গ্রীল কেটে শতাধিক চুরির ঘটনার নায়ক খোকন সহযোগীসহ গ্রেফতার

    চট্টগ্রাম মেইল : খোকন, রুবেল ও তাদের অপর এক বন্ধুসহ গত ২৩ মে সন্ধ্যার সময় নগরীর কদমতলী এলাকায় রিক্সা নিয়ে ঘুরতে থাকে। এসময় তাদের চোখে পড়ে কদমতলী শুকতারা ট্রান্সপোর্টের অফিসটি বন্ধ করে সকল কর্মকর্তা কর্মচারীরা চলে যাচ্ছেন।

    দুর থেকে অফিসটি ভালভাবে পর্যবেক্ষন করে তিনজনই। পর্যবেক্ষনে টার্গেটে আসে ট্রান্সপোর্ট অফিসটির রান্নাঘরটি তুলনা মূলক দুর্বল। এরপরই মনে মনে পরিকল্পনা আর পরিকল্পনা মতেই রাতে মিশন।

    গভীররাত ১টার দিকে যন্ত্রপাতি নিয়ে হাজির সবাই। রুবেল ও তাদের অপর বন্ধু বাইরে পাহারায় আর দলনেতা খোকন সেলরেঞ্জ দিয়ে রান্না ঘরের দিকে যায়। সে জানালার গ্রীল কেটে প্রবেশ করে দ্রুত একটি টেবিলের ড্রয়ার ভেঙ্গে ফেলে। সেখান থেকে নগদ টাকা ২টি স্বর্ণের চেইন, ৩ টি মোবাইল সেট ও বেশ কয়েকটি ব্যাংকের চেকবই নিয়ে দ্রুত জানালা দিয়ে বের হয়ে যায়। অন্যরাও ঘটনাস্থল থেকে কেটে পড়েন।

    ঠিক এভাবেই গ্রেফতারের পর পুলিশের কাছে স্বীকারোক্তি দিয়েছে গ্রীল কাটা চোর চক্রের হোতা মো. খোকন। নগরীর ইপিজেড থানার নিউমুরিং ও ডবলমুরিং থানার মিস্ত্রী পাড়া এলাকা থেকে শুক্রবার রাতে অভিযান চালিয়ে দুজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

    গ্রেফতারকৃতরা হলেন, কুমিল্লা জেলার দাউদকান্দি রায়পুরা পিপিয়া বিএসসি মোবারক বাড়ির মো. রফিকের ছেলে গ্রীল কাটা চোর চক্রের সর্দ্দার মো. খোকন (২৮) এবং তার সহযোগী একই জেলার মাধাইয়া বাজার আজিজ মাঝির বাড়ির নাজমুল হোসেনের ছেলে মো. রুবেল প্রকাশ বুড়– রুবেল (৩০)। বর্তমানে দুজনই ইপিজেড ও ডবলমুরিং থানা এলাকার বাসিন্দা।

    জিজ্ঞাসাবাদে গ্রীল কাটা চোর চক্রের সদস্য মো. রুবেল জানায়, ২৩ মে শুকতার ট্রান্সপোর্টে চুরির কাজ সম্পাদন করে তিনজনই নগরীর চৌমুহনী এলাকার একটি নির্জন জায়গায় গিয়ে টাকা গুনে দেখে পাঁচ লক্ষ তেইশ হাজার পাঁচশত টাকা। এরমধ্যে খোকন তার ভাগের ১ লক্ষ ১৮ হাজার টাকা এবং ১টি স্বর্ণের চেইন ও ২টি সিম্ফুনি মডেলের মোবাইল সেট নিয়ে পতেঙ্গার দিকে চলে যায়। বাকি টাকা ও স্বর্ণ ও মোবাইল নিয়ে অন্যরা ভাগাভাগি করে নেন।

    রুবেল গত চার পাঁচ মাস আগে নগরীর মুরাদপুর আতুরার ডিপো মুনসুরাবাদ এলাকায় একই ভাবে গ্রীল কেটে একটি গার্মেন্টসে নগদ টাকা চুরির কথাও স্বীকার করেন।

    সদরঘাট থানার পরিদর্শক (তদন্ত) রুহুল আমিন জানান, গত ২৩ মে থানায় একটি চুরির অভিযোগ করেন শুকতারা ট্রান্সপোর্ট এজেন্সির এক কর্মকর্তা। অভিযোগে তিনি উল্লেখ করেন তার প্রতিষ্ঠানের রান্না ঘরের গ্রীল কেটে টেবিলের ড্রয়ার ভেঙ্গে নগদ ৫ লক্ষ ২৩ হাজার ৫শত টাকা এবং দুটি স্বর্ণের চেইন ও একটি নোকিয়া ও ২টি সিমসহ সিম্পনি সেট চুরি হয়। তাছাড়া বিভিন্ন ব্যাংকের ২০টি চেকবইও খোয়া যায়।

    অভিযোগের সূত্র ধরে সদরঘাট থানা পুলিশের একটি টিম শুক্রবার রাতে চোরচক্রের প্রধান খোকন ও তার সহযোগী রুবেলকে গ্রেফতার করে। তাদের কাছ থেকে চুরি করা নগদ ৫০ হাজার টাকা ও চুরি করা দুইটি সিম্পোনি সেট উদ্ধার করা হয়।

    তিনি জানান, আটককৃতরা গ্রীল কাটা চোর চক্রের সক্রিয় সদস্য। তারা বিগত ৭ বছর ধরে নগরীর বিভিন্ন থানা এলাকায় গ্রীল কেটে অন্তত একশ থেকে দেড় শতাধিক চুরির ঘটনা ঘটিয়েছে। এর মধ্যে গ্রীল কাটা চোর চক্রের প্রধান হোতা খোকনের বিরুদ্ধে নগরীর হালিশহর থানায় আরো একটি মামলা রয়েছে। গ্রেফতার দুজনের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে বলে জানান ওসি তদন্ত রুহুল আমিন।

    বিএম/রাজীব..