বাসচাপায় শিক্ষার্থীর মৃত্যু, পুড়িয়ে দিল বাস

    কক্সবাজার প্রতিনিধি : কক্সবাজার-চট্টগ্রাম মহাসড়কের ঈদগাঁওর কলেজ গেইট এলাকায় হানিফ পরিবহনের একটি বাসের চাপায় মোটরসাইকেল আরোহী সদ্য এসএসসি উত্তীর্ণ ইমরান (১৭) নামে এক শিক্ষার্থীর মৃত্যু হয়েছে। আহত হয়েছেন আরও তিন শিক্ষার্থী। এ ঘটনায় বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা ওই বাসে আগুন দেয়। এতে দুই ঘণ্টা ওই সড়কে যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকে।

    মঙ্গলবার সকাল ১০টার দিকে ঈদগাঁওর কলেজ গেইট জামে মসজিদের সামনে এ ভয়াবহ দুর্ঘটনাটি ঘটে। ইমরান কক্সবাজার সদর উপজেলার ঈদগাঁওর কালিরছরা উত্তরপাড়ার প্রবাসী আবু তাহেরের ছেলে ও ঈদগাহ কেজি স্কুল হতে এবার এসএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়।

    এ ঘটনায় আহত আরো তিনজনকে চকরিয়ার মালুমঘাট খ্রিস্টান হসপিটালে নেয়া হয়। সেখান থেকে এক শিক্ষার্থীকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার করা হয়েছে। আহতদের অবস্থাও আশংকাজনক। তারা সকলে ঈদগাঁহ কেজি স্কুলের শিক্ষার্থী। আহতরা হলেন, কক্সবাজার সদর উপজেলার ঈদগাঁওর কালিরছরার নুরুল আলমের ছেলে শামীমুর রহমান (১৭), শামশুল আলমের ছেলে শামীমুল আলম রাহুল (১৭) ও নুরুল আলমের ছেলে জয়নাল আবেদীন (১৭)। তারা সবাই ঈদগাহ কেজি স্কুলের বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী। তাদের মাঝে শামীমকে আশংকাজনক অবস্থায় চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার করা হয়েছে।

    প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে এক মোটরসাইকেলে চার শিক্ষার্থী মিষ্টি কিনতে ঈদগাঁও বাস স্টেশনে যায়। মিষ্টি নিয়ে ১০টার দিকে বাসায় ফেরার পথে কলেজ গেইট এলে চট্টগ্রামমুখী হানিফ পরিবহণের (চট্টমেট্টো-ব-১১-০২৪৩) বাসটি রং সাইডে এসে মোটর সাইকেলকে চাপা দেয়। এতে আরোহীসহ মোটর সাইকেলটি বাসের নিচে ঢুকে যায়। মোটরসাইকেল ও আরোহীসহ গাড়িটি সামনে বেশ কিছুদুর চলে আসে। এতে ক্ষতবিক্ষত আরোহীদের মাঝে ইমরান ঘটনাস্থলে মারা যায়।

    স্থানীয়রা দ্রুত এসে বাসের নিচ থেকে মোটরসাকেল আরোহীদের বের করে ঈদগাঁও হাসপাতালে নিয়ে যান। প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে সবাইকে চকরিয়ার মালুমঘাট হাসপাতালে নেয়া হয়। সেখানে অবস্থান অবনতি হলে শামীমকে চমেক হাসপাতালে পাঠানো হয়। বাসটি সড়কের একপাশে রেখে চালক হেলপার পালিয়ে যায়।

    এদিকে শিক্ষার্থী নিহতের খবর ছড়িয়ে পড়ায় বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা ঘটনাস্থলে এসে বাসটিতে আগুন ধরিয়ে দেয়। আগুনের লেলিহান শিখা ছড়িয়ে পড়ায় ভয়ে উভয়পাশে আটকা পড়ে যানবাহন। শিক্ষার্থীরা বাসস্টেশন এলাকায় টায়ার ও অন্যদ্রব্য দিয়ে আগুন দেয়। এতে প্রায় দুই ঘণ্টা যান চলাচল বন্ধ থাকে। এর রেশ দক্ষিণে প্রায় রামু উত্তরে ইসলামপুর পর্যন্ত পড়ে।

    ঈদগাঁও ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) কালিরছরা এলাকার মেম্বার (সদস্য) মাহমুদুল হাসান মিনার জানান, শুনেছি ইমরান গতকাল (৬ মে) প্রকাশ হওয়া ফলাফলে উত্তীর্ণ হয়েছে। স্বজনদের জন্য মিষ্টি কিনতে গিয়েছিল পাড়ার শিক্ষার্থী বন্ধুদের নিয়ে। সেখানেই দুর্ঘটনায় পড়েছে তারা।

    খবর পেয়ে ঈদগাঁও পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের পুলিশ ও রামু দমকল বাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে এসে আগুন নিয়ন্ত্রণে এনে যান চলাচল স্বাভাবিক করে।

    ঈদগাহ আদর্শ শিক্ষা নিকেতন (কেজি স্কুল)’র প্রধান শিক্ষক এ কে এম আলমগীর জানান, খবর পেয়েছি আমাদের কিছু শিক্ষার্থী মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনায় পড়েছে। একজন মারা গেছে আর অপর তিনজন আহতাবস্থায় চিকিৎসাধীন রয়েছে। এদের অবস্থাও আশংকাজনক।

    ঈদগাঁও পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ (ভারপ্রাপ্ত) এসআই সনজিদ জানান, দুর্ঘটনায় এক শিক্ষার্থী মারা গেছেন। আগুনে পোড়া ঘাতক বাস ও মোটরসাইকেলটি জব্দ করে রামু ক্রসিং হাইওয়ে পুলিশকে জিম্মায় দেয়া হয়েছে।

    বিএম/ইসলাম/রাজীব..