মৃত্যু উপত্যকায় চিকিৎসক- স্বাস্থ্যকর্মীরা জীবনের ফুল ফোটায়-সুজন

    বাংলাদেশ মেইল ::

    করোনা মহামারীতে মৃত্যু উপত্যকায় চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীরা জীবনের ফুল ফুটায় বলে অভিমত ব্যক্ত করেছেন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের সাবেক প্রশাসক এবং চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি খোরশেদ আলম সুজন।

    আজ রবিবার (৮ আগস্ট ) বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিবের ৯১তম জন্মবার্ষিকীতে সকাল সাড়ে ১০টা থেকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতাল এবং মা ও শিশু হাসপাতালের চিকিৎসক, নার্স ও কোভিড আক্রান্ত রোগীদের জন্য ফলমূল উপহার দিতে গিয়ে তিনি এ অভিমত ব্যক্ত করেন।

    এ সময় তিনি বলেন বর্তমান কোভিড পরিস্থিতিতে আমাদের চিকিৎসক, নার্স এবং স্বাস্থ্যকর্মীরা যে অনুপ্রাণিত ভূমিকা রেখেছেন তা সত্যিই প্রশংসনীয়। বর্তমান করোনা পরিস্থিতিতেও চিকিৎসক, নার্স এবং স্বাস্থ্যকর্মীরা জীবনের মায়া ত্যাগ করে কোভিড রোগীদের চিকিৎসাসেবা দিয়ে যাচ্ছেন। এতে করে আমাদের অনেক চিকিৎসক ও নার্স মৃত্যুবরণ করেছেন, অনেকে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। তারপরও এ যুদ্ধে জয়ী হওয়ার দৃঢ় মনোভাব নিয়ে তারা চিকিৎসাসেবা দিয়ে যাচ্ছেন। তাদের এ ঋণ জাতি চিরদিন কৃতজ্ঞতার সাথে স্মরণ করবে। তবে দুঃখজনক হলেও সত্যি যে চট্টগ্রামের জনগনের কাংখিত স্বাস্থ্যসেবার জন্য যে ধরণের চিকিৎসা অবকাঠামো দরকার তা বিভিন্ন কারণে গড়ে উঠেনি। চট্টগ্রামের জনগনের দাবী হচ্ছে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের আধুনিকায়ন, চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালকে মেডিকেল কলেজে রূপদান ও পরিকল্পিত উন্নয়ন এবং নতুন নতুন পাবলিক হাসপাতাল নির্মাণ।

    আজ জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সহধর্মিনী বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিবের ৯১তম জন্মবার্ষিকীতে আপনাদের সাথে কিছুটা সময় কাটাতে পেরে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করে তিনি বলেন বেগম মুজিব অসাধারণ বুদ্ধিমত্তা, সাহস এবং মনোবল নিয়ে বঙ্গবন্ধুর পাশে থাকতেন সবসময়। বাঙ্গালির মুক্তির সংগ্রামে তার অবদান অনস্বীকার্য। তার দৃঢ়চেতা মনোভাব এবং বঙ্গবন্ধুর দূরদর্শী সিদ্ধান্তের ফলেই বাংলাদেশ আজ স্বাধীন। আর তাদেরই কন্যা স্বাধীন বাংলাদেশের বর্তমান মাননীয় প্রধানমন্ত্রী করোনার হাত থেকে দেশের সকল মানুষকে রক্ষা করতে গণটিকা কর্মসূচীর মতো একটি বিশাল উদ্যোগ গ্রহণ করেছে যা সরকারের একটি যুগান্তকারী পদক্ষেপ। করোনা আতংকগ্রস্ত মানুষের মাঝে এটি একটি বিরাট আশার আলো। তবে সরকারের গণটিকা কর্মসূচীর সম্পূর্ণ সফলতা ও বাস্তবায়ন নির্ভর করবে মাঠপর্যায়ে টিকাদান কর্মসূচীর সাথে যারা জড়িত তাদের সততা ও দক্ষতার উপর।

    অধিকাংশ জায়গায় সফলতার সাথে টিকাদান কর্মসূচী পরিচালিত হলেও ভিন্ন অভিযোগও আসছে যা অনভিপ্রেত। তার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে ডোজের পরিপূর্ণ ওষুধ না দেওয়া এবং টাকার বিনিময়ে টিকা প্রদান করা। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দেশের মানুষের স্বাস্থ্যসেবার কথা চিন্তা করে দেশের সর্বোচ্চ সম্পদ বিনিয়োগ করেছে টিকা ক্রয় এবং মজুদের জন্য। সরকারের এই শুভ উদ্যোগকে কোন পর্যায়ের কোন মানুষ যদি অপব্যবহার করে তাহলে তারা জাতির কাছে জাতীয় দুশমন হিসেবে চিহ্নিত হবে। তাদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগের প্রতি দাবী জানান সুজন। তিনি আবারও টিকা গ্রহণ, মাস্ক ব্যবহার, সামাজিক সংঘবদ্ধতা থেকে দূরে থাকা, যে কোন প্রকার সামাজিক অনুষ্টানাদি পরিহার করাকে করোনাভাইরাস থেকে বেঁচে থাকার একমাত্র উপায় বলে মনে করেন এবং এগুলো অনুসরণ করার জন্য সকলের প্রতি আহবান জানান।

    চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক সুজনকে করোনা সহযোদ্ধা হিসেবে একটি ক্রেস্ট উপহার দিয়ে সম্মানিত করলে তিনি এ সম্মান সমগ্র চট্টগ্রামবাসীর বলে অভিহিত করেন। তিনি চট্টগ্রামবাসীকে যার যেটুকু সামর্থ্য আছে তাই দিয়ে করোনা মহামারীকে মোকাবেলা করার সবিনয় আবেদন জানান। চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতাল এবং মা ও শিশু হাসপাতালের চিকিৎসার সাথে সংশ্লিষ্ট সকলে সুজনের এ উদ্যোগে আবেগাপ্লুত হয়ে উঠেন এবং সমসময় তাদের পাশে থাকার অনুরোধ জানান।

    এ সময় অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক বিগ্রেডিয়ার জেনারেল এস এম হুমায়ুন কবীর, চট্টগ্রাম জেলা সিভিল সার্জন ডা. সেখ ফজলে রাব্বি, জেনারেল হাসপাতালের সিনিয়র কনসালটেন্ট ডা. আব্দুর রব মাসুম, মা ও শিশু হাসপাতালের কার্যনির্বাহী কমিটির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি সৈয়দ মোহাম্মদ মোরশেদ হোসেন, হাসপাতালের পরিচালক (প্রশাসন) ডা. মো. নূরুল হক, উপ-পরিচালক (প্রশাসন) মোহাম্মদ মোশাররফ হোসাইন, ডা. এ কে এম আশরাফুল করিম, নগর স্বেচ্ছাসেবকলীগ নেতা নুরুল কবির, ফেরদৌস মাহমুদ আলমগীর, নগর ছাত্রলীগ সভাপতি এম ইমরান আহমেদ ইমু, মনিরুল হক মুন্না প্রমূখ।