হত্যার ৬০ দিন পর প্রেমিকের লাশ উদ্ধার

    বিএম ডেস্ক : হবিগঞ্জের লাখাইয়ে নিখোঁজের দুইমাস পর অবশেষে উজ্জ্বল মিয়ার (২২) লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। একাধিক সম্পর্কে জড়িত থাকায় তাকে হত্যা করে প্রেমিকা ফারজানা আক্তার।

    সোমবার বিকালে উপজেলার মেন্দির হাওরের একটি পুকুর থেকে তার লাশ উদ্ধার করা হয়।

    নিহত ছাত্র উজ্জ্বল মিয়া মুড়াকরি গ্রামের শাহ আলমের ছেলে। সে মাধবপুর সৈয়দ সাঈদ উদ্দিন কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র।

    এ ঘটনায় একই উপজেলার ধর্মপুর গ্রামের মন্জু মিয়া ও তার মেয়ে ফারজানা আক্তারকে আটক করা হয়েছে। তারা পুলিশের কাছে হত্যাকাণ্ডের কথা স্বীকার করেছেন। এ বিষয়ে সোমবার সন্ধ্যায় থানা চত্ত্বরে সংবাদ সম্মেলন করেন পুলিশ সুপার মোহাম্মদ উল্ল্যা।

    মঞ্জু মিয়া

    তিনি জানান, উপজেলা ধর্মপুর গ্রামের মন্জু মিয়ার মেয়ে ফারজানা আক্তার (১৭) হবিগঞ্জ বৃন্দাবন সরকারি কলেজের ২য় বর্ষের ছাত্রী এবং মুড়াকরি গ্রামের শাহ আলমের ছেলে উজ্জল মিয়া (২২) মাধবপুর সৈয়দ সাঈদ উদ্দিন কলেজে পড়াশোনা করে। ফেসবুকের মাধ্যমে তাদের মাঝে পরিচয় হয়। একপর্যায়ে তাদের মাঝে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। ফলে উজ্জল মাঝে মাঝে ফারজানা আক্তারের বাড়িতে আসা যাওয়া করতো। তাদের মাঝে দৈহিক সম্পর্কও গড়ে উঠে।

    পুলিশ সুপারের সংবাদ সম্মেলন

    তিনি বলেন, এদিকে খুব সুন্দর হওয়ায় উজ্জ্বল একাধিক মেয়ের সাথে প্রেম করতো। ফেব্রুয়ারি মাসে ফারজানার বাবা-মা ঢাকা যান। এ সুযোগে গত ২০ ফেব্রুয়ারি তার বাড়িতে যায় উজ্জ্বল। ওই রাতে তারা দৈহিক সম্পর্কে মিলিত হয়। এ সময় উজ্জ্বলের অন্য এক প্রেমিকা ফোন দিতে থাকে। কিন্তু সে ফোন রিসিভ না করায় ম্যাসেজ দেয়। সেটি দেখতে পেয়ে ফারজানা প্রথমে আত্মহত্যার সিদ্ধান্ত নেয়। পরে সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করে উজ্জ্বলকে হত্যার পরিকল্পনা নেয়। ওই রাতেই ঘরে থাকা মসলা বাটার সিল (পুথাল) দিয়ে তার মাথায় আঘাত করে। পরে মৃত্যু নিশ্চিত করতে হাত ও পায়ের রগ কেটে দেয়। পরদিন ঢাকায় গিয়ে বাবা মাকে বিষয়টি জানায়। তারা ঢাকা থেকে এসে তার বাবা লাশ নিয়ে মেন্দি হাওরে পুঁতে রাখেন।

    এই পুলিশ কর্মকর্তা আরও জানান, মৃত্যু নিশ্চিত হওয়ার পর লাশ বস্তায় ভরে ঘরের মেঝে খুঁড়ে পুঁতে রাখে। পরদিন ঢাকায় গিয়ে বাবা মাকে বিষয়টি জানায়। তারা ঢাকা থেকে এসে লাশ নিয়ে মেন্দি হাওরে পুঁতে রাখেন।

    এ ঘটনায় ২৬ ফেব্রুয়ারি উজ্জ্বলের বাবা থানায় একটি জিডি করেন। এর প্রেক্ষিতে পুলিশ সুপারের তত্ত্বাবধানে তদন্ত শুরু হয়। ২১ এপ্রিল ফারজানা ও তার বাবা মঞ্জু মিয়াকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। এক পর্যায়ে ফারজানা ঘটনা স্বীকার করে। তার বাবা মঞ্জু মিয়াও পরে বিষয়টি স্বীকার করেন।

    পরে তার দেখানো তথ্যমতে সোমবার বিকালে হাওর থেকে উজ্জ্বলের লাশ উদ্ধার করা হয়। তার বাবা শাহ আলম ছেলের লাশ সনাক্ত করেছেন।

    বিএম/রনী/রাজীব