দেশের জনগণের মালিকানা একটি গোষ্ঠী ছিনিয়ে নিয়েছে- আমির খসরু

    চট্টগ্রাম মেইল : বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, বর্তমানে দেশের মালিকানা জনগণের হাতে নেই। দেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব আজ প্রশ্নবিদ্ধ। দেশের জনগণের মালিকানা একটি গোষ্ঠী ছিনিয়ে নিয়েছে। শহীদ প্রেসিডেন্টে জিয়াউর রহমান দেশের জনগণের মালিকানা জনগণের কাছে ফিরিয়ে দিয়েছিলেন।

    তিনি আজ ৩০ মে বৃহস্পতিবার বিকালে নগরীর কিং অব চিটাগাং কমিউনিটি সেন্টারে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়ার ৩৮তম শাহাদাৎ বার্ষিকী উপলক্ষে চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির আলোচনা সভা ও ইফতার মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন।

    তিনি বলেন, দেশে এখন মেগা প্রকল্পের নামে মেগা দুর্নীতি হচ্ছে। উনন্নয়নের কথা বলে তারা দুর্নীতি করে বিদেশে টাকা পাচার করছে। বর্তমানে রাজনীতিবিদদের হাতে দেশের নিয়ন্ত্রণ নেই। রাজনীতির নিয়ন্ত্রণ এখন কিছু দুর্নীতিবাজ ও ব্যুরোক্রেটদের হাতে। দেশে আইনের শাসন, ভোটধিকার, স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব ও গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে হলে জনগণের মালিকানা জনগণের হাতে থাকতে হবে। আর এইজন্য সকলকে ঐক্যবদ্ধভাবে আন্দোলনে নামতে হবে।

    আমির খসরু বলেন, চট্টগ্রাম থেকেই সবসময় আন্দোলন সংগ্রাম শুরু হয়েছে। এবারও বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির আন্দোলন এই চট্টগ্রাম থেকে শুরু হবে। ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের মাধ্যমেই বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি নিশ্চিত করতে হবে। তিনি শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের আদর্শ বুকে ধারণ করে আগামীতে সকলকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করার উদাত্ত্ব আহ্বান জানান।

    চট্টগ্রাম মহানরগর বিএনপির সভাপতি ডা. শাহাদাত হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথি ছিলেন বিএনপির চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা বেগম রোজী কবীর, প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবের রহমান শামীম, বিশেষ মেহমান হিসেবে উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রামে নিযুক্ত ভারতীয় সহকারী হাইকমিশনার অনিন্দ্য ব্যানার্জী, জামায়াত নেতা সাবেক এমপি শাহজাহান চৌধুরী, চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আবুল হাসেম বক্কর, সিনিয়র সহ-সভাপতি আবু সুফিয়ান, চট্টগ্রাম মহানগর জামায়াত আমীর মো. শাহজাহান।

    বেগম রোজী কবীর বলেন, জিয়াউর রহমান একজন সৈনিক থেকে স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়ে যুদ্ধে সরাসরি অংশগ্রহণ শেষে ক্রান্তিকালে দেশের দায়িত্বগ্রহণ করে এদেশের সমৃদ্ধির প্রতিটি ক্ষেত্রে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছেন। জিয়াউর রহমানের সততা ও দেশপ্রেম ছিল সকল প্রশ্নের উর্ধ্বে। তার দেশপ্রেমের প্রকৃষ্ট উদাহরণই হলো ‘বাংলাদেশ’। তার সততা নিয়ে তার চরম শত্রুও কোনো প্রশ্ন তুলতে পারেনি।

    ডা. শাহাদাত হোসেন বলেন, একজন সাধারণ মেজর হয়েও ১৯৭১ সালে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কালুরঘাট বেতারকেন্দ্র থেকে মেজর জিয়া স্বাধীনতা ঘোষণা দিয়ে সশস্ত্র প্রতিরোধ গড়ে তুলে আজো দেশবাসীর হৃদয়ে অমর হয়ে আছেন। তিনি দেশনেত্রীর মুক্তির আন্দোলন ও গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনার আন্দোলনে সকলকে ঐক্যবদ্ধভাবে সংগঠিত হওয়ার আহবান জানান।

    মাহবুবের রহমান শামীম বলেন, ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ কালো রাতে হানাদার পাকবাহিনী পূর্ব পাকিস্তানের সাধারণ নিরস্ত্র ঘুমন্ত মানুষের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়লে ঢাকাসহ বিভিন্নস্থানে নিহত হয় হাজার হাজার মানুষ। হানাদারদের অতর্কিত আক্রমণে দিশেহারা হয়ে পড়ে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের জনগণ। চট্টগ্রামে অবস্থানরত তৎকালীন মেজর জিয়াউর রহমান এ রাতেই ষোলশহরে সেনাবাহিনীর ৮ম ব্যাটালিয়নের সব বাংলাভাষী অফিসার ও জওয়ানকে ডেকে একত্র করে বিদ্রোহ করে স্বাধীনতার ডাক দেন।

    আবুল হাসেম বক্কর বলেন, এখন আমরা আর বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি চাইব না, বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্ত করে আনবোই। দেশনেত্রীর মুক্তির মাধ্যমে দেশে গণতন্ত্র, জনগণের ভোটধিকার ও আইনের শাসন ফিরিয়ে আনা হবে।

    আবু সুফিয়ান বলেন, জনগণের আন্দোলনের মাধ্যমে বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্ত করা হবে। এ আন্দোলনে সকলকে এগিয়ে আসতে হবে। বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি ছাড়া দেশে গণতন্ত্র ফিরে আসবে না।

    চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক ইয়াছিন চৌধুরী লিটন ও সাংগঠনিক সম্পাদক কামরুল ইসলামের পরিচালনায় ইফতার মাহফিলে উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির প্রতিষ্ঠিাতা সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গির আলম, মহানগর জামাতের এসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারী অধ্যক্ষ নুরুল আমিন, সাংগঠনিক সম্পাদক মোহাম্মদ উল্লাহ, ফয়সাল মুহাম্মদ ইউনুস, এলডিপির দক্ষিণ জেলা সভাপতি এড. কফিল উদ্দিন চৌধুরী, চট্টগ্রাম মহানগর কল্যাণ পার্টির সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ ইলিয়াস, জাগপা সভাডপতি আবু মোজাফ্ফর মো. আনাস, নগর ন্যাপ সভাপতি ওসমান গণি সিকদার, এনপিপি সভাপতি আনোয়ার সাদেক, বিজেপির সভাপতি ফিরোজ কবীর লিটন, নগর মুসলিম লীগের সভাপতি নাজমুল হক সেলিম, লেবার পার্টির সাধারণ সম্পাদক মুজিবুর রহমান, জাগপার সাধারণ সম্পাদক হেলাল উদ্দিন, চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির সহসভাপতি, যুগ্মসম্পাদক, সম্পাদকবৃন্দ, থানা, ওয়ার্ড ও অঙ্গসংগঠনের সকল পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

    বিএম/রাজীব..