সার ডিলারদের সাথে প্রতারণা
এশিয়ান টেলিভিশনের প্রতিনিধি, খুচরা সার ডিলারদের সমন্বয়ক

বাংলাদেশ মেইল ::

মাদারীপুর জেলার কালকিনিতে এশিয়ান টেলিভিশনের প্রতিনিধি ‘মাসুদের’ অভিনব প্রতারণা শিকার হয়েছে খুচরা সার ডিলাররা। মাসুদ নিজেকে সার ডিলারদের সমন্বয়ক পরিচয় দিয়ে বিভিন্ন মানুষের কাছ থেকে টাকা ও চেক সংগ্রহ করেন।

সোমবার উপজেলা পরিষদে ত্রাণ কমিটি সভায় সার নিয়ে কথিত সাংবাদিকের প্রতারণার বিষয়টি উপস্থাপন করে ভুক্তভোগীরা। ভুক্তভোগীদের অভিযোগের প্রেক্ষিতে মাসুদকে  সার ডিলারদের সামনে হাজির করা হলে,সে তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ স্বীকার করে বিভিন্ন ডিলারের কাছ থেকে নেয়া ফেরত দেবার প্রতিশ্রুতি দিয়ে মুচলেকা দিয়েছেন।

স্থানীয় ব্যবসায়ীদের অভিযোগ মাসুদ নিজেকে উপজেলার ১৫ টি ইউনিয়নের খুচরা ও পাইকারী  সার বিতরনের সমন্বয়ক দাবি করে বিভিন্ন জনের কাছ থেকে টাকা নিয়েছে। মাসুদ নিজেকে উপজেলা পরিষদ  থেকে সার মনিটরিং এর দায়িত্ব পেয়েছে বলে জানিয়ে খুচরা ও পাইকারী সার ডিলারদের সাথে প্রতারণা করে টাকা আত্মসাত করেছেন। বিভিন্ন ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে বিভিন্ন সময়  সারের অনিয়মের কথা বলে বিকাশে টাকা সংগ্রহ করেছেন।এরমধ্যে এক নারীর কাছ থেকে নিয়েছেন ত্রিশ লক্ষ টাকার চেক। পরে ঐ নারীর বিরুদ্ধে চেক প্রতারণার মামলার ভয় দেখিয়ে দশ লক্ষ টাকায় সমঝোতার প্রস্তাব দেন। বিষয়টি নিয়ে স্থানীয় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে অভিযোগ করেন ভুক্তভোহী নারী মনি ও সার ডিলাররা।

ভুক্তভোগী নারী মনি বলেন, ‘ মাসুদ আমাকে চেক জালিয়াতির মামলা দিয়ে হয়রানি করছে । পরে দশ লক্ষ টাকায় সমঝোতা করার প্রস্তাব দেয়া হয়েছে। অথচ সে কোন টাকা পাই না। ‘

এদিকে, ভুক্তভোগী সার ডিলাররা অভিযোগ করেছেন মাসুদ ক্যামেরা নিয়ে গিয়ে ভিডিও ফুটেজ সংগ্রহ করতো। অনিয়মের নিউজ করে দেবার কথা বলে টাকা দাবি করতো। কখনো নগদ, কখনো বা বিকাশে মাসুদ কালকিনির পনের ইউনিয়নের খুচরা ও পাইকারী সার ডিলারদের কাছ থেকে চাঁদা দাবি করতো।

তাপস নামের আরেক ভুক্তভোগীর অভিযোগ মাসুদ তার কাছ থেকে বিদেশ নিয়ে যাবার কথা বলে দুই লক্ষ দশ হাজার টাকা নিয়েছে। টাকা ফেরত চাইলেই টেলিভিশনের ভয় দেখান। প্রধান কার্যালয়ে শীর্ষ সাংবাদিকদের সাথে কথা বলিয়ে হুমকি ধামকি করতেন।

সভায় তাকে আটকানো হলে আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য ও কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক আব্দুস সোবহান গোলাপের লোক বলে পরিচয় দিয়ে বাঁচার চেষ্টা করেন মাসুদ।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শারমিন ইয়াসমিন বলেন, ‘ ক্ষতিগ্রস্তদের অভিযোগের প্রেক্ষিতে তিনি সব টাকা ফেরত দেবার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। বিষয়টি সার ডিলার, ব্যবসায়ী নেতাদের সামনে বসে সুরাহ করা হয়েছে। উনি নিজের ভুল স্বীকার করে মুচলেকা দিয়েছেন। ‘

এদিকে, চট্টগ্রামের শেরশাহ কলোনীতে এশিয়ান টেলিভিশনের বিভাগীয় প্রধান দাবি করে জামাল হোসেন নামের অন্য এক প্রতারক স্থানীয়  ব্যবসায়ীর অফিসে গিয়ে টাকা দাবি করেন। ভুক্তভোগী ব্যবসায়ী তৎক্ষনাৎ  চট্টগ্রাম সাংবাদিক ইউনিয়নের নেতাদের অভিযোগ করলে সাঙ্গপাঙ্গসহ ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যান কথিত বিভাগীয় প্রধান। তবে এশিয়ান টেলিভিশনের চট্টগ্রাম কার্যালয় থেকে এই নামের কেউ কর্মরত নয় বলে জানিয়েছেন।