তামাকপণ্যের কর বৃদ্ধির দাবিতে অর্থমন্ত্রীকে উত্তরাঞ্চলের আট এমপির চিঠি

    রংপুর প্রতিনিধি : আসন্ন বাজেটে কার্যকরভাবে করারোপের মাধ্যমে সকল তামাকজাত পণ্যের মূল্য বৃদ্ধির দাবিতে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালকে চিঠি (ডিও লেটার) দিয়েছেন উত্তরাঞ্চলের ৮ সংসদ সদস্য। চিঠিতে সাংসদবৃন্দ প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা মোতাবেক শক্তিশালী তামাক শুল্কনীতি গ্রহণ ও বাস্তবায়নের দাবিও জানান।

    মন্ত্রীকে চিঠি দেওয়া সাংসদরা হলেন- জাতীয় সংসদের হুইপ ইকবালুর রহিম, রাজশাহী-২ আসনের সাংসদ ফজলে হোসেন বাদশা, সিরাজগঞ্জ-২ আসনের অধ্যাপক ডা. মো. হাবিবে মিল্লাত, নাটোর-৪ আসনের অধ্যাপক মো. আব্দুল কুদ্দুস, লালমনিরহাট-১ আসনের মো. মোতাহার হোসেন, রংপুর-২ আসনের আবুল কালাম মো. আহসানুল হক চৌধুরী, কুড়িগ্রাম-১ আসনের মো. আছলাম হোসেন সওদাগর এবং নীলফামারীর সংরক্ষিত আসনের (মহিলা আসন-২৩) সংসদ সদস্য রাবেয়া আলীম।

    চিঠিতে সাংসদরা উল্লেখ করেন, তামাক পণ্য ব্যবহারজনিত রোগে দেশে প্রায় ১ লাখ ২৬ হাজার মানুষের অকাল মৃত্যু হয়। বর্তমানে ৩ কোটি ৭৮ লক্ষ প্রাপ্তবয়স্ক মানুষ তামাক সেবন করেন, যার মধ্যে ১৮ শতাংশ (১ কোটি ৯২ লক্ষ) ধূমপানের মাধ্যমে তামাক ব্যবহার করেন। ২০ দশমিক ৬ শতাংশ (২ কোটি ২০ লক্ষ) ধোঁয়াবিহীন তামাক (জর্দা, গুল, খৈনী, সাদাপাতা) ব্যবহার করেন।

    এছাড়াও ধোঁয়াবিহীন তামাক ব্যবহারের হার নারীদের মধ্যে অনেক বেশি। বাংলাদেশে ১৩ থেকে ১৫ বছর বয়সের প্রায় ৭ শতাংশ কিশোর-কিশোরী তামাক পণ্য ব্যবহার করে, যা অত্যন্ত উদ্বেগজনক।
    তারা আরও উল্লেখ করেন, দেশে তামাক পণ্য খুবই সহজলভ্য। পৃথিবীর যেসব দেশে তামাকপণ্যের দাম অত্যন্ত সস্তা বাংলাদেশ তার মধ্যে অন্যতম।

    সহজলভ্য হওয়ায় তামাকজনিত মৃত্যু ও ক্ষয়-ক্ষতি বেড়েই চলছে। অথচ কার্যকরভাবে করারোপের মাধ্যমে তামাকপণ্যের দাম বাড়ালে তামাকের ব্যবহার হ্রাস পাবে এবং একইসঙ্গে সরকারের রাজস্ব আয়ও বৃদ্ধি পায়।

    তারা জনস্বাস্থ্য, পরিবেশ ও অর্থনীতির উপর তামাকের নেতিবাচক প্রভাবের কথা বিবেচনা করে প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণা ‘২০৪০ সাল নাগাদ তামাকমুক্ত বাংলাদেশ’ বাস্তবায়নে আসন্ন ২০১৯-২০ অর্থবছরের বাজেটের জন্য সুনির্দিষ্ট কিছু সুপারিশ তুলে ধরেন।

    সেগুলো হলো- সিগারেটের ক্ষেত্রে বিদ্যমান ৪টি মূল্যস্তর (৩৫ টাকা, ৪৮ টাকা, ৭৫ টাকা এবং ১০৫ টাকা) বিলুপ্ত করে ২টি মূল্যস্তর (৫০ টাকা ও ১০৫ টাকা তদূর্ধ্ব) নির্ধারণ এবং গুল জর্দার ক্ষেত্রে ট্যারিফ ভ্যালু প্রথা বাতিল করে সিগারেট ও বিড়ির ন্যায় ‘খুচরা মূল্যের’ ভিত্তিতে করারোপ করা। পাশাপাশি সকল তামাকপণ্যের প্যাকেট/কৌটা প্রতি সম্পূরক শুল্কের একটি অংশ সুনির্দিষ্ট আকারে আরোপ করা হোক, যাতে ক্ষতিকর এসব পণ্যের প্রকৃত মূল্য বৃদ্ধি পায়।

    বিএম/সোহেল রশীদ/রনী