ফেনীর সোনাগাজীর মাদ্রাসাছাত্রী নুসরাত জাহান রাফিকে পুড়িয়ে হত্যার মামলা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে পাঠানো হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (৩০ মে) দুপুরে ফেনীর জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম জাকির হোসেনের আদালত ২১ আসামির উপস্থিতিতে মামলাটি স্থানান্তরের আদেশ দেন। ফলে মামলার অভিযোগপত্র গ্রহণসহ অন্যান্য কাজ এখন থেকে ট্রাইব্যুনালেই চলবে।
মামলার বাদীপক্ষের আইনজীবী শাহজাহান সাজু বলেন, মামলাটি একজন নারীকে পুড়িয়ে হত্যার জন্য। মামলার তদন্তকারী সংস্থা পিবিআই যে অভিযোগপত্র দিয়েছে, সেই অভিযোগপত্র গ্রহণ বা শুনানির এখতিয়ার ম্যাজিস্ট্রেট (হাকিম) কোর্টের নেই। ফলে অভিযোগপত্র জমা দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই সেটি নারী ও শিশু নির্যাতন দমন বিশেষ ট্রাইব্যুনালে পাঠানো হয়েছে।
এর আগে সকাল সাড়ে ৯টা থেকে ১০টার মধ্যে ঘটনায় মাদ্রাসা অধ্যক্ষ এস এম সিরাজ উদ দৌলা ও স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা রুহুল আমিনসহ সব আসামিকে আদালতে হাজির করেন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। তাঁরা তখন আদালতে হট্টগোল তৈরির চেষ্টা করেন।
গতকাল বুধবার দুপুরে ফেনীর জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিমের আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা শাহ আলম এই অভিযোগপত্র জমা দেন। তিনি জানান, অভিযোগপত্রে অভিযুক্তদের সর্বোচ্চ শাস্তি চাওয়া হয়েছে।
অভিযুক্ত ১৬ আসামি হলো, মাদ্রাসা অধ্যক্ষ এসএম সিরাজ উদ দৌলা (৫৭), নুর উদ্দিন (২০), শাহাদাত হোসেন শামীম (২০), মাকসুদ আলম ওরফে মোকসুদ আলম কাউন্সিলর (৫০), সাইফুর রহমান মোহাম্মদ জোবায়ের (২১), জাবেদ হোসেন ওরফে সাখাওয়াত হোসেন জাবেদ (১৯), হাফেজ আব্দুল কাদের (২৫), আবছার উদ্দিন (৩৩), কামরুন নাহার মনি (১৯), উম্মে সুলতানা ওরফে পপি ওরফে তুহিন ওরফে শম্পা ওরফে চম্পা (১৯), আব্দুর রহিম শরীফ (২০), ইফতেখার উদ্দিন রানা (২২), ইমরান হোসেন ওরফে মামুন (২২), মোহাম্মদ শামীম (২০), রুহুল আমিন (৫৫) ও মহিউদ্দিন শাকিল (২০)।
গত ৬ এপ্রিল সকাল ৯টার দিকে আলিম পর্যায়ের আরবি প্রথমপত্রের পরীক্ষা দিতে সোনাগাজী ইসলামিয়া ফাজিল মাদ্রাসা কেন্দ্রে যান নুসরাত।
এ সময় তাকে কৌশলে ছাদে ডেকে নিয়ে যায় দুর্বৃত্তরা। সেখানে তার গায়ে কেরোসিন ঢেলে দিয়ে আগুন দেওয়া হয়। গুরুতর দগ্ধ নুসরাত পাঁচ দিন মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই করে হার মানেন। ১০ এপ্রিল রাত সাড়ে ৯টায় ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে মারা যান তিনি।