বোরকা নয়,হিজাব বাধ্যতামূলক আফগানিস্তানে

    হিজাব
    বাংলাদেশ মেইল::

    আফগানিস্তানে পুরো শরীর ঢেকে রাখা বোরকা বাধ্যতামূলক হচ্ছে না, তবে হিজাব বাধ্যতামূলক হচ্ছে। নারীরা পারবেন উচ্চ শিক্ষা গ্রহণ করতে। কাতারের রাজধানী দোহা থেকে এমন ইঙ্গিত দিয়েছেন তালেবান মুখপাত্র সুহেইল শাহিন। তার কথার প্রতিধ্বনি মিলেছে তালেবানের আরেক মুখপাত্র জাবিহুল্লাহ মুজাহিদের সংবাদ সম্মেলনে। তিনি সরাসরি এমন ঘোষণা না দিলেও, বলেছেন ইসলামিক শরীয়ার অধীনে বসবাস করতে হবে নারীদের। বার্তা সংস্থা এএফপি বলেছে, এর আগে ১৯৯৬ থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত ক্ষমতায় ছিল তালেবানরা। তখন নারীদের জন্য স্কুল ছিল বন্ধ।

    তারা ভ্রমণ করতে পারতেন না। কাজে যেতে পারতেন না। তাদেরকে ঘর থেকে বাইরে গেলে বাধ্যতামূলক পরতে হতো পুরো শরীর ঢেকে রাখা বোরকা। তবে স্কাইনিউজকে দোহা থেকে সুহেইল শাহিন বলেছেন, বোরকা নয়। শুধু দৃষ্টি রাখা হবে হিজাবের দিকে। অনেক রকম হিজাব আছে, যা বোরকা নয়।

    এ দেশটিতে নারীদের পোশাকসহ তাদের শিক্ষা নিয়ে এরই মধ্যে বহু দেশ ও অধিকার বিষয়ক গ্রুপ উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। তারা উদ্বেগ প্রকাশ করেছে এই জন্য যে, যেহেতু তালেবানরা রাজধানীতে প্রবেশ করেছে, তাই নারীদের পোশাক ও শিক্ষার বিষয়টি নির্ভর করবে তালেবানদের ওপর। তবে নারীদের পোশাক এবং শিক্ষার ক্ষেত্রে নিশ্চয়তা দিয়েছেন সুহেইল শাহিন। তিনি বলেছেন, নারীরা প্রাথমিক থেকে উচ্চ শিক্ষা গ্রহণ করতে পারবেন। এর অর্থ হলো, নারীরা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে পারবেন। তার ভাষায়- আমরা এসব নীতির কথা ঘোষণা করেছি আন্তর্জাতিক কনফারেন্সগুলোতে, মস্কো কনফারেন্সে এবং দোহা কনফারেন্সে। তিনি বলেন, তালেবানরা প্রবেশ করেছে এমন এলাকাগুলোতে হাজার হাজার স্কুল এখনও খোলা।

    ওদিকে সোমবার এক সংবাদ সম্মেলনে আফগানিস্তানে নারীদের সরাসরি হিজাব বা বোরকা পরার নির্দেশ না দিলেও তালেবান মুখপাত্র জাবিহুল্লাহ মুজাহিদ বলেছেন, নারীদেরকে বসবাস করতে হবে ইসলামী শরীয়ার অধীনে। তবে ইসলামী শরীয়া যেখানে সক্রিয় সেখানে বা সেই দেশে নারীরা হিজাব বা বোরকা পরেন। তিনি বলেন, নারীদেরকে সমাজের গুরুত্বপূর্ণ অংশ বলে মনে করে তালেবান। তাই ‘ইসলামিক এমিরেটস’ (আফগানিস্তান) এই শরীয়ার কাঠামোর অধীনে নারীদের অধিকার নিশ্চিত করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।

    তিনি সোমবার সংবাদ সম্মেলনে বলেন, আমাদের বোনদের এবং ভাইদের সবারই একই রকম অধিকার আছে। তারা তাদের অধিকার থেকে সুবিধা পাবেন। আমাদের নিয়ম এবং নীতির অধীনে শিক্ষা, স্বাস্থ্যসহ বিভিন্ন খাত এবং বিভিন্ন এলাকায় তাদের নানা রকম কর্মকা- আছে। তারা সবাই আমাদের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করবেন। যদি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের উদ্বেগ থাকে, তাহলে তাদেরকে আমরা নিশ্চয়তা দেবো যে, নারীর বিরুদ্ধে আর কোনো বৈষম্য হবে না। তবে অবশ্যই তারা অধিকার পাবেন ফ্রেমওয়ার্কের মধ্যে। আমাদের বোনেরা, মায়েরা মুসলিম। তাই তাদেরকে ইসলামিক শরীয়ার অধীনে বসবাস করতে হবে। ওদিকে নিউজউইক

    এক খবরে জানিয়েছে তালেবানরা আফগানিস্তান দখল করে নেযার পরই হেরাত প্রদেশে নারীদের হিজাব এবং লং স্কার্ভ বা বোরকা পরতে বলেছে। এরই মধ্যে বালকদের পাশাপাশি মেয়েরাও স্কুলে ফিরতে শুরু করেছে। নারী অধিকার বিষয়ক কর্মী জাহরা (২৬) বলেছেন, তবে হেরাত শহরে এদিনও নারীরা ঘরের ভিতর অবস্থান করছেন। কাবুল দখলের ৫ দিন আগে হেরাত দখল করে তালেবানরা। জাহরা সোমবার বলেছেন, স্কুলে পরীক্ষা শুরু হয়েছে। সেখানে তালেবান যোদ্ধাদের সামনে পড়েছে যুবতীরা। এ সময় ওইসব যুবতীকে স্কার্ভ এবং হিজাব পরার আহ্বান জানান তারা।