দিনাজপুরে বিরামপুরে ব্যক্তি উদ্দ্যোগে নান্দনিক বকুলতলা মোড়

    বাংলাদেশ মেইল  ::

    প্রকৃতিকে ভালোবাসেনা এমন মানুষ খুজে পাওয়া দূর্বিষহ । সকল মানুষের জীবনে পেশাগত কর্ম ব্যস্ততার ফাঁকেও সবুজ অরণ্যের খোঁজে তৈরি হয় আত্নার টান।

    এমনই এক প্রকৃতি প্রেমিক সবুজ অরণ্যের তৃষ্ণা মেটাতে নিজ উদ্দ্যোগে সবুজ বেস্টুনি তৈরী করেছেন৷ তিনি হলেন নূরে আলম সিদ্দীক (বাবু)। দিনাজপুরের বিরামপুর পৌর শহর এলাকা ৩নং ওয়ার্ডের পূর্বজগন্নাথপুর মহল্লার একটি তিন মাথামোড়ের সড়কে সবুজ অরণ্য সাজিয়ে তুলেছেন। সেই মোড়টি পূর্বে অন্য একটি নামে এলাকাবাসী জানতো। বর্তমানে এটি পূর্বজগন্নাথপুর বকুলতলা মোড় নামে সবাই চেনে ও জানে সবার কাছে এ নামেই পরিচিত পাচ্ছে মোড়টি।

    নূরে আলম সিদ্দীক (বাবু) পেশায় তিনি একজন বে-সরকারী চাকুরীজীবী। তিনি বিরামপুর পৌরসভা ষ্টোর কিপার পদে কর্মরত আছেন। তিনি একজন সৌখিন মানুষ। মনের খেয়ালে হঠাৎ করে তিনি ২০১১সালে তাঁর মহল্লার পূর্বের নাম পরিবর্তন করা প্রয়োজন মনে করলে, সেসময় এলাকার কিছু প্রবীণ ও তরুনদের সাথে আলোচনা করে সেবছর ডিসেম্বর মাসে উদ্দ্যেগটি হাতে নেন।

    তিনি অনেক পরিকল্পনা করে মোড়টি নাম করণের বিষয়ে ব্যাপক প্রচার প্রচারনা ও লিপলেট বিতরণ শেষে ২০১১ সালে সাবেক পৌর মেয়র আজাদুল ইসলাম আজাদ ও পৌর পরিষদের সহযোগিতায় শুভ উদ্বোধন করা নতুন এই মোড়।

    এভাবেই মোড়টির নামকরণ করা হয় বকুলতলা মোড়। সেই থেকেই ধীরে ধীরে পৌর শহর জুড়ে পরিচিত হয়ে উঠে বকুলতলা মহল্লার নামটি।

    নূরে আলম সিদ্দীক (বাবু) সেখানেই থেমে যাননি বলা যেতে পারে, তিনি নিজ উদ্দ্যেগে বকুলতলা মোড়ের সৌন্দর্য বিকাশের জন্য সে প্রতিদিন ফজরের নামাজের পর থেকে মোড়টির পরিষ্কার পরিচ্ছনতা ও রঙ বেরঙের ফুল ও শোভা বর্ধনে গাছের পরির্চযা করেছেন। তিনি সেখানেই থেমে যাননি। প্রতিদিন ৩শ থেকে ৫শ ফিট ঝাড় প্রদান ও ধূলাবালু থেকে মোড়ের সৌন্দর্য রক্ষা করার জন্য প্রতিদিন পানি ছিটান তিনি। তার এইসব কাজ দেখে অনেকেই উটভট মনে করতো। কিন্তু মানবিক চিন্তা থেকে তিনি বকুলতলা মোড়ের সৌন্দর্য বর্ধনের জন্য তার নিজস্ব চিন্তা অর্থ ও শারীরিক পরিশ্রম দিয়ে আসছে । দিনে দিনে বকুলতলা মোড়টির সৌন্দর্য দেখতে বিভিন্ন এলাকার সৌন্দর্য পিঁয়াসু ও সবুজের ভালোবাসায় ছুটে আসেন এক নজর দেখতে। অনেকেই আবার কার হাতে তৈরী বকুলতলার সৌন্দর্য ও সবুজ অরণ্যের ভরপুর দেখতে চান সেই নূরে আলম সিদ্দীক বাবুকে। তার এই নিজ উদ্দ্যোগে একটি মহল্লার মোড়কে এত সুন্দর গ্রামীণ জনপদের মধ্যেও মনের মাধুরী দিয়ে সুন্দর করে সবুজ অরণ্য দিয়ে সাজানোটা সত্যিই বিরল।

    জানতে চাইলে ওই মহল্লার বসবাসরত মাজেদুল রহমান জানান, আমাদের মহল্লার সৌন্দর্য পিয়াসু মানুষ নূরে আলম সিদ্দীক বাবু তাঁর নিজ উদ্দ্যোগে এই মহল্লার সৌর্ন্দযের সুনাম ছড়িয়ে দিয়েছেন সবখানে।তিনি আরো বলেন, বকুলতলা মোড়ে প্রবীণদের জন্য একটি ছোট আকারে বিশ্রাম ছাউনী রয়েছে। আরো রয়েছে প্রবীণদের জন্য খবরের কাগজের ব্যবস্থা। তা ছাড়াও সে একজন বিরামপুর পৌরসভার চাকুরীজীবী হওয়ার পরেও সময় পেলেই বকুলতলা মোড় ও আশেপাশের এলাকার প্রবীণদের বিভিন্ন কাজে সহযোগীতা করে আসছে। যেমন,পৌর টাক্স,পানির বিল,বিদ্যুৎ বিল,জন্মনিবন্ধনসহ নানা রকম কাজ উৎসাহ নিয়ে করে থাকেন।

    বকুলতলা মোড়ে আরেকজন বসবাসরত ইয়াসিন আহম্মেদ লিমন বলেন, আমাদের এলাকার বাবু ভাই বৃহৎ মনের মানুষ। তাঁর মতো করে দেশের সব জায়গায় এরকম বকুলতলার মোড়ের মতো নান্দনিক সবুজ অরণ্যে ঘেরা কর্মকান্ড করলে আমাদের এই বকুলতলা মোড় একটি মডেল হবে। ‘

    নূরে আলম সিদ্দীক বাবু বলেন, আমার সামান্য চিন্তা চেতনার মধ্য দিয়ে বকুলতলা মোড়ের নামকরণের সৃষ্টি নিজস্ব উদ্দ্যোগ সু- পরিকল্পিত পরিকল্পনায় আজকের এই সৃষ্টি। এখানে বাৎসরিক ব্যয় হয় প্রায় ৫০-৬০হাজার টাকা যা অনেকটা নিজ উদ্দ্যোগে এবং এলাকাবাসীর কিছুটা সহযোগীতায়। তিনি আরো বলেন, এই উদ্দ্যোগটি কেবলমাত্র ব্যক্তি উদ্দ্যোগেই এবং নিজ অর্থায়ানে দেশের অন্য কোথাও এরকম একটি নান্দনিক সবুজ অরণ্যে ঘেরা এলাকার মোড় হয়তবা নেই। যদি দেশের কোন এলাকার কোন ভাই তার মহল্লার কোন মোড়কে বিরামপুরের বকুলতলা মোড়ের চেয়েও সুন্দর পরিপাটি পরিচ্ছন্ন পুষ্প কানন গড়ে তুলতে পারেন তবে তাকে সম্মান জনক পুরস্কার দেবার কথা জানান তিনি ।