পাহাড়ে পিডিবির আবাসন প্রকল্পের জমি অধিগ্রহণে স্থগিতাদেশ

    কক্সবাজার প্রতিনিধি : কক্সবাজার শহরের ঝিলংজা মৌজায় পাহাড় ও টিলায় বিদ্যুৎ বিভাগের (পিডিবি) কর্মকর্তা-কর্মচারীদের আবাসন প্রকল্পের জন্য জমি অধিগ্রহণের প্রক্রিয়া স্থগিত করেছেন আপিল বিভাগ।

    হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতির (বেলা) করা লিভ টু আপিল মঞ্জুর করে এ আদেশ দেয়া হয়। গতকাল প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বাধীন চার সদস্যের আপিল বিভাগ এ আদেশ দেন।

    বেলার পক্ষে মামলাটি পরিচালনা করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ফিদা এম কামাল, এএমএম আমিনউদ্দীন ও সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান। বিবাদীপক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম।

    আপিল বিভাগের আদেশের বিষয়টি নিশ্চিত করে বেলার প্রধান নির্বাহী সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, কক্সবাজার জেলার ১৭৫ একরের এ পাহাড় একমাত্র অক্ষত পাহাড়। পিডিবি তাদের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের আবাসনের জন্য আইন ভেঙে অক্ষত এ পাহাড়ের চার একর জায়গা অধিগ্রহণ করতে চেয়েছিল। আপিল বিভাগের আদেশের ফলে পাহাড়টি যেমন অক্ষত রইল, তেমনি ক্ষতিপূরণের নামে জনগণের টাকা লুটপাটের প্রক্রিয়াও বন্ধ হলো।

    জানা যায়, পিডিবির পক্ষ থেকে জমি অধিগ্রহণের জন্য ২০১৪ সালের ৫ এপ্রিল কক্সবাজার জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের ভূমি অধিগ্রহণ কর্মকর্তার কাছে একটি চিঠি দেয়া হয়। চিঠিতে শহরের কলাতলী এলাকার ঝিলংজা মৌজার ১৭০৩০ নং দাগের চার একর জমি পাহাড় শ্রেণীর উল্লেখ করা হয়। জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের ভূমি অধিগ্রহণ শাখা অধিগ্রহণের কাজও শুরু করে। পরে জানাজানি হলে বেলার পক্ষ থেকে হাইকোর্টে রিট করা হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে ২০১৫ সালের ৭ সেপ্টেম্বর রুলসহ জমি অধিগ্রহণের কার্যক্রম স্থগিতের নির্দেশ দেন আদালত।

    পরে এফিডেভিট ইন অপোজিশন আদালতে দাখিল করে বিকল্প জায়গায় তাদের স্থান নির্ধারণ করার আবেদন করলেও, ৫ এপ্রিল বিচারপতি নাঈমা হায়দার ও বিচারপতি জনাব আহমেদের ডিভিশন বেঞ্চ কক্সবাজার সদর উপজেলাধীন ঝিলংজা মৌজার চারটি দাগের জন্য এলএ কেস (জমি অধিগ্রহণ মামলা) চলমান রেখে পরিবেশ অধিদপ্তরকে একটি কমিটি গঠন করে তদারকি করতে বলা হয়, যাতে কোনো বন উজাড় বা পাহাড় কাটা না হয়। এছাড়া পরিবেশ অধিদপ্তরের কাছে এ নির্মাণকাজ অপরিহার্য ও জাতীয় স্বার্থে প্রয়োজন বলে প্রতীয়মান হলে বিধি পর্যালোচনাপূর্বক সঠিক বিবেচিত হলে পরিবেশগত প্রভাব নিরূপণপূর্বক অনুমতি দেয়ার পরামর্শ দেন আদালত।

    বেলার পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, এই অধিগ্রহণ মামলার তফসিল অনুসারে অধিগ্রহণের জন্য প্রস্তাবকৃত জমির পরিমাণ মোট চার একর, যার মধ্যে ৩ দশমিক ৯৮ একর জায়গা পাহাড় বা টিলা।

    এ বিষয়টি উল্লেখ করেই তারা হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে চলতি বছর লিভ টু আপিল করেন।
    এছাড়া এ মামলায় অতিরিক্ত পক্ষভুক্ত হয়ে আবেদনকারী মো. জামাল উদ্দিন খান ও মো. জিয়াউল হায়দার হাশমী তাদের দাবিকৃত অংশের মূল মালিক নন বলে জানা গেছে।

    তারা ভূমিহীন ব্যক্তিদের চাষাবাদের জন্য সরকারি কৃষিজমি বিনা সালামিতে এবং বিনা খাজনায় বন্দোবস্ত গ্রহণকারী ব্যক্তিদের কাছ থেকে পাওয়ার অব অ্যাটর্নির মাধ্যমে মালিকানাস্বত্ব অর্জন করেন বলে জানিয়েছে বেলা।

    বিএম/ ইসলাম/রাজীব..