খালেদা জিয়াকে সুপরিকল্পিতভাবে হত্যার ষড়যন্ত্র হচ্ছে

    বিএম ডেস্ক : খালেদা জিয়াকে সুপরিকল্পিতভাবে হত্যা করার ষড়যন্ত্র হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। ২৭ মার্চ বুধবার নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।

    বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, সুস্থ অবস্থায় কারাগারে গেলেও বর্তমানে খালেদা জিয়া অত্যন্ত অসুস্থ। দ্রুত তাকে তার পছন্দের বিশেষায়িত হাসপাতালে ভর্তি করে চিকিৎসা দেয়ার দাবি জানাচ্ছি। অন্যথায় তার স্বাস্থ্যের কোনও অবনতি হলে এর দায়দায়িত্ব সরকার, কারা কৃর্তপক্ষ ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে নিতে হবে। এটাই নিয়ম ও আইন। কারণ তার সমস্ত চিকিৎসা দায়িত্ব তাদের।’

    ফখরুল বলেন, ‘ডায়াবেটিসের রোগী হিসেবে প্রতিদিন তার সুগার পরীক্ষা করার দরকার ছিল। সেই অনুযায়ী তার ওষুধ ও ডায়েট নির্ধারণ হয়। তবে গত সাড়ে তিন মাসে তার কোনও স্বাস্থ্য পরীক্ষা হয়নি। আমরা বারবার কারা কর্তৃপক্ষ ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে যোগাযোগ করার পর গত ২৪ ফেব্রুয়ারি আদালতের নির্দেশে খালেদা জিয়ার পরীক্ষার জন্য গঠিত মেডিক্যাল বোর্ড তাকে দেখতে যান। তারা কোনও পরীক্ষা করে নাই। কারাগারে পরীক্ষা করারও সুযোগ নেই।’

    মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমি নিজেই ৩০ বারের মতো আইজি প্রিজনের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেছি। কিন্তু পারি নাই। একবার ডেপুটি আইজি প্রিজনের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি প্রিজনের নম্বর দিয়ে বলেছেন, তিনি কিছু জানেন না। এরপর ৫ মার্চ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করে এই মেডিক্যাল রিপোর্ট নিয়ে কথাও বলেছি। খালেদা জিয়ার পছন্দমতো ইউনাইটেড হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়ার কথা বলেছি।’ মির্জা ফখরুল বলেন, কারাগারে খালেদা জিয়া সীমাহীন কষ্ট ভোগ করছেন। তার চিকিৎসার বিষয়ে কারা কর্তৃপক্ষ উদাসীন। সুপরিকল্পিতভাবে তাকে হত্যার দিকে ঠেলে দেয়া হচ্ছে। গত তিন মাস ধরে তার কোনো পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হয়নি।

    মির্জা ফখরুল বলেন, ‘২৬ মার্চ তার (খালেদা জিয়া) পরিবারের সদস্যরা কারাগারে দেখা করতে গিয়েছিলেন। তারা এসে বলেছেন, তিনি আরও অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। আমিও কোর্টের মধ্যে দেখেছি, তিনি মাথা সোজা করতে পারছেন না। পা বাকা করতে পারছেন না। তাকে জোর করে হুইল চেয়ারে বসিয়ে কোর্টে নিয়ে আসা হয়।’ তিনি বলেন, তিনবারের প্রধানমন্ত্রী, দুইবার বিরোধীদলীয় নেতা-এমন একজন নেত্রীকে কোনো রকমের চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে না। আমরা বারবার বলেছি, তাকে সুপরিকল্পিতভাবে হত্যা করার ষড়যন্ত্র হচ্ছে। এর দায় দায়িত্ব কারা কর্তৃপক্ষ ও সরকারের।

    মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমরা জানি, আমরা একটি গণতন্ত্রবিহীন, প্রতিকারহীন দখলদারী রাষ্ট্রে বাস করছি। এই সরকার পুরোপুরি দখলদার। বেআইনিভাবে তারা ক্ষমতা দখল করে আছে। আমার মনে একটি বর্বর সমাজেও অসুস্থ মানুষের প্রতি একটা মানবিক আচরণ করা হয়। যা এই সরকার করছে না।’

    বিএনপি মহাসচিব বলেন, আমাদের দাবি একটাই। অবিলম্বে এই মুহূর্তে খালেদা জিয়াকে তার পছন্দের হাসপাতালে স্থানান্তর করা হোক এবং সুচিকিৎসার ব্যবস্থা করা হোক। অন্যথায় যদি তার স্বাস্থ্যের অবনতি ঘটে তাহলে সমস্ত দায়-দায়িত্ব সরকার, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং কারা কর্তৃপক্ষকে অবশ্যই বহন করতে হবে।

    সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড.আব্দুল মঈন খান, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ভাইস চেয়ারম্যান ডা. জাহিদ হোসেন, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী প্রমুখ।

    বিএম/রনী/রাজীব