সাম্প্রদায়িক সহিংসতার বিরুদ্ধে চট্টগ্রামে শান্তি মিছিল আ.লীগ-যুবলীগের

বাংলাদেশ মেইল::

দেশজুড়ে সাম্প্রদায়িক সহিংসতার বিরুদ্ধে চট্টগ্রাম নগরীতে শান্তি মিছিল করেছে আওয়ামী লীগ। একই সময়ে নগর যুবলীগও নগরীর শান্তি মিছিল ও সম্প্রীতি সমাবেশ করেছে। মঙ্গলবার (১৯ অক্টোবর) নগরীতে পৃথকভাবে এসব কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়েছে। এতে বিপুলসংখ্যক নেতাকর্মী অংশ নেন।এদিন সকালে নগরীর কাজির দেউড়িতে ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সেন্টারে বর্ধিত সভা করে নগর আওয়ামী লীগ। দুপুরে সভার বিরতিতে আওয়ামী লীগের নেতারা শান্তি মিছিল বের করেন। মিছিল নগরীর কাজীর দেউড়ি থেকে আসকারদিঘীর পাড় হয়ে জামালখান প্রেস ক্লাব ঘুরে আবারও সভাস্থলে আসে।

বর্ধিত সভায় নগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাহতাব উদ্দিন চৌধুরী বলেন, ‘স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বকে আঘাত করতে বারবার সাম্প্রদায়িক উন্মাদনা ছড়িয়ে সম্প্রীতির পরিবেশ নষ্ট করা হচ্ছে। যারা এই অপকর্মে জড়িত, তাদের মুখোশ উন্মোচন করতে হবে। আওয়ামী লীগ জনগণের আস্থা ও ভরসার প্রতীক। এই আস্থা ও ভরসা অবশ্যই ধরে রাখতে হবে। কারণ অশুভ শক্তি অশনি সংকেত দিচ্ছে।’

একই কমিটির সাধারণ সম্পাদক সাবেক মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তির মধ্যে বিভাজনের কারণে ১৯৯১ সালে বিএনপি ক্ষমতায় গিয়েছিল। বিএনপির আশ্রয়ে-প্রশ্রয়ে স্বাধীনতাবিরোধী শক্তির উত্থান হয়েছিল। তাদের শেকড় উপড়ে ফেলতে না পারলে বাঙালির অস্তিত্বের সুরক্ষা নিশ্চিত হবে না।’

১৬ নভেম্বর থেকে চট্টগ্রাম নগরীতে আওয়ামী লীগের ইউনিট পর্যায়ের সম্মেলন শুরু তথ্য দিয়ে নাছির জানান, নির্ধারিত তারিখ ও স্থানে প্রথমে ইউনিট সম্মেলন হবে এবং তিনটি করে ইউনিট সম্মেলন শেষ হলে ওয়ার্ড সম্মেলন হবে। আগামী ৫ নভেম্বর নগরীর আন্দরকিল্লা চত্বরে সম্প্রীতি সমাবেশ করার ঘোষণা দেন তিনি। এছাড়া ২১ অক্টোবর থেকে ১০ দিন নগরীর প্রতিটি ওয়ার্ড ও ইউনিটে সম্প্রীতি সমাবেশ করার নির্দেশনা দেওয়া হয়।বর্ধিত সভায় অংশগ্রহণকারীদের দলীয় সিদ্ধান্ত ও কর্মসূচি পালনে শপথ বাক্য পাঠ করান নগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ও চসিকের সাবেক প্রশাসক খোরশেদ আলম সুজন।

নগর আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক শফিকুল ইসলাম ফারুকের সঞ্চালনায় বর্ধিত সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন সহসভাপতি নঈম উদ্দিন চৌধুরী, সুনীল সরকার, ইব্রাহিম হোসেন চৌধুরী বাবুল, আলতাফ হোসেন চৌধুরী বাচ্চু, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বদিউল আলম, সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য নোমান আল মাহমুদ, শফিক আদনান, চৌধুরী হাসান মাহমুদ হাসনী, হাসান মাহমুদ সমশের, শেখ ইফতেখার সাইমুল চৌধুরী, চন্দন ধর, মশিউর রহমান চৌধুরী, আহমেদুর রহমান ছিদ্দিকী, হাজী মোহাম্মদ হোসেন, হাজী জহুর আহমেদ, মাহবুবুল হক মিয়া, জোবায়েরা নার্গিস খান, দিদারুল আলম চৌধুরী, জালাল উদ্দিন ইকবাল, আবদুল আহাদ, মোহাম্মদ আবু তাহের, ফয়সাল ইকবাল চৌধুরী ও শহিদুল আলম।

এদিকে, চট্টগ্রাম মহানগর যুবলীগ মঙ্গলবার বিকেলে নগরীর আন্দরকিল্লা মোড় থেকে শান্তি মিছিল বের করে। মিছিলটি চেরাগি মোড়, জামালখান, প্রেস ক্লাব গিয়ে শেষ হয়। এর আগে আন্দরকিল্লার মোড়ে সম্প্রীতি সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন নগর যুবলীগের আহ্বায়ক মহিউদ্দীন বাচ্চু।একই কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক মাহাবুবুল হক সুমনের পরিচালনায় সমাবেশে বক্তব্য রাখেন যুগ্ম আহ্বায়ক দেলোয়ার হোসেন খোকা, ফরিদ মাহমুদ, দিদারুল আলম, সদস্য আনোয়ার হোসেন আজাদ, সাইফুল ইসলাম, সাখাওয়াত হোসেন, নুরুল আনোয়ার, আসহাব রসুল চৌধুরী জাহেদ, শেখ নাছির আহম্মদ, সনৎ বড়ুয়া, কাজী রাজিশ ইমরান।

সমাবেশে যুবলীগ নেতারা বলেন, ‘সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির বাংলাদেশে সনাতন ধর্মের প্রধান ধর্মীয় অনুষ্ঠানে পরিকল্পিত ঘটনার রেশ ধরে সারাদেশে সাম্প্রদায়িক তাণ্ডব চালানো হচ্ছে। শুধু মন্দির-মণ্ডপ নয়, সনাতনী ভাইবোনদের বাড়িঘরে ভাঙচুর-অগ্নিসংযোগ করা হচ্ছে। জাতির হাজার বছরের ঐতিহ্যবাহী সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্ট করার অপচেষ্টা স্বাধীনতার চেতনা পরিপন্থি। এই ঘৃণিত কর্মকাণ্ড মেনে নেওয়া যায় না। সনাতন ধর্মাবলম্বীদের পরীক্ষিত বন্ধু হিসেবে আওয়ামী লীগ, যুবলীগ এটা মেনে নিতে পারে না।

বাংলাদেশের প্রগতিশীল যুবসমাজ নীরব থাকতে পারে না। বাংলার হিন্দু, বাংলার মুসলিম আমরা ভাই, ভাই হয়ে সম্প্রীতির এই সম্পর্ক ম্লান হতে দেবো না।’চট্টগ্রাম শহরের সব পাড়া-মহল্লায় সাম্প্রদায়িক অরাজকতা তৈরির অপচেষ্টা প্রতিরোধে যুবলীগের নেতাকর্মীদের সজাগ থাকার আহ্বান জানানো হয় সমাবেশ থেকে।