চমেক এলাকায় দোকান ক্যান্টিন ভাড়ায় অনিয়ম
চমেকের তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী সমিতির সাড়ে ২৯ লাখ টাকা জব্দ

বাংলাদেশ মেইল ::

চমেক হাসপাতালের নানা অনিয়ম দুর্নীতি নিয়ে অনুসন্ধান করে চাঞ্চল্যকর তথ্য পেয়েছে  দুর্নীতি দমন কমিশন । চলমান  অনুসন্ধানের অংশ হিসেবে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী সমিতির ২৯ লাখ ৪৭ হাজার ৬৯৬ টাকা রোববার অবরুদ্ধ করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। অগ্রণী ব্যাংক চমেক শাখায় চারটি ব্যাংক অ্যাকাউন্টে এসব টাকা জমা রয়েছে।

দূর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) চট্টগ্রাম সমন্বিত কার্যালয় -২ এর  উপসহকারী পরিচালক শরিফ উদ্দিন বলেন,  হাসপাতালের তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী সমিতির নামে একাধিক ক্যান্টিন রয়েছে। এসব ক্যান্টিন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের হলেও সেগুলো ভাড়া দিয়ে টাকা তুলে নেয় সমিতি। এসব টাকা সমিতির নামে ব্যাংকে জমা রয়েছে। সরকারি স্থাপনা ভাড়া দিয়ে কর্মচারীদের নামে টাকা জমা রাখা বেআইনি। এটি এক ধরনের দুর্নীতি। তাই টাকাগুলো অবরুদ্ধ করা হয়েছে।

অগ্রণী ব্যাংক চমেক শাখার ব্যবস্থাপক লক্ষ্মণ চন্দ্র দাশ বলেন, হাসপাতাল কর্মচারী সমিতির চারটি ব্যাংক অ্যাকাউন্ট অবরুদ্ধে নির্দেশ দিয়েছে দুদক।

দুদকের উপসহকারী পরিচালক শরিফ উদ্দিন আরও বলেন, ‘শুধু কর্মচারী সমিতির ক্যান্টিনের টাকা নয়, আমরা হাসপাতালের টেন্ডার শাখা নিয়েও অনুসন্ধান করছি। চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ স্টুডেন্ট ক্যাফেটেরিয়া (সিএমসি) ইজারায় নানা অনিয়মের তথ্য পাওয়া গেছে। একজনের নামে ক্যান্টিক ইজারা নিয়ে ভিন্ন ব্যাক্তিকে  উপ ভাড়াটিয়া হিসেবে দেয়া হয়েছে। ২০১৫ সালের পর থেকে ‘মেসার্স   ভান্ডার ট্রেডার্স ‘ নামের একটি প্রতিষ্ঠানকে সিএমসি ক্যাফেটেরিয়া পরিচালনার দায়িত্ব দেয়া হয়েছে নীতিমালা না মেনেই। প্রতিষ্ঠানটি রেস্টুরেন্ট ব্যবসার কোন পূর্ব অভিজ্ঞতার সনদ পাওয়া যায় নি। ইতিমধ্যে হাসপাতালে খাবার সরবরাহ, যন্ত্রপাতি সরবরাহের টেন্ডার প্রক্রিয়ার নানা অনিয়ম প্রমাণিত হয়েছে। এর মধ্যে ২৫ ও ২৬ নভেম্বর চমেক হাসপাতালের সাবেক উপ-পরিচালক ও রক্ত পরিসঞ্চালন বিভাগের এক চিকিৎসকসহ কয়েকজন কর্মকর্তা ও কর্মচারীকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে দুদক। আরও কয়েকজন কর্মকর্তা-কর্মচারীকে শিগগির জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।’

সুত্রমতে, চমেক হাসপাতালের পাশাপাশি চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজে বিভিন্ন  সরবরাহ ও ইজারা প্রক্রিয়া নিয়ন্ত্রন করে আসছে একটি সিন্ডিকেট। ক্যাফেটেরিয়া পরিচালনাকারী প্রতিষ্ঠানের কোন দৃশ্যমান অস্তিত্ব নেই৷ ভুয়া ঠিকানায় ট্রেড লাইসেন্স সংগ্রহ করে  ফারুক নামের জনৈক যুবলীগ নেতা কান্টিনের ইজারা নিয়ন্ত্রন করে আসছে দীর্ঘ পাঁচ বছর যাবত।

প্রসঙ্গত, চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ ও চমেক হাসপাতালে যন্ত্রপাতি, খাবার সরবরাহ, টেন্ডার নিয়ন্ত্রণে  দীর্ঘ পনের বছরের নানা অনিয়ম দূর্নীতির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নেবার কারনে সংঘবদ্ধ  চক্র আস্তানা গেড়েছে। দুদকের অনুসন্ধানে বের হয়ে এসেছে চমেক হাসপাতালের কেনাকাটায় নানা অনিয়মের চিত্র।