বাংলাদেশ মেইল ::
ব্রিটেনের রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথের সিংহাসনে আরোহণের ৭০ বছরে এসে মৃত্যুবরণ করেছেন। এরআগে অসুস্থ অবস্থায় তাকে লাইফ সাপোর্টে রাখা হয়েছিল। বৃহস্পতিবার দুপুর থেকেই রানীর শারিরীক অবস্থার অবনতির খবর ছড়িয়ে পড়ে। রানীর ছেলে, মেয়ে, নাতি, নাতনীসহ পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা একে একে বালমোর ক্যাসেলে পৌঁছেন । এর কিছুক্ষণ পরই বার্কিংহ্যাম পেলেস থেকে রানীর মৃত্যূর আনুষ্ঠানিক ঘোষণা আসে।
বৃহস্পতিবার তার স্বাস্থ্য নিয়ে উদ্বেগ বেড়ে যাওয়ার পরে তার পরিবার তার স্কটিশ এস্টেটে জড়ো হয়েছিলেন।
বৃহস্পতিবার (৮ সেপ্টেম্বর) স্থানীয় সময় সন্ধ্যা সাতটায় তাকে মৃত ঘোষণা করা হয়। এক বিবৃতিতে বাকিংহাম প্যালেস বলেছে: “রানী আজ বিকেলে বালমোরালে শান্তিপূর্ণভাবে মারা গেছেন।
৭০ বছর রাজত্ব করার পর যুক্তরাজ্যের সবচেয়ে দীর্ঘ মেয়াদী রাজা রানী দ্বিতীয় এলিজাবেথ ৯৬ বছর বয়সে বালমোরালে মারা গেলেন।
তিনি তাঁর সরকারি বাসভবন লন্ডনের বাকিংহ্যাম পেলেস থেকে ৫০০ মাইল দূরে স্কটল্যান্ডের বালমোর ক্যাসেলে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। গত জুনের শেষ দিকে তিনি স্কটল্যান্ড গিয়েছিলেন সেনাবাহিনীর একটি প্যারেড অনুষ্ঠানে যোগ দিতে। কিন্তু শারিরীক জটিলতার কারণে আর লন্ডন ফিরতে পারেননি।
রানী ১৯৫২ সালে সিংহাসনে আসেন এবং বিশাল সামাজিক পরিবর্তনের সাক্ষী হন।তার মৃত্যুর সাথে, তার জ্যেষ্ঠ পুত্র চার্লস, প্রাক্তন প্রিন্স অফ ওয়েলস, নতুন রাজা এবং ১৪টি কমনওয়েলথ রাজ্যের রাষ্ট্রপ্রধান হিসাবে শোকের মধ্যে দেশটিকে নেতৃত্ব দেবেন।
ব্যাকিংহ্যাম প্যালেসের মুখপাত্র বলেন, রাজা এবং রানী কনসোর্ট আজ সন্ধ্যায় বালমোরালে থাকবেন এবং আগামীকাল লন্ডনে ফিরে আসবেন।
মাত্র দুইদিন আগে (৬ সেপ্টেম্বর, মঙ্গলবার) কনজার্ভেটিভ পার্টির নবনির্বাচিত লীডার লিজ ট্রাস বালমোর ক্যাসেলের গ্রীন রুমে রানীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করে প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব গ্রহণের অনুমতি নিয়েছিলেন।ব্রিটেনের ইতিহাসে এটি একটি কস্টের দিন, কারণ ৯৬-বছর বয়স্ক রানি এলিজাবেথ ১৯৫২ সাল থেকে এ পর্যন্ত একটানা ৭০ বছর ধরে সিংহাসনে আসীন রয়েছেন।দেশটিতে রাজতন্ত্রের বহু শতাব্দী দীর্ঘ ইতিহাসে তিনিই সবচেয়ে দীর্ঘ সময় সিংহাসনে অধিষ্ঠিত থেকেছেন।
বৃটিশ সিংহাসনের ইতিহাসে সবচেয়ে দীর্ঘ সময় ক্ষমতায় থাকা, ভীষণ জনপ্রিয় রানী দ্বিতীয় এলিজাবেথের মৃত্যু নিয়ে বৃটেনসহ সারাবিশ্বে উদ্বেগ ছড়িয়ে পড়ে। তার সব সন্তান, রাজ পরিবারের অন্য সদস্যরা দ্রুত ছুটে গিয়েছেন বা যাচ্ছেন স্কটল্যান্ডের বালমোরাল ক্যাসেলে। সেখানেই অবস্থান করছিলেন রানী। শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে রানীকে মেডিকেল সুপারভিশনে রাখা হয়েছিল। এর নেতৃত্বে ছিলেন পারিবারিক মেডিকেল বোর্ডের প্রধান ও রানীর চিকিৎসক প্রফেসর স্যার হিউ থমাস। তিনি ২০১৪ সাল থেকে প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। গত বছর তিনি নাইট উপধিতে ভূষিত হন। তিনি একই সঙ্গে ইম্পেরিয়াল কলেজ লন্ডনের সার্জারি ও ক্যান্সার বিভাগে গ্যাসট্রোইনটেসটাইনালের প্রফেসর। রানীর চিকিৎসাসহ রাজ পরিবারের কনিষ্ঠ সদস্যদেরও তিনি চিকিৎসা করেন।