পররাষ্ট্রমন্ত্রীর ভারত সফরে ৫ টি সমঝোতা চুক্তির সম্ভাবনা

    বিএম ডেস্ক: একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জয়ী আওয়ামী লীগ সরকারের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন প্রথম বিদেশ সফরে প্রতিবেশী দেশ ভারতে গেছেন।

    বুধবার (৭ ফেব্রুয়ারি) রাতে তিনি দিল্লিতে পৌঁছান। নতুন সরকার দায়িত্ব গ্রহণের পর নতুন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে প্রথম বিদেশ সফরের জন্য দিল্লিকেই বেছে নিলেন এ কে আব্দুল মোমেন।

    পররাষ্ট্রমন্ত্রী সেখানে আজ থেকে তার সফরের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হবে। বৈঠক হবে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুষমা স্বরাজের সঙ্গে। সদ্য সাবেক প্রেসিডেন্ট প্রণব মুখার্জির সঙ্গে দেখা করবেন।

    দিল্লিতে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুষমা স্বরাজের সাথে আলোচনায় দ্বিপক্ষীয় নানা বিষয়ের পাশাপাশি রোহিঙ্গা ইস্যুতে ভারতকে আরও সম্পৃক্ত করার বিষয়ে চেষ্টা করবেন বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আবদুল মোমেন।

    কূটনৈতিক সূত্রগুলো বলছে, নয়া পররাষ্ট্রমন্ত্রীর প্রথম বিদেশ সফরে ভারতের সঙ্গে ৫টি সমঝোতা স্মারক সই হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এ নিয়ে ঢাকা-দিল্লি কাজ করছে। যোগাযোগ, পানিসম্পদ, নিরাপত্তা, বিদ্যুৎ, জ্বালানি, সীমান্ত ব্যবস্থাপনা এবং বাণিজ্যসহ বিষয়ে আলোচনা ও সমঝোতা হতে পারে। অবশ্য বাংলাদেশ ছেড়ে যাওয়ার আগে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, অনেক বিষয়ে আলোচনা হবে, সমঝোতা স্বাক্ষরিতও হতে পারে।

    রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা-বাসসকে ড. মোমেন জানিয়েছেন, রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে বাংলাদেশ ভারতের কাছে অধিকতর সমর্থন চাইবে। আমি তাদের সঙ্গে অন্যান্য বিষয়ের মধ্যে রোহিঙ্গা সমস্যা দ্রুত সমাধানের ব্যাপারে আলোচনা করতে চাই। কারণ, এই সমস্যা আঞ্চলিক স্থিতিশীলতার ওপর প্রভাব ফেতে পারে।

    মোমেন বলেন, বাংলাদেশের ৩০ ডিসেম্বরের নির্বাচনের পর বিদেশী নেতৃবৃন্দের মধ্যে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি সর্বপ্রথম বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীকে অভিনন্দন জানান। আমাদের সব সমস্যায় আমরা তাদেরকে পাশে পেয়েছি।

    ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সাথে তার বৈঠকের বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্কের অধ্যাপক ড. দেলোয়ার হোসেন বলছেন এ বৈঠকটি গুরুত্বপূর্ণ কারণ বাংলাদেশের নতুন পররাষ্ট্রমন্ত্রী দায়িত্ব নিয়েছেন।

    ‘দুই পররাষ্ট্রমন্ত্রীর মধ্যে যোগাযোগ ও একই সাথে দু দেশের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয় নিয়ে আলোচনার পূর্বনির্ধারিত বিষয় ছিলো। বাংলাদেশ নিয়ে কংগ্রেস ও বিজেপি সরকারের মধ্যে বিশেষ কোনো পার্থক্য তৈরি হয়নি।’

    অধ্যাপক দেলোয়ার বলেন, জেসিসি বৈঠকে নিশ্চয়ই রোহিঙ্গা ইস্যু উঠবে এবং আঞ্চলিক ইস্যু হিসেবে এটিতে ভারতের সহযোগিতা বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী চাইবেন।

    আলোচনা চলছে ৫ সমঝোতা স্মারক নিয়ে কূটনৈতিক সূত্র নিশ্চিত করেছে যে, ভারতের সঙ্গে ৫টি চুক্তি নিয়ে আলোচনা চলছে। তা হলো- বাংলাদেশের দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) এবং ভারতের সেন্ট্রাল ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (সিবিআই) প্রথম সমঝোতা স্মারক (এমওইউ), রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন বাংলাদেশ টেলিভিশন (বিটিভি) এবং ভারতের প্রসার ভারতী দ্বিতীয় এবং দুই দেশের স্বাস্থ্যমন্ত্রী তৃতীয় একটি এমওইউ এ স্বাক্ষর করবেন।

    শুক্রবার ৫ম ইন্ডিয়া-বাংলাদেশ জয়েন্ট কনসালটেটিভ কমিশনের (জেসিসি) বৈঠকে এ নিয়ে আলোচনা হবে। ওই বৈঠকে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের সচিব এবং জেসিসি সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিভাগের প্রধানদের সমন্বয়ে উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দেবেন। ভারতীয় পক্ষে দেশটির সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সমন্বয়ে প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দেবেন ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ।

    বিএম/রনী/রাজীব