পর্দা উঠেছে করোনাকালের অলিম্পিকের

    অলিম্পিকের

    বাংলাদেশ মেইল ::

    করোনার কালো ছায়ায় ঢেকে যাওয়া বিষণ্ণ পৃথিবী হাঁসফাঁসের মধ্যেই পর্দা উঠেছে অলিম্পিকের । কোভিড-১৯ মৃত্যুবরন করা অসংখ্য মানুষের প্রতি  অনুচ্চারিত শ্রদ্ধা নিবেদনের মধ্য দিয়ে শুক্রবার বাংলাদেশ সময় বিকাল ৫টায় দর্শকবিহীন টোকিও অলিম্পিক স্টেডিয়ামে পর্দা উঠল এবারের আসরের।

    ২০২০ গ্রীষ্মকালীন অলিম্পিক হওয়ার কথা ছিল গত বছর। করোনার ধাক্কায় সেটি পিছিয়ে যায় এক বছর। অনেক জল্পনা-কল্পনা, উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা এবং প্রতীক্ষা শেষে ‘দ্য গ্রেটেস্ট শো অন আর্থ’ অলিম্পিক এবার শুরু হয়েছে সূর্যোদয়ের দেশে। গেমস ভিলেজে করোনা সংক্রমণ ধরা পড়ায় শেষ মুহূর্তেও অলিম্পিক বাতিল হওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছিল।

    তবে এখনো জাপানে অলিম্পিক আয়োজনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ-বিক্ষোভ থেমে নেই। জাপানিদের আশঙ্কা, ৮ আগস্ট শেষ হতে যাওয়া গেমসের দরুন সংক্রমণ আরও বাড়বে।

    প্রায় ৬৮ হাজার দর্শক ধারণক্ষমতার টোকিও অলিম্পিক স্টেডিয়ামে সাধারণ কোনো দর্শক ছিল না কাল। বিভিন্ন দেশের কর্মকর্তা, আয়োজক কমিটির সদস্য ও আমন্ত্রিত অতিথি মিলিয়ে প্রায় এক হাজার ভিআইপি দর্শকেরই শুধু সৌভাগ্য হয়েছে স্টেডিয়ামে বসে উদ্বোধনী অনুষ্ঠান দেখার। আনুষ্ঠানিকভাবে গেমসের উদ্বোধন ঘোষণা করেন জাপানের সম্রাট নারুহিতো। উপস্থিত ছিলেন ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল ম্যাক্রোঁ ও যুক্তরাষ্ট্রের ফার্স্টলেডি জিল বাইডেন। প্রতিবারের মতো উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এবার অ্যাথলেটদের ভিড় দেখা যায়নি। সব দেশই নির্বাচিত কিছু অ্যাথলেট পাঠিয়েছে মার্চপাস্টে। সবার মুখই ঢাকা ছিল মাস্কে।

    মার্চপাস্টে সবার আগে ছিল গ্রিস, যারা অলিম্পিক গেমসের প্রথম আয়োজক। এরপর অলিম্পিকের শরণার্থী দল এবং সবশেষে আসে স্বাগতিক জাপান দল। সব মিলিয়ে ২০৭টি দেশ এবারের আসরে অংশ নিচ্ছে। মার্চপাস্টে বাংলাদেশের লাল-সবুজ পতাকা বহন করেন সাঁতারু আরিফুল ইসলাম। বাংলাদেশের হয়ে এবারের অলিম্পিকে অংশ নিচ্ছেন মোট ছয় অ্যাথলেট। বাকিরা হলেন সাঁতারু জুনাইনা আহমেদ, দুই আরচার রোমান সানা ও দিয়া সিদ্দিকী, স্প্রিন্টার জহির রায়হান ও শুটার আব্দুল্লাহ হেল বাকি। ২০১৬ রিও অলিম্পিকে অংশ নিয়েছিলেন বাংলাদেশের সাত ক্রীড়াবিদ।

    মার্চপাস্ট শুরুর আগে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি যুক্ত হন শান্তিতে নোবেলজয়ী বাংলাদেশি মুহাম্মদ ইউনূস, যিনি এবার পেয়েছেন অলিম্পিক লরেল ট্রফি।

    আতশবাজির মাধ্যমে সবাইকে স্বাগত জানানো হয় টোকিও অলিম্পিকে। এরপর স্টেডিয়ামে আনা হয় অলিম্পিক রিং। তাতে ফিরে আসে টোকিওর ১৯৬৪ আসরের স্মৃতিও। অলিম্পিক রিংয়ের সাতটি বৃত্ত তৈরি করা হয়েছে সেই গাছের কাঠ দিয়ে, যে গাছগুলো ১৯৬৪ সালের অ্যাথলেটরা লাগিয়েছিলেন।

    প্রায় তিন ঘণ্টার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে নানা প্রদর্শনীতে তুলে ধরা হয় বিভিন্ন দেশের শিল্প-সংস্কৃতি। বৈশ্বিক সম্প্রীতি ও ঐক্যের বার্তা দিয়ে শিল্পীরা গেয়ে ওঠেন জন লেননের বিখ্যাত ‘ইমাজিন’ গানটি।