মহিউদ্দিন চৌধুরী চট্টলাবাসীর হৃদয়ে চির জাগরুক হয়ে থাকবেন -খোরশেদ আলম সুজন

বাংলাদেশ মেইল ::

চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের প্রথম নির্বাচিত মেয়র এবং চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি চট্টলবীর এ.বি.এম মহিউদ্দিন চৌধুরী চট্টলাবাসীর হৃদয়ে চির জাগরুক হয়ে থাকবেন বলে মন্তব্য করেছেন নাগরিক উদ্যোগের প্রধান উপদেষ্টা এবং চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের সাবেক প্রশাসক খোরশেদ আলম সুজন।  বুধবার (১৫ ডিসেম্বর ) সকালে এ.বি.এম মহিউদ্দিন চৌধুরীর ৪র্থ মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে তাঁর কবরে পুস্পস্তবক অর্পন ও দোয়া মোনাজাতকালে উপরোক্ত মন্তব্য করেন সুজন।

এসময় তিনি বলেন মহিউদ্দিন চৌধুরী ছোটবেলা থেকেই বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ধারণ করে তার রাজনৈতিক জীবন শুরু করেন। রাজনীতির পাশাপাশি তিনি ধীরে ধীরে জনকল্যাণমূলক কর্মকান্ডে নিজেকে জড়াতে থাকেন। মানুষের চাহিদাকে গুরুত্ব দিয়ে তিনি যেখানেই সমস্যা সেখানেই হাজির হতে থাকেন। ১৯৯১ সালের প্রলয়ংকারী ঘূর্ণিঝড়ে চট্টগ্রামের উপকূলে ব্যাপক প্রাণহানি সংঘটিত হয়। চারিদিকে লাশ আর লাশের স্তুপ। দুর্গন্ধে যখন সেখানে কারো যাওয়া দায় ছিল তখন তিনি নিজে গিয়ে লাশ খুঁজে খুঁজে গোসল করিয়ে কবর দিতে শুরু করেন। চট্টগ্রামের মুসলিম হলে উপকূলীয় এলাকার রোগীদের জন্য বিকল্প কলেরা হাসপাতাল তৈরী করে সেখানে বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবা, স্যালাইনসহ অন্যান্য চিকিৎসা উপকরণ সরবরাহ করতে শুরু করেন তিনি। তখন থেকেই মহিউদ্দিন চৌধুরীর মানবিক আরেকটি গুণ প্রকাশিত হতে শুরু করে, যা সারাদেশে ব্যাপক আলোড়নের জন্ম দেয়। এরপর ১৯৯৪ সালে বিপুল ভোটে চট্টগ্রামের প্রথম মেয়র নির্বাচিত হন তিনি। মেয়র নির্বাচিত হওয়ার পর অন্য আলোয় উদ্ভাসিত হতে থাকেন মহিউদ্দিন চৌধুরী। একটি পিছিয়ে পড়া শহরকে খাঁদ থেকে কিভাবে টেনে তুলে আনতে হয় তার জ্বলন্ত উদাহরণ ছিলেন তিনি। পরিকল্পনা করতে থাকেন কিভাবে চট্টগ্রাম শহরকে একটি আধুনিক, পরিচ্ছন্ন এবং সুন্দর নগরীতে পরিণত করা যায়। দিনের পর দিন কঠোর অধ্যবসায়ের মাধ্যমে পরিচ্ছন্ন, শিক্ষা এবং স্বাস্থ্য ব্যবস্থায় অভাবনীয় পরিবর্তন নিয়ে আসতে সক্ষম হন তিনি। সরকারের সাহায্য ছাড়াই সিটি কর্পোরেশনকে আর্থিকভাবে সাবলম্বী করতে নানা পরিকল্পনা গ্রহণ করতে থাকেন তিনি। রাজস্ব আদায় সিটি কর্পোরেশনের আয়ের প্রধানতম খাত হলেও জনগনের উপর হোল্ডিং ট্যাক্সের বোঝা না চাপিয়ে বিভিন্ন আয়বর্ধক প্রকল্প গ্রহণের মাধ্যমে কর্পোরেশনকে পরিচালনা করতে থাকেন মহিউদ্দিন চৌধুরী। মহিউদ্দিন চৌধুরীর সুদক্ষ দিকনির্দেশনায় পরিচালিত চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের সুনাম দেশ ছাড়িয়ে বিদেশেও ছড়িয়ে পড়তে শুরু করে। তৃণমূল রাজনীতি থেকে উঠে আসা একজন রাজনীতিবিদ কতোটা সাবলীলভাবে একটি প্রশাসন পরিচালনা করতো তার উদাহরণ ছিলেন তিনি। মহিউদ্দিন চৌধুরীর নানাবিধ গুণের মধ্যে অন্যতম একটি গুণ ছিলো তিনি সারাক্ষণ কাজকে ভালোবাসতেন। চট্টগ্রামবাসীর স্বার্থে এক আপোষহীন স্তম্ভ ছিলেন তিনি। চট্টগ্রামের স্বার্থবিরোধী কিছু হলে প্রথমেই গর্জে উঠতেন তিনি। লালদিঘী মাঠে সমাবেশ করে নিজের অবস্থান চট্টগ্রামবাসীকে জানান দিতো মহিউদ্দিন চৌধুরী। তাঁর মতো বহুমাত্রিক প্রতিভার অধিকারী নেতৃত্ব বর্তমান সময়ে খুবই বিরল। সুজন, এ.বি.এম মহিউদ্দিন চৌধুরী কবরে পুস্পস্তবক অর্পন এবং মরহুমের রুহের মাগফিরাত কামনায় মহান আল্লাহর দরবারে দোয়া করেন। এসময় অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন নাগরিক উদ্যোগের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হাজী মো. ইলিয়াছ, আব্দুর রহমান মিয়া, সদস্য সচিব হাজী মো. হোসেন, ছালেহ আহমদ জঙ্গী, মো. শাহজাহান, রকিবুল আলম সাজ্জী, রাজীব হাসান রাজন, মনিরুল হক মুন্না, মো. আলী মিঠু, আব্দুল মালেক, তাইফুল খান, দীপেন দাশ রোমেন, জসীম উদ্দিন, মো. ফাহিম, রফিকুল ইসলাম, সাইফুল সি ইসলাম, হেলালউদ্দিন ইমন, মো. মাহফিল, মোসলেহ উদ্দিন, মো. তানিম, আলী নেওয়াজ রাকিব, মো. ইমতিয়াজ প্রমূখ।