওয়েজ আর্নার্স কল্যাণ বোর্ডের কার্ড। এরপর দূতাবাস কর্মকর্তাদের আর্থিক সহায়তায় রি-ইস্যু করা হয় বিমানের টিকিট। সব প্রক্রিয়া শেষে অবশেষে সোমবার দেশে ফিরেছেন ক্যান্সারে আক্রান্ত নুর হোসেন।

    সনজিত শীল বলেন, বর্তমানে নুর হোসেন কথা বলতে পারেন না। চিকিৎসার স্বার্থে তার কণ্ঠনালী কেটে ফেলা হয়েছে। ছয় মাস আগে তিনি অসুস্থ হয়ে গেলে স্থানীয় মাফরাক হাসপাতালে তার ক্যান্সার ধরা পড়ে। সেখানে চিকিৎসকদের পরামর্শে তার কণ্ঠনালী কাটা হয়। এতে করে বেঁচে গেলেও বাকশক্তি হারিয়ে ফেলেন নুর হোসেন। এরমধ্যে দেশে যাবার জন্য চেষ্টা করলেও পাসপোর্টের মেয়াদ না থাকায় তিনি প্রথমে যেতে পারেননি। তাকে নিয়ে দূতাবাসে যোগাযোগ করা হলে আন্তরিক সাড়া দেন কর্মকর্তারা। তাদের প্রচেষ্টায় এবার নুর হোসেনের দেশে ফেরার ব্যবস্থা হল।

    আবুধাবি বাংলাদেশ দূতাবাসের কাউন্সিলর (শ্রম) লুৎফুন নাহার নাজিম বলেন, সোমবারের ফ্লাইটে নুর হোসেন ছাড়াও দূতাবাসের সহায়তায় এ ফ্লাইটে আরও অন্তত ৮ থেকে ১০ জন অসহায় প্রবাসী দূতাবাসের মাধ্যমে দেশে ফেরার সুযোগ পেয়েছেন।

    রাস্ট্রদূত মোহাম্মদ আবু জাফর বলেন, বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে আবুধাবি দূতাবাস সবসময় বাংলাদেশের শ্রমিকদের পাশে থেকে সর্বাত্তক সহযোগীতা করে যাবে। এছাড়াও তিনি প্রবাসীদের যে কোন প্রয়োজনে দূতাবাসের সহযোগীতার নেয়ার অনুরোধ জানান।