বিশ্ব জুড়ে গোপন নজরদারি, ফের আলোচনায় পেগাসাস

    পেগাসাস

    বাংলাদেশ মেইল ::

    ইসরায়েলি স্পাইওয়্যার পেগাসাস। এটি পেগাসাস হলো একটি ম্যালওয়্যার (বিশেষ ধরনের ভাইরাস)। এর মাধ্যমে আইফোন ও অ্যানড্রয়েড ফোনের সব মেসেজ, ছবি, ই-মেইল, কল রেকর্ড বের করা যায়। এই স্পাইওয়্যার প্রথম খবরে আসে ২০১৯ সালের অক্টোবরে। তখন ফেসবুক মালিকানাধীন সংস্থা হোয়াটসঅ্যাপ জানায়, চারটি মহাদেশের প্রায় ১ হাজার ৪০০ জনের মোবাইল পেগাসাসের মাধ্যমে হ্যাক করা হয়।

    এবার বিশ্বের বিভিন্ন দেশে মানবাধিকার কর্মী, রাজনীতিক, সাংবাদিক এবং আইনজীবীদের ফোনের ওপর গোপনে নজরদারীর খবর প্রকাশ হয়েছে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ইসরায়েল পেগাসাস স্পাইওয়্যার বিক্রি করেছে বলে খবর প্রকাশ হয়েছে।

    ইসরায়েলি কোম্পানি এনএসও গ্রুপের এই স্পাইওয়্যার কিনেছে যেসব ক্রেতা তারা ৫০ হাজার ফোনের ওপর গোপনে নজরদারী চালিয়েছে। এই তালিকা এবং এর ওপর তদন্তের প্রতিবেদনটি সারা বিশ্বের কিছু প্রথম সারির সংবাদমাধ্যমের হাতে তুলে দেয়া হয়েছে।

    লন্ডনের দ্যা গার্ডিয়ানসহ ১৬টি সংবাদমাধ্যম একযোগে এই তদন্তের ফলাফল প্রকাশ করেছে। তবে মোট কয়টি দেশে কতগুলো ফোন হ্যাক করা হয়েছে তা এখনও পরিষ্কার নয়।

    এদিকে পেগাসাসের আড়িপাতার সম্ভাব্য নিশানায় থাকা ব্যক্তিদের মধ্যে নাম এসেছে ভারতীয় কংগ্রেসের নেতা রাহুল গান্ধী এবং নির্বাচনী কৌশলী প্রশান্ত কিশোরের।

    এছাড়া ভারতের ক্ষমতাসীন নরেন্দ্র মোদি নেতৃত্বাধীন সরকার পেগাসাসের মাধ্যমে বিরোধী দলীয় রাজনীতিক ছাড়াও দেশটির আরো অন্তত ৪০ সাংবাদিকের ফোনেও আড়িপাতা হয়েছে অথবা আড়িপাতার চেষ্টা করা হয়েছে বলে প্রতিবেদনে বলা হয়।

    ২০১৯ সালে ভারতের লোকসভা নির্বাচনের আগে ও পরে রাহুল গান্ধীর অন্তত দুটি ফোন নম্বরে আড়িপাতা বা এর চেষ্টা করা হয়েছে। পেগাসাস স্পাইওয়্যার ব্যবহার করে নিশানায় থাকা ব্যক্তির ফোনের সকল মেসেজ, ক্যামেরা, ভয়েস রেকর্ডার, কন্ট্যাক্ট নাম্বারসহ খুঁটিনাটি প্রায় সব বিষয়েই শতভাগ নজরদারি করা যায়।

    পেগাসাসের নিশানায় থাকা ব্যক্তিদের মধ্যে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের বর্তমান দুই মন্ত্রীও রয়েছেন। এদের একজন প্রহ্লাদ প্যাটেল, আরেকজন অশ্বিনী বৈষ্ণ। কিছুদিন আগেই মোদির মন্ত্রিসভায় যোগ দিয়েছেন অশ্বিনী। ২০১৭ সালে সংসদ সদস্য থাকাকালে তাকে আড়িপাতার সম্ভাব্য নিশানা বানানো হয়েছিল।

    ইসরায়েলি স্পাইওয়্যার দিয়ে নজরদারির চেষ্টা হয়েছে ভারতের নির্বাচনী কৌশলবিদ প্রশান্ত কিশোর বা পিকের ওপরও। ২০১৪ সালের যে নির্বাচনে জিতে প্রথমবার প্রধানমন্ত্রী হন নরেন্দ্র মোদি, সেই নির্বাচনে বিজেপির হয়ে কলকাঠি নেড়েছিলেন পিকে। এরপর ভারতের আরও অনেক রাজনৈতিক দল ও নেতার হয়ে কাজ করেছেন তিনি। সবশেষ পশ্চিমবঙ্গের নির্বাচনে মমতা ব্যানার্জি এবং তামিলনাড়ুতে এমকে স্ট্যালিনকে নির্বাচনে জিততে সাহায্য করেছেন এই প্রশান্ত কিশোর।