সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময়
অগ্নিকাণ্ডে বিএম ডিপোর ক্ষতি হয়েছে এক হাজার কোটি টাকা

বাংলাদেশ মেইল ::

সীতাকুন্ডে বিএম কনটেইনার ডিপোতে অগ্নিকান্ডের ঘটনায় প্রতিষ্ঠানটির প্রায় হাজার কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। পাশাপশি আইসিডি নীতিমালা অনুযায়ী সরকারি ২৫ সংস্থার সবকটির হালনাগাদ লাইসেন্স ও ছাড়পত্র রয়েছে বলে দাবি করেছেন ডিপো কর্তৃপক্ষ।

৭ জুলাই বিকেলে নগরীর একটি রেস্টুরেন্টে সাংবাদিকদের সাথে বিএম ডিপো কর্তৃপক্ষের মতবিনিময় কালে এসব তথ্য জানানো হয়।

এসময় লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন বিএম ডিপোর অভিভাবক প্রতিষ্ঠান স্মার্ট গ্রুপের মহাবস্থাপক (প্রশাসন) মেজর (অব.) শামসুল হায়দার সিদ্দিকী।

এসময় বিএম ডিপোর মহাব্যস্থাপক ক্যাপ্টেন (অব.) মাইনুল আহসান খানসহ প্রতিষ্ঠানটির উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। লিখিত বক্তব্যে নিহতদের প্রতি গভীর শোক ও আহত এবং হতাহতদের পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানানো হয়।

এসময় লিখিত বক্তব্যে জানানো হয়, দুর্ঘটনার পর ঢাকা ও চট্টগ্রামের ১২টি হাসপাতালে আহতদের সুচিকিৎসা নিশ্চিত করা হয়েছে প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে। ইতোমধ্যে ডিপোতে অক্ষত থাকা বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের মূল্যবান আমদানি-রপ্তানি পণ্য খালাসের পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।

এসময় লিখিত বক্তব্যে জানানো হয়, স্মার্ট গ্রুপ ২০০০ সালে পোশাক শিল্পের মাধ্যমে যাত্রা শুরু করে। এরপর নতুন নতুন শিল্প প্রতিষ্ঠা করেছে স্মার্ট গ্রুপ। এ পর্যন্ত গ্রুপের ২৫টি প্রতিষ্ঠানে প্রায় ৩০ হাজারের মতো লোকবল কর্মরত রয়েছেন। দূর্ঘটনার শিকার বিএম ডিপোতেও প্রায় ৬ শতাধিক কর্মকর্তা-কর্মচারী রয়েছেন।

২০১০ সালে দেশি বিদেশী প্রায় ৫শ কোটি টাকা বিনিয়োগে সীতাকুন্ডে শীতলপুরে বিএম কন্টেইনার ডিপোটি প্রতিষ্ঠা করা হয়। প্রতিষ্ঠার সময় থেকে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) বেসরকারি ইনল্যান্ড কন্টেইনার ডিপো (আইসিডি) নীতিমালা এবং নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয়ের আইসিডি/অফডক নীতিমালা অনুযায়ী সরকারি ২৫টি সংস্থার প্রত্যেকটির প্রয়োজনীয় লাইসেন্স ও ছাড়পত্র নিয়েই কমপ্লায়েন্স মেনে ডিপোর অপারেশনাল কার্যক্রম পরিচালনা করছে বিএম ডিপো। বর্তমানেও প্রত্যেকটি প্রতিষ্ঠানের এইসব লাইসেন্স ও ছাড়পত্র হালনাগাদ রয়েছে বলে অনুষ্ঠানে দাবি করা হয়।

বিপদজ্জনক পণ্য (ডিজি গুডস) ব্যবস্থাপনায় আন্তর্জাতিক মেরিটাইম ডেঞ্জারাস গুডস (আইএমডিজি) কোড মেনে ডিপোর অপারেশনাল কার্যক্রম পরিচালনা করে বিএম ডিপো। সব ধরণের লাইসেন্স এবং ছাড়পত্রের কপি ইতোমধ্যে সরকারি প্রত্যেকটি ̈ তদন্ত কমিটিকে উপস্থাপন করা হয়েছে বলে মতবিনিময় সভায় জানানো হয়।

সভায় লিখিত বক্তব্য বলা হয় ̈, দুর্ঘটনার পর প্রতিশ্রুত অর্থসহায়তা প্রদান শুরু করেছে বিএম ডিপো কর্তৃ পক্ষ। ইতিমধ্যে ̈ সবমিলিয়ে নিহত ২৬ জন, আহত ৪৩ জনের পরিবারকে মোট ৫ কোটি ৬৭ লক্ষ টাকা অর্থ সহায়তা প্রদান করা হয়েছে।এরমধ্যে ̈ নিহত সদস্যের পরিবারকে ১০ লক্ষ টাকা, অঙ্গ হারানো আহতদের ৬ লক্ষ টাকা এবং সাধারণ আহতদের ৪ লক্ষ টাকা, ফায়ার সার্ভিসের নিহত সদস্যদের ̈ প্রত্যেকের পরিবারকে ১৫ লক্ষ টাকা, অঙ্গ হারানো আহতদের ১০ লক্ষ টাকা এবং সাধারণ আহতদের ৭ লক্ষ টাকা করে প্রদান করা হয়েছে। নিহতদের মধ্য ̈ যাদের পরিচয় শনাক্ত হয়নি এবং যেগুলোতে আইনী জটিলতা রয়েছে, সেগুলো পরবর্তী ধাপে প্রদানের প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়। পাশাপাশি নিহত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের পরিবারে কোন উপার্জনক্ষম ব্যক্তি থাকলেও তাদের যোগ্যতা অনুযায়ী চাকুরি ব্যবস্থা করা, যাদের পরিবারে উপার্জনক্ষম ব্যক্তি নেই এবং নিহতদের ছোট সন্তান রয়েছে,তারা উপার্জনক্ষম না হওয়া পর্যন্ত নিহত কর্মীদের মাসিক বেতন চালিয়ে যাওয়ার প্রতিশ্রুতিও দেওয়া হয়। ইতোমধ্যে অনেকে চাকুরির জন্য সিভি জমা দিয়েছেন।

দুর্ঘটনার পর ইতোমধ্যে প্রতিষ্ঠানের প্রায় ৬শ কর্মকর্তা কর্মচারীদের মে ও জুন মাসের বেতন এবং কোরবানির ঈদের বোনাস পরিশোধ করা হয়েছে।

নিহত-আহত প্রত্যেক কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বাড়িতে, বাসায় বাসায় গিয়ে বেতন-ভাতা ও বোনাসের এসব টাকা পৌঁছে দেওয়া হয়েছে।