বাংলাদেশে আইএসের আমির আবু মুহাম্মদ আল-বাঙালি,হামলার হুমকি

    মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক সন্ত্রাসী সংগঠন আইআএস বাংলাদেশে তাদের নতুন আমিরের নাম ঘোষণা করেছে। আবু মুহাম্মদ আল-বাঙাল নামের আমিরের নাম ঘোষণার সাথে সাথে বাংলাদেশ ও ভারতে হামলার হুমকি দিয়েছে সন্ত্রাসী সংগঠনটি। ভারতের প্রভাবশালী গণমাধ্যম টাইমস অব ইন্ডিয়া এ খবর প্রকাশ করেছে।

    মঙ্গলবার (৩০ এপ্রিল) বাংলা, ইংরেজি ও হিন্দি ভাষায় আইএস একটি বার্তা (পোস্টার) প্রকাশ করেছে। সেখানে বলা হয়েছে, ‘যদি তোমরা মনে করো বাংলায় ও হিন্দে খিলাফতের সেনাদের স্তব্ধ করে দেবে তাহলে এটা সুনিশ্চিতভাবে জেনে রাখো যে, আমাদের লোকেরা কখনো নীরব হবে না। তাদের প্রতিশোধ নেয়ার তৃষ্ণা কখনো মুছে যাবে না’।

    ঢাকার গুলিস্তানে একটি সিনেমা হলের পাশে ককটেল হামলার এক দিন পর এ বার্তা প্রকাশ করেছে আইএস। সোমবার সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে গুলিস্তানে ওই বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। এতে তিন পুলিশ সদস্য আহত হয়।

    ককটেল হামলার পর মঙ্গলবার আইএসের পক্ষ থেকে আরবি ভাষায় একটি বিবৃতি প্রকাশ করে। আইএসের মুখপাত্র আমাক-এ প্রকাশিত বিবৃতে হামলার দায় স্বীকার করা হয়।

    টাইমস অব ইন্ডিয়ার খবরে বলা হয়েছে, আইএস এর ‘শিঘ্রই আসছি, ইনশাল্লাহ’ শীর্ষক পোস্টার প্রকাশের পরতদন্ত শুরু করেছে বিভিন্ন সংস্থা। ওই পোস্টারে আল মুরসালাত গ্রুপের একটি লোগো ব্যবহার করা হয়েছে। অন্যদিকে মঙ্গলবার যে হুমকি দেয়া হয়েছে তা ওই একই গ্রুপ দিয়েছে।

    পরিস্থিতির দিকে কড়া নজর রাখছেন বাংলাদেশের গোয়েন্দারাও। মঙ্গলবারই ঢাকার পুলিশ প্রধান আসাদুজ্জামান মিয়া সাংবাদিকদের বলেন, ‘গুলিস্তানে যে বিস্ফোরক ব্যবহার করা হয়েছে তা একেবারেই আলাদা। এর আগে সাধারণত দেশি বোমা ব্যবহার করত জঙ্গিরা। এই বিস্ফোরণের প্রকৃতি খুঁটিয়ে দেখছেন কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইমের গোয়েন্দারা।’

    বাংলাদেশের বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত খবর অনুযায়ী, গত বছরে প্রথম সামনে আসে আবু মহম্মদ আল বাঙালির নাম। নরসিংদিতে একটি সন্ত্রাসদমন অভিযান চালানোর সময় তার নাম জানতে পারেন বাংলাদেশি গোয়েন্দারা। তার হাতেই বাংলাদেশ ও ভারতে বিভিন্ন সন্ত্রাসের নকশা তৈরির দায়িত্ব দেওয়া হচ্ছে, সেই ইঙ্গিতও দিয়েছে আইএস।

    কলম্বো বিস্ফোরণের পর আইএস-এর এই হুমকিকে হালকা ভাবে নিচ্ছে না কেউই। তৌহিত জামাত নামের একটি ছোট সংগঠনের মাধ্যমেই কলম্বোয় ভয়াবহ ধারাবাহিক বিস্ফোরণ ঘটাতে সফল হয়েছিল তারা।

    আনন্দবাজার বলছে, ‘বাংলাদেশে ইতিমধ্যেই আইএস-এর অস্তিত্বের প্রমাণ পাওয়া গিয়েছে। পশ্চিমবঙ্গের কলকাতা এবং বিভিন্ন জায়গায় জঙ্গিদের আনাগোনার প্রমাণ আছে গোয়েন্দাদের হাতে।

    ঢাকার হোলি আর্টিজান বিস্ফোরণের চক্রীরাও যে এ রাজ্যের বিভিন্ন ডেরায় আস্তানা গেড়েছিল, তা কিছুদিন আগেই ভারতকে জানিয়েছিল বাংলাদেশ। তাই বাংলাদেশের সঙ্গে এই দেশের পশ্চিমবঙ্গও যে জঙ্গিদের লক্ষ্য হয়ে উঠছে, এমনটাই মনে করছেন দুই দেশের গোয়েন্দারা। সদ্য প্রকাশিত পোস্টার সেই আশঙ্কাকেই আরও স্পষ্ট করেছে।’

    বিএম/রনী/রাজীব