নীলফামারীতে বঙ্গবন্ধুর অন্ধভক্ত মুক্তিযোদ্ধা মোতালেব সরকারের কাঙ্গালী ভোজ

    শাহজাহান আলী মনন, নীলফামারী জেলা প্রতিনিধি ॥ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অত্যন্ত অন্ধভক্ত নীলফামারীর সৈয়দপুরে মোতালেব সরকার। কুলির কাজ করেও যিনি প্রতিবছর জাতীয় শোক দিবসে নিজ উদ্যোগে কাঙ্গালী ভোজের আয়োজন করেন গরীব, দুঃখী মানুষের জন্য। এবারও তার ব্যতিক্রম হয়নি।

    সরেজমিনে গিয়ে সৈয়দপুর উপজেলার কামারপুকুর ইউনিয়নের শাহ্পাড়া গ্রামে গিয়ে দেখা যায় তার বাড়ির উঠানে অসংখ্য মানুষের উপস্থিতি। তিনি তাদের হাতে তুলে দিচ্ছেন জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষ্যে তৈরী কাঙ্গালী ভোজ।

    মোতালেব সরকার

    এসময় তার সাথে কথা বলে জানা যায়, তার নাম মোতালেব সরকার (৬৫)। মৃত রেয়াজুল শাহ’র ছেলে। ১৭৯১ সালে বঙ্গবন্ধুর ভাষণে উৎজ্জীবিত হয়ে মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহন করেন। দেশ স্বাধীনের পর তিনি বঙ্গবন্ধুর আদর্শে গড়া বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের একজন বলিষ্ট কর্মী হিসেবে কাজ করতে থাকেন। স্বাধীনতা যুদ্ধে অংশগ্রহন করলেও তার নাম মুক্তিযোদ্ধা তালিকায় ঠাই পায়নি। তাই পেশা হিসেবে বেছে নেন কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনালে কুলির কাজ। একজন মুক্তিযোদ্ধা হয়েও কুলির কাজ করে সংসার পরিচালনা করছেন। তিনি একজন বলিষ্টকর্মী হয়েও দলের কোন সুযোগ সুবিধা নেননি।

    তিনি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও দেশ নেত্রী শেখ হাসিনাকে জীবনের চেয়েও বেশি ভালবাসেন। তাই তিনি প্রায় ৩০ বছর ধরে ১৫ আগষ্টে তার নিজ বাসভবনে প্রতি বছর কাঙ্গালী ভোজ করে থাকেন। ওই কাঙ্গালী ভোজে প্রতি বছর ৪/৫ শত এতিম শিশু ও অসহায় দরিদ্রের মাঝে খাবার বিতরণ করেন।

    তিনি একজন গরিব হলেও কারও কাজ থেকে কোন সাহায্য সহযোগিতা না নিয়ে নিজের অর্থ ব্যয় করে কাঙ্গালী ভোজ করে থাকেন। প্রতি বছর এই দিনে তার বাড়ীর উঠানে মাইক লাগিয়ে বিশাল গেট বানিয়ে এ কাঙ্গালী ভোজের আয়োজন করেন। দিন ব্যাপী চলে বঙ্গবন্ধুর ভাষণ ও বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে গান।

    এছাড়া তার বাসভবনের প্রতিটি ঘরে বঙ্গবন্ধু, শেখ হাসিনা ও জয়ের বিভিন্ন ডিজাইনের ছবি এবং বিভিন্ন ডিজাইনের নৌকার ছবি যত্ন সহকারে রাখা হয়েছে। পুরো বাড়িটি বঙ্গবন্ধু, শেখ হাসিনা, জয় ও নৌকার ছবিতে ছেয়ে গেছে। তিনি লেখাপাড়া না জানলেও বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে বেশ কয়েকটি গান রচনা করেছেন।

    তার দুই ছেলে লেখাপড়া করলেও ভাগ্যে জুটেনি সরকারী চাকুরী। তার দাবী মুক্তিযোদ্ধা তালিকায় তার নাম অন্তভূক্ত করা হোক এবং ছেলেদের সরকারী চাকুরীর জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে আকুতি জানিয়েছেন।

    সেই সাথে তিনি যেন বঙ্গবন্ধু ও শেখ হাসিনার আদর্শ নিয়ে মরতে পারেন সেজন্য তিনি সৃষ্টিকর্তার কাছে সব সময় এ কামনা করেন।

    বিএম