হালদা নদী দূষণ
    এশিয়ান পেপার মিলের উৎপাদন বন্ধের নির্দেশ

    বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় ত্রুটি ও প্রজননক্ষেত্র হালদা নদী দূষণের দায়ে চট্টগ্রামের হাটহাজারী উপজেলার নন্দীরহাট এলাকার এশিয়ান পেপার মিলস (প্রা.) লিমিটেড কারখানার উৎপাদন বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছে পরিবেশ অধিদফতর।

    রোববার (১৮ আগস্ট) দুপুরে পরিবেশ অধিদফতরের চট্টগ্রাম কার্যালয়ে শুনানি শেষে এ আদেশ দেন অধিদফতরের পরিচালক আজাদুর রহমান মল্লিক।

    পরিবেশ অধিদফতরের সহকারী পরিচালক সংযুক্তা দাশ গুপ্তা গণমাধ্যমকে বলেন, এর আগে প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে ক্ষতিপূরণ আরোপ ও সতর্ক করা হলেও তারা কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। তাই উৎপাদন বন্ধ রাখার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। এর আগে গত ১৪ আগস্ট পরিবেশ অধিদফতরের একটি টিম সরেজমিন পরিদর্শনে গিয়ে প্রতিষ্ঠানটির বর্জ্য ব্যবস্থাপনা পরিস্থিতি নাজুক দেখতে পান। এ ঘটনায় প্রতিষ্ঠানটিকে ১৮ আগস্ট শুনানিতে অংশ নেয়ার জন্য আহ্বান জানানো হয়।

    কারখানার অপরিশোধিত প্রাণঘাতী বর্জ্য এসব খালের মাধ্যমে মিঠা পানির রুইজাতীয় মাছের প্রাকৃতিক মৎস্য প্রজনন ক্ষেত্র হালদা নদীতে গিয়ে পড়ে। এতে নদীর জীববৈচিত্র্য ও নদীর প্রাকৃতিক পরিবেশকে হুমকির মুখে ফেলছে।

    চলতি বছরের ১০ জুন পরিবেশ অধিদফতর হালদা দূষণের কারণে ২০ লাখ টাকা জরিমানা করেছিল। ওই সময় প্রতিষ্ঠানটিকে ইফ্লুয়েন্ট ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট (ইটিপি) কার্যকর করার নির্দেশ দিয়েছিল অধিদফতর। ওই ঘটনার দুই মাসের মাথায় এশিয়ান পেপার মিলের বিরুদ্ধে আবার হালদা নদী দূষণের অভিযোগ উঠেছে।এশিয়ান পেপার মিলের বিরুদ্ধে আবার হালদা নদী দূষণের অভিযোগ উঠেছে। ১০ আগস্ট শনিবার রাত সাড়ে ১০টায় ওই কারখানা থেকে পাশের মরা ছড়ায় ছুটির সুযোগে অপরিশোধিত প্রাণঘাতী তরল বর্জ্য ছাড়ার প্রমাণ পেয়েছেন হাটহাজারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রুহুল আমিন।

    ওই রাতে এবং পরের দিন রোববার দুপুরে ইউএনও’র সঙ্গে হালদা গবেষক দলের সদস্যরা ওই পেপার মিল তথা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।

    ওইদিন রাতে এশিয়ান পেপার মিল যে রাতের আঁধারেই অপরিশোধিত প্রাণঘাতী তরল বর্জ্য ছেড়ে দেয় হালদায়, এর স্পষ্ট প্রমাণ মিলেছে ইউএনও’র সরেজমিন পরিদর্শনে।

    দেখা গেছে, ঈদে মানুষের ব্যস্ততার সুযোগে পানি ছেড়ে দিয়েছে এশিয়ান পেপার মিল। সংগ্রহ করা হয় দুই বোতল নমুনা, যা পরিবেশ অধিদফতরে পাঠানো হয়েছে বলে জানানো হয়েছে।

    এছাড়া চলতি বছরের ৩০ মে সত্তার ঘাট এলাকায় হালদা নদীর পাড়ে একটি অনুষ্ঠানে যোগ দিতে এসে পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব কবির বিন আনোয়ার স্থানীয় বাসিন্দা ও সংশ্লিষ্টদের কাছ থেকে অভিযোগ পেয়ে এশিয়ান পেপার মিলের বিরুদ্ধে মামলাসহ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন।

    বিএম/এমআর