ঈদের তৃতীয় দিনেও উপচে পড়া ভীড় নগরীর পর্যটন কেন্দ্রগুলোতে

বাংলাদেশ মেইল ::

ঈদের ছুটিতে উপচে পড়া ভীড় দেখা গেছে পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকতসহ নগরীর সবকটি বিনোদন স্পটে।ঈদের দিন থেকেই আনন্দে ভাসছে চট্টগ্রামের পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকত।

বৃহস্পতিবার নগরীর ফযেজ লেগে  দেখা গেছে পর্যটকদের উপচে পড়া ভিড়।বুধবার ঈদের দ্বিতীয় দিন সকাল থেকেই পর্যটকদের ভিড় দেখা যায়। দুপুরের পর যে দিকে চোখ যায় শুধু মানুষ আর মানুষ। নারী শিশু থেকে শুরু করে সব বয়সের মানুষের উপচে পড়া ভিড়।

একই অবস্থা পতেঙ্গা সৈকতের। ঈদের নতুন পোশাকে সাগরের কাছাকাছি আসতে পেরে আনন্দে আত্মহারা শিশু কিশোরেরা। কেউ ঝাঁপিয়ে পড়ছে সাগরের বুকে। সৈকতের বালু চরে আছড়ে পড়া ঢেউয়ের তালে অন্য রকম উৎসবের আমেজ। বৈশাখের প্রখর খরতাপের পর স্বস্তির বৃষ্টিতে শীতল পরশ সৈকতে ঘুরে বেড়ানোয় যোগ করেছে নতুন মাত্রা। আর তাই বাঁধ ভাঙা উল্লাসে সৈকতে জমেছে ঈদের উৎসব। চট্টগ্রাম মহানগরী ছাড়াও আশপাশের এলাকা থেকে হাজার হাজার মানুষ এসেছে পতেঙ্গা সৈকতে। ঈদের লম্বা ছুটি তাই পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে নিয়ে লোকজন সময় কাটাতে নেমে পড়েন।

করোনায় পর্যটন শিল্পের আঁধার কেটে দেখা মিলছে আশার আলো। নৈসর্গিক সৌন্দর্য্যের বেলাভূমি চট্টগ্রামের পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকত। নগরীর কোলাহল পেরিয়ে মাত্র ১৪ কিলোমিটার দূরে চোখে পড়বে উত্তাল বিশাল জলরাশির বঙ্গোপসাগর। সৈকতের চারপাশে প্রকৃতির নৈসর্গিক মনলোভা দৃশ্যের হাতছানির সঙ্গে সমুদ্রবন্দরের কর্মব্যস্ততা আর বিশাল সমুদ্রের সঙ্গে কর্ণফুলী নদীর মিলনমেলা। সাগর পাড়ের বালুকাবেলা, বাতাসের শোঁ শোঁ শব্দ মন ভরিয়ে দেয় পর্যটকদের। তাই পর্যটকরা চট্টগ্রামে আসলে পতেঙ্গা না দেখে যাওয়া হয় না কারোই। আনন্দ পেতে তাই দূর-দূরান্ত থেকে দল বেধে সৈকতে ছুটে আসছেন পর্যটকরা। সৈকতে সাগরের সৌন্দর্য উপভোগের পাশাপাশি অনেকে স্পিড বোট, ঘোড়ায় উঠে আনন্দ উপভোগ করছেন। পতেঙ্গা সৈকতের মত ঈদের ছুটিতে চট্টগ্রামের অন্য বিনোদনকেন্দ্রগুলোতে নেমেছে মানুষের ঢল। নারী-শিশু থেকে শুরু করে নানা বয়সের মানুষ ভিড় করেছেন সেখানে।

কর্মব্যস্ত জীবনের ফাঁকে কয়েকটা দিন পরিবারের সঙ্গে আনন্দে মেতেছেন সবাই।নগরীর নেভাল, বোট ক্লাব, ফয়’স লেক অ্যামিউজমেন্ট পার্ক, ওয়াটার ওয়ার্ল্ড, চিড়িয়াখানা, শিশু পার্ক, ভাটিয়ারি, সীতাকুণ্ড ও মিরসরাইয়ের বিনোদনকেন্দ্র দর্শনার্থীদের কোলাহলে মুখরিত হয়ে উঠেছে। চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানায় সব বয়সী মানুষের ভিড় জমেছে। খাঁচায় বন্দি বাঘ, সিংহ, হরিণ, জেব্রাসহ নানা প্রজাতির পশুপাখি দেখে শিশুরা উচ্ছ্বসিত, মুগ্ধ দর্শনার্থীরা। দোলনা, রাইডে উঠে শিশুদের খেলা আর প্রিয়জনদের সঙ্গে ছবি তুলে ঈদ আনন্দ ভাগাভাগি করে নেওয়া হচ্ছে।

চিড়িয়াখানাও সেজেছে নতুন সাজে। ঈদের ছুটির এই সময়ে চার-পাঁচদিনে ৬০-৭০ হাজার দর্শনার্থীর সমাগম হবে ।

এদিকে ফয়’স লেক অ্যামিউজমেন্ট পার্ক ও ওয়াটার পার্ক সি ওয়ার্ল্ড-এ পর্যটকদের ভিড় বাড়ছে। পরিবার-পরিজন নিয়ে ঘুরছেন অনেকে। বিভিন্ন রাইড এবং সি ওয়ার্ল্ডে এখন ভিড় লেগেই আছে। ওয়েব পুল, ফ্যামিলি পুল, মাল্টিস্লাইড, ড্যান্সিং জোন লোকে লোকারণ্য হয়ে উঠেছে। ছোটদের সঙ্গে বড়রাও ঝাঁপিয়ে পড়ছেন পুলে। একসপ্তাহে ৩৫-৪০ হাজার দর্শনার্থীর সমাগম হবে । দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে আসা ভ্রমণ পিপাসুরা রিসোর্ট ও বাংলোতে উঠেছেন। প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত পার্ক খোলা থাকছে’।
কাজীর দেউড়ির শিশু পার্ক, বহদ্দারহাট স্বাধীনতা কমপ্লেক্স, কর্ণফুলী নদীর তীর, কাট্টলী সৈকত, সিআরবি, ওয়ার সিমেট্রিও মুখর হয়ে উঠেছে দর্শনার্থীদের ভিড়ে।