সাবেক স্বামীকে সাত টুকরো করে হত্যা, স্ত্রীসহ চারজনের মৃত্যুদণ্ড

    স্বামীকে হত্যার পর কেটে সাত টুকরো করার দায়ে নিহতের স্ত্রীসহ চারজনকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত।

    বৃহস্পতিবার (২৩ মে) ঢাকার এক নম্বর দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের বিচারক আবু জাফর মো. কামরুজ্জামান এই আদেশ দেন।

    দণ্ডিতরা হলেন, নিহত মনির হোসেনের তালাকপ্রাপ্তা স্ত্রী স্বর্ণা আক্তার কাকলী ওরফে নীপা (২৭), নীপার স্বামী মো. শরিফ মাতুব্বর ওরফে শরীফ (৩২), শরীফের বন্ধু আনোয়ার হোসেন মোল্লা ওরফে গ্রাম সরকার (৩৮) এবং মো. ইব্রাহিম খলিল (২৭)।

    ২০১৩ সালের ১৮ এপ্রিল কামরাঙ্গীরচর থানাধীন মুন্সিহাট নদীর পাড় থেকে মনির হোসেনের সাত টুকরো লাশ উদ্ধার করে। ঘটনায় পরদিন নিহতের স্ত্রী হাসিনা বেগম একটি হত্যা মামলা করেন। পরে পুলিশ মামলার আসামি আনোয়ার, নীপা ও শরীফকে গ্রেপ্তার করলে তারা আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন।

    স্বীকারোক্তিতে নীপা জানায়, ২০০৯ সালে বান্ধবী রিতার মাধ্যমে মনিরের সঙ্গে তার পরিচয় হয়। পরে মনিরকে বিয়ে করেন। বিয়ের পর জানতে পারেন মনিরের আরও এক স্ত্রী ও সন্তান আছে। বিয়ের পর থেকে মনির নীপার উপর অত্যাচার ও নির্যাতন করার কারণে সে মনিরকে তালাক দিয়ে শরীফকে বিয়ে করেন।

    কিন্তু তালাকের পরও মনির নীপাকে বিরক্ত করায় ২০১৩ সালের ১৭ এপ্রিল মনিরকে হুজুরপাড়া রোডের ভাড়া বাসায় ডেকে আনেন নীপা। এরপর আসামি ইব্রাহিম মনিরকে বেঁধে ফেলে। পরে আনোয়ার বালিশ চাপা দেয় এবং নীপা মুখ চেপে ধরে আর শরীফ গলায় ছুরি চালিয়ে দেহ থেকে মাথা আলাদা করে ফেলে। পরে মনিরের লাশ আরও ছয় টুকরো করে কামরাঙ্গীরচর থানাধীন মুন্সিহাট নদীর পাড়ে লাশ ফেলে রাখে।

    মামলাটি তদন্তের পর ২০১৪ সালের ১৪ মে পুলিশ আদালতে চারজনের বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল করেন। মামলায় একই বছর ১৯ অক্টোবর একই আদালত আসামিদের বিরুদ্ধে চার্জগঠন করে বিচার শুরু করেন।

    পরে মামলাটির বিচারকালে আদালত চার্জশিটের ৩৯ জন সাক্ষীর মধ্যে ২৩ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ করেন। দীর্ঘ শুনানি পর আদালত বৃহস্পতিবার এই রায় ঘোষণা করেন।

    ট্রাইব্যুনালের বিশেষ পাবলিক প্রসিকিউটর আবু আব্দুল্লাহ ভূঞা বলেন, দন্ডিত আসামিদের মধ্যে শরীফ ও ইব্রাহিম পলাতক। রায় ঘোষণার সময় নীপা ও আনোয়ার উপস্থিত ছিলেন। রায়ের পর তাদের কারাগারে পাঠানো হয়।