নুসরাত হত্যার তদন্ত তনুর মতো না হয় : হাইকোর্ট

    বিএম ডেস্ক : ফেনীর সোনাগাজীতে মাদরাসাছাত্রী নুসরাত জাহান রাফিকে আগুনে পুড়ানোর ঘটনার তদন্ত কুমিল্লার তনুর ঘটনার তদন্তের মতো না হয় সে বিষয়ে তাগিদ দিয়েছেন হাইকোর্ট।

    মাদরাসা অধ্যক্ষের যৌন নিপীড়নের প্রতিবাদের কারণে গায়ে কেরোসিন ঢেলে পুড়িয়ে দেওয়া নুসরাত পাঁচ দিন ধরে ঢামেক হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে বাঁচার লড়াই করে বুধবার রাতে মারা যান।

    পত্রিকায় পত্রিকায় তার মৃত্যুর খবর বৃহস্পতিবার আইনজীবী সায়েদুল হক সুমন আদালতের নজরে আনলে হাইকোর্টের বিচারপতি শেখ হাসান আরিফ ও বিচারপতি রাজিক আল জলিলের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এমন মন্তব্য করেন।

    আদালত বলেন, ‘যেহেতু বিষয়টি প্রধানমন্ত্রী গুরুত্বের সঙ্গে নিয়েছেন- আমরা এ বিষয়ে কোনো আদেশ দিতে চাই না।’

    এর আগে ব্যারিস্টার সুমন আদালতকে বলেন, নুসরাতের মারা যাওয়ার ঘটনাটি মর্মান্তিক ও সেনসেটিভ। নুসরাত মারা যাওয়ায় সারাদেশের মানুষ ব্যথিত। এ ঘটনার সঙ্গে মাদরাসার অধ্যক্ষ, স্থানীয় বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সম্পৃক্ততার অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছে। তাই পুলিশের শুধু একজন এসআই দিয়ে এ ঘটনার তদন্ত করলে বিশ্বাসযোগ্য হবে না। আমরা বিচারবিভাগীয় তদন্তের নির্দেশনা দেয়ার আবেদন জানাচ্ছি। অগ্নিদগ্ধ মাদরাসাছাত্রী নুসরাত জাহানের মৃতু্যতে আমরাও ব্যথিত। সাংবাদিক দম্পতি সাগর-রুনি, কুমিল্লার তনু বা চট্টগ্রামের মিতুর মামলার মতো যেন নুসরাতের মামলাটিও হারিয়ে না যায়।

    ২০১৬ সালের ২০ মার্চ রাতে কুমিল্লার ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজের ইতিহাস বিভাগের শিক্ষার্থী ও নাট্যকর্মী সোহাগী জাহান তনুর লাশ উদ্ধার করা হয়। তনু হত্যা মামলার তদন্ত তিন বছরেও শেষ হয়নি। এমনকি এ মামলার আসামিও শনাক্ত হয়নি।

    আদালত বলেন, ‘আমরা শুধু বলব নুসরাতের ঘটনা তনু বা অন্যদের মতো যেন হারিয়ে না যায়। ঘটনার বিষয়ে তদন্ত কাজে যেন কোনো গাফিলতি না থাকে।’

    শরীরে ৮০ ভাগ পুড়ে যাওয়া নুসরাতকে চিকিৎসার জন্য সিঙ্গাপুর নিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নির্দেশ দিলেও শারীরিক অবস্থার কারণে তা সম্ভব হয়নি। নুসরাতের মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করে প্রধানমন্ত্রী এ ঘটনায় কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন।

    ফেনীর সোনাগাজী ইসলামিয়া সিনিয়র ফাজিল মাদ্রাসার ছাত্রী নুসরাত এ বছর আলিম পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছিলেন। ওই মাদ্রাসার অধ্যক্ষ এসএম সিরাজ-উদ-দৌলার বিরুদ্ধে ‘শ্লীলতাহানির’ অভিযোগ এনে গত মার্চে সোনাগাজী থানায় একটি মামলা করে নুসরাতের পরিবার।

    সেই মামলা তুলে না নেওয়ায় অধ্যক্ষের অনুসারীরা গত শনিবার পরীক্ষার কেন্দ্র থেকে কৌশলে ডেকে নিয়ে নুসরাতের গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয়। শনিবার রাতেই ঢামেক হাসপাতালের ভর্তি করা হয়। অবস্থা সংকটাপন্ন হওয়ায় সোমবার তাকে লাইফ সাপোর্টে নেওয়া হয়। গতকাল রাতে তার মৃত্যু হয়।

    বিএম/রনী/রাজীব

    আরো পড়ুন :: নুসরাতে চিঠিতে অধ্যক্ষের লালসার বর্ণনা

    মাদ্রাসায় ঝুলন্ত ছাত্রের লাশ : পরিবারের দাবি নির্যাতনের পর হত্যা