শপথ ও সময় বাড়ানোর আবেদন করিনি:ফখরুল

    একাদশ জাতীয় সংসদে দলের নির্বাচিত অন্য ৫ সংসদ সদস্য শপথ নিলেও নিজের শপথ গ্রহণের বিষয়ে স্পিকারকে কোনও চিঠি দেননি কিংবা সময় আবেদনও করেননি বলে জানিয়েছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

    মঙ্গলবার (৩০ এপ্রিল) দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবে ‘আওয়াজ’ নামের একটি মানবাধিকার সংগঠন আয়োজিত “উন্নয়নের মৃত্যুকূপে জনজীবন/নুশরাত একটি প্রতিবাদ” শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

    সাংবাদিকদের করা এ-সংক্রান্ত প্রশ্নের জবাবে ফখরুল বলেন, ‘আমার শপথ নেয়ার বিষয়ে আমি কোনও চিঠি দেইনি। স্পিকারের কাছে কোনও সময়ও চাইনি। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্য কিছু কিছু পত্রিকা লিখেছে আমি শপথের জন্য সময় চেয়েছি। একটি পত্রিকা লিখেছে আমি আজ শপথ গ্রহণ করবো। এটা সাংবাদিকতার এথিক্সের মধ্যে পড়ে না।’

    মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমরা যে শপথ নিয়েছি এর জন্য অনেকে অনেক মন্তব্য করেছেন। কিন্তু সময়ই প্রমাণ করবে শপথ নেয়াটা সঠিক সিদ্ধান্ত ছিল কিনা। আগে আমরা শপথ নেইনি তার মানে এখন নেবো না তা তো হতে পারে না। আজকে যে শপথ নিয়েছি সেটা ভয়াবহ দানবকে পরাজিত করার জন্যই নিয়েছি।’

    তিনি বলেন, ‘সবাই শপথ নিয়েছে। কিন্তু আমি শপথ নেইনি। এটা আমাদের দলের সিদ্ধান্ত। দলীয় সিদ্ধান্তের বাইরে কিছু হয় না।’

    সরকারের সঙ্গে কোনও ধরনের সমঝোতা হয়নি দাবি করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘বিএপি কখনও সমঝোতা করে না। সমঝোতা করলে অনেক আগেই খালেদা জিয়া এদেশের প্রধানমন্ত্রী থাকতেন। আমরা কোনও বিদেশির পরামর্শে কিছু করিনি। আমরা চলমান রাজনীতি দেখছি। কথা বলার ন্যূনতম যে সুযোগ এটা কাজে লাগাতে এবং দানব সরকারকে পরাজিত করতেই শপথ নিচ্ছি।’

    তিনি বলেন, ‘গতকাল থেকে রাজনীতি গরম হয়ে গেছে। এটা নিঃসন্দেহ চমকের মতো সংবাদ। রাজনীতিতে ইউটার্ন মনে করতে পারেন। আমাদের সিদ্ধান্ত অন্যরকম ছিল। ৩০ ডিসেম্বর কোনও নির্বাচন হয়নি, প্রহসন হয়েছে।’

    অপর এক প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘একটি কথা যেটা আমরা বিশ্বাস করি, রাজনীতিতে কোনও সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত থাকবে সেটি সঠিক নয়। তাই শপথের সিদ্ধান্তকে খুব খারাপ সিদ্ধান্ত বলে মনে করি না। আমাদের ন্যূনতম স্পেসটাকে কাজে লাগাতে চাই। সময়ের প্রয়োজনে অনেক কিছু হয়। সময় ঠিক করে দিবে আমাদের সিদ্ধান্ত ভুল নাকি সঠিক।’

    বিএনপি মহাসচিব আরও বলেন, ‘অত্যন্ত সুক্ষ্মভাবে একদলীয় শাসনের মধ্য দিয়ে রাষ্ট্রের প্রতিটি স্তম্ভকে দলীয়করণ করা হয়েছে। প্রশাসন, জুডিসিয়াল, গণমাধ্যম- সবখানে গভীর সংকট। এটা শুধু বিএনপি ঐক্যফ্রন্টের সংকট নয়, গোটা জাতির সংকট।’

    সরকারের উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের সমালোচনা করে তিনি বলেন, ‘আসলে এত বেশি প্রবৃদ্ধির কথা বলা হয় যেন বাংলাদেশ বড় উন্নয়নের জায়গায় চলে গেছে। আসলে এই উন্নয়নের নামে প্রহসন চলছে। উন্নয়নের দুর্নীতি চলছে, লুটপাট চলছে। ব্যাংকিং খাতকে পুরোপুরি ধ্বংস করে দেয়া হয়েছে। বাংলাদেশটা একটা ‘ডেথ ড্রাবে’ অর্থাৎ মৃত্যুকূপে পড়েছে।’

    গণতন্ত্র ও জবাবদিহিতা না থাকলে কোনও উন্নয়নই কখনও টেকসই হতে পারে না বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

    আয়োজক সংগঠনের সভাপতি ও বিএনপির ভাইস-চেয়ারম্যান বেগম সেলিমা রহমানের সভাপতিত্ব আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য দেন- নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা শাহিদা রফিক ও নির্বাহী কমিটির সভাপতি আবু নাসের মোহাম্মাদ রহমাতুল্লাহ প্রমুখ।

    বিএম/রনী/রাজীব