বিএম ডেস্ক : বাংলাদেশের সঙ্গে বিদ্যমান বাণিজ্য নতুন উচ্চতায় নিতে আগ্রহ প্রকাশ করেছে ভুটানের প্রধানমন্ত্রী লোটে শেরিং।
শুক্রবার (১২ এপ্রিল) এফবিসিসিআই নেতৃবৃন্দের এক আলোচনা সভায় তিনি এ আগ্রহ প্রকাশ করেন।
এফবিসিসিআই নেতৃবৃন্দের সঙ্গে আলোচনাকালে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যের সম্ভাবনাগুলো খুঁজে দেখার পাশাপাশি বাংলাদেশ-ভুটানের মধ্যে আরও কার্যকর যোগাযোগ বৃদ্ধির বিষয়টির ওপর বিশেষ গুরুতারোপ করা হয়।
দু’দেশের ব্যবসায়ীদের নিয়ে এ অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ ও ভুটানের মধ্যে বাণিজ্য বাড়ানোর আহ্বান জানান ভুটানের প্রধানমন্ত্রী।
ব্যবসা বাণিজ্যের প্রসারের মাধ্যমে দু’দেশের বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর আহ্বান জানিয়ে ভুটানের প্রধানমন্ত্রী লোটে শেরিং বলেন, বাণিজ্য বৈষম্য এতো বেশি কেন? শুনেছি বাংলাদেশে ভুটানের রপ্তানি ৩০ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে গেছে। অথচ বাংলাদেশ ভুটানে রপ্তানি করে মাত্র ৩ বিলিয়ন ডলার। দু’দেশের মধ্যে মধ্যে ব্যবসা বাড়ানোর বহু উপায়, অনেক সম্ভাবনা আছে।
তার সরকারের উদার বাণিজ্যনীতির কথা তুলে ধরে ভুটানের প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের স্থলবেষ্টিত। তবে আমাদের হৃদয় বন্ধ নয়। ব্যবসার জন্য আমাদের দুয়ার উন্মুক্ত। বাংলাদেশিদের যদি ভুটানিদের কাছের মানুষ মনে হয়, ব্যবসা-বাণিজ্য এগিয়ে আসা উচিত।
লোটে শেরিং বলেন, আমরা যদি সত্যিই ঘনিষ্ঠ হই, মনে হয় ব্যবসাটা বাড়ানো উচিত। ব্যক্তিগতভাবে আমি মনে করি, এখন যেটা আছে তা যথেষ্ট নয়।
এফবিসিসিআই সভাপতি মো. শফিউল ইসলাম মহিউদ্দিনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এ আলোচনায় ভুটানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. টান্ডি দর্জি এবং সেদেশের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
সভায় ভুটান থেকে জলবিদ্যুৎ আমদানির বিষয়ে ভারতকে সম্পৃক্ত করার ওপর গুরুত্ব দেয়া হয়। ভুটানের প্রধানমন্ত্রীও জলবিদ্যুৎ প্রকল্পে ত্রিপাক্ষিক আয়োজনের ওপর গুরুত্ব দেন।
এ সময় বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান, এম.পি এবং দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা প্রতিমন্ত্রী ডা. মো. এনামুর রহমান অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
ভুটানের রাষ্ট্রদূত সোনাম তোবদেন রাবগে, ভুটান চেম্বার অব কমার্সের সভাপতি মিস ফুব জাম এবং সেদেশের ২৬ সদস্যের একটি বাণিজ্য প্রতিনিধিদল অনুষ্ঠানে অংশ নেন। এফবিসিসিআই সহ-সভাপতি ও পরিচালকবৃন্দসহ দেশের শীর্ষস্থানীয় ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দ সভায় উপস্থিত ছিলেন।
ভুটানের প্রধানমন্ত্রী লোটে শেরিং আরো বলেন, দু’দেশের মধ্যে বাণিজ্য উন্নয়নের বিপুল সম্ভাবনা রয়েছে। তিনি কার্যকর যোগাযোগের মাধ্যমে বন্ধুপ্রতিম এ দেশ দু’টির সম্পর্ক নতুন উচ্চতায় নিয়ে যাওয়ার আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
সালমান এফ রহমান বলেন, বাংলাদেশ এবং ভুটান উভয় দেশের সরকারই দারিদ্র্য বিমোচন এবং জনগণের কল্যাণে কাজ করে চলেছে।
অনুষ্ঠানে ‘জয়েন্ট বিজনেস কাউন্সিল’ গঠনের লক্ষ্যে এফবিসিসিআই এবং ভুটান চেম্বার অব কমার্সের মধ্যে একটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর হয়। এফবিসিসিআই সভাপতি এবং ভুটান চেম্বারের সভাপতি মিস ফুব জাম নিজ নিজ চেম্বারের পক্ষে স্মারকটি স্বাক্ষর করেন।
বাংলাদেশে ব্যবসা বাণিজ্য-বিনিয়োগ সম্ভাবনা নিয়ে এফবিসিসিআইয়ের ভাইস প্রেসিডেন্ট মুনতাকিম আশরাফ এবং ভুটানে বাণিজ্য-বিনিয়োগ সম্ভাবনা নিয়ে দেশটির অর্থমন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা থ্রোওয়া তেনজিন পাওয়ার পয়েন্ট উপস্থাপন করেন।
বিএম/রনী/রাজীব