কিশোর গ্যাং দ্বন্দ্বে প্রাণ গেল সদ্য এসএসসি পাশ করা আদিলের

    কুমিল্লায় ক্রমেই ভয়ঙ্কর হয়ে উঠা কিশোর গ্যাং গ্রুপ ‘ঈগলের’হামলায় প্রাণ গেলো আরো শিক্ষার্থীর।
    কুমিল্লা মডার্ন হাই স্কুল থেকে এ বছরই এসএসসি পাশ করা নিহত ওই শিক্ষার্থীর নাম আজনাইন আদিল (১৭)।

    সোমবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে নগরীর মোগলটুলী এলাকার কর্ণফুলী পেপার হাউজের সামনে ছুরিকাঘাতে আহত হওয়ার পর কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মারা যায় সে।

    নিহত আদিল কুমিল্লার চান্দিনা উপজেলার মহিচাইল এলাকার আব্দুস সাত্তারের একমাত্র ছেলে। তার পরিবার কুমিল্লা মহানগরীর ঝাউতলা এলাকার রেজামঞ্জিলে ভাড়ায় বসবাস করে বলে জানা গেছে।

    বিষয়টি নিশ্চিত করে কোতয়ালী থানার ইন্সপেক্টর (তদন্ত) মো. সালাহ উদ্দিন জানান, ‘কিশোরটি মারা গেছে। তার লাশ বর্তমানে কুমেক হাসপাতালে রয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, নগরীতে বেপরোয়া হয়ে উঠা কিশোর গ্যাং গ্রুপ ‘ঈগল’ গ্রুপের কিশোররা এ হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে। তবে কি কারণে এ হত্যাকাণ্ড সংগঠিত হয়েছে তা জানা যায়নি।’

    ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী নগরীর ঝাউতলার আক্তার হোসেনের ছেলে সাইদুল ইসলাম জানান, রাত সাড়ে ৯টার দিকে তাকে আহত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখি। সেখান থেকে প্রথমে কুমিল্লা সদর হাসপাতালে ও পরে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করে।

    এর আগে গত ২১ এপ্রিল রাতে ‘তুই’সম্বোধন নিয়ে সংঘর্ষের জের ধরে সহপাঠীদের ছুরিকাঘাতে নিহত হয় মোন্তাহিম ইসলাম মিরন নামে কুমিল্লা মডার্ন স্কুলের অষ্টম শ্রেণির এক ছাত্র।

    মিরন মহানগরীর দক্ষিণ দুর্গাপুরের বিষ্ণুপুর এলাকার সিঙ্গাপুর প্রবাসী আবুল কালাম আজাদের পুত্র।

    পরে পুলিশ অভিযান চালিয়ে আটক করে হত্যায় অংশ নেয়া তিন কিশোরকে। তাদের দেওয়া জবানবন্দী থেকে বের হয়ে আসে ভয়ঙ্কর সব তথ্য। উঠে আসে নগরীর বিভিন্ন এলাকায় গড়ে উঠা অন্তত ১০টি গ্যাং গ্রুপের নাম।

    এরপর থেকেই নগরজুড়ে আলোচনায় আসে ‘ঈগল’-‘র‌্যাগ’সহ ভয়ঙ্কর হয়ে উঠা কিশোর গ্যাং গ্রুপগুলোর নাম।

    সাঁড়াশি অভিযানে নামে জেলা ও পুলিশ প্রশাসন। সে হত্যাকাণ্ডের একদিন পর একজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে কুমিল্লা কোতয়ালী মডেল থানা পুলিশ ও গোয়েন্দা পুলিশ অভিযান চালিয়ে বিভিন্ন গ্যাং গ্রুপের অন্তত ৩০ জনকে গ্রেফতার করে এবং শহরের এসবি প্লাজার তিনটি দোকান থেকে অন্তত সাত শ’ আধুনিক ছোরা ও চাপাতি উদ্ধার করে।

    আটক ৩০ জন কুমিল্লা শহরের বিভিন্ন স্কুলের ছাত্র। তাদের বেশির ভাগই ৭ম ও ৮ম শ্রেণির ছাত্র। পরে অভিভাবকদের অবহিত করে তাদের কাছ থেকে মুচলেকা নিয়ে তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়।

    বিএম/রনী/রাজীব