তিস্তা চুক্তি ইস্যুতে স্বপ্ন দেখছেন রংপুর অঞ্চলের মানুষ

    রংপুর প্রতিনিধি : সম্প্রতি অনুষ্ঠিত ভারতের লোকসভা নির্বাচনে বিজেপির নেতৃত্বাধীন এনডিএ জোট নিরষ্কুশ জয়লাভ করেছে।

    আর টানা দ্বিতীয়বারের মতো নরেন্দ্র মোদি ভারতের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে ক্ষমতায় আসায় আনন্দিত বাংলাদেশের রংপুর অঞ্চলের তিস্তা পাড়ের মানুষ। তারা তিস্তা চুক্তি ইস্যুতে এবার মোদির দিকে চেয়ে আছে।

    গত কয়েক দশকে তিস্তা চুক্তি ইস্যুতে বাংলাদেশ-ভারত যত দ্বি-পক্ষীয় বৈঠক হয়েছে, ততই তিস্তার উপর নির্ভরশীল রংপুর অঞ্চলের পাঁচ জেলার কোটি মানুষ আশায় বুক বেঁধেছেন।

    কিন্তু ভারতের পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জির সম্মতি না থাকায় থমকে গেছে বহুল কাক্সিক্ষত তিস্তা চুক্তি। বছরের পর বছর ঝুলে থাকা তিস্তা চুক্তির পালে লাগেনি প্রত্যাশা পূরণের হাওয়া।

    তবে এবারের নির্বাচনে মমতা ব্যানার্জির তৃণমূল কংগ্রেসের ভরাডুবি আর নরেন্দ্র মোদির নিরষ্কুশ জয়ে ফের তিস্তার পানি পেতে স্বপ্ন দেখছেন রংপুর অঞ্চলের বাসিন্দারা। তারা মনে করছেন, এবার হয়তো মিলবে তিস্তার অমূল্য পানি। যা দিয়ে বাঁচবে এ অঞ্চলের জীবন-জীবিকা।

    আন্দোলনকারীরা মনে করছেন, তিস্তা চুক্তি নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের আন্তরিকতা থাকলেও তাতে সম্মতি নেই পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জির। তাই কেন্দ্রীয় সরকার ও প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে পূর্ব প্রতিশ্রুতির বাস্তবায়নের বিষয়ে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে হবে। মোদি চাইলেই ধু-ধু বালুচরে মরুভূমির আদলে হারিয়ে যাওয়া তিস্তায় ফিরবে পানি, জেগে উঠবে বাংলাদেশের উত্তরের রংপুর অঞ্চলের লাখো মানুষের প্রাণ।

    এ ব্যাপারে তিস্তা বাঁচাও আন্দোলনের সংগঠক নন্দিনী দাস বলেন, সম্প্রতি ভারতে লোকসভা নির্বাচনে মোদির দল বিজেপি নিরষ্কুশ জয়লাভ করে ক্ষমতায় এসেছে। যেহেতু নতুন করে তারা আবারো ক্ষমতায় এসেছে। এখন দুই দেশের সরকার একটা ন্যায্যতা ও সমতার ভিত্তিতে এমন একটা চুক্তি বাস্তবায়ন করবে, যাতে তিস্তার পানিতে দুই দেশেরই স্বার্থ রক্ষিত হয়।

    অন্যদিকে রিভারাইন পিপলের পরিচালক ও বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক ড. তুহিন ওয়াদুদ বলেন, ‘যদি বাংলাদেশ সরকারের কূটনৈতিক তৎপরতা বৃদ্ধি করা হয় এবং উচ্চ পর্যায়ে দুই দেশের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কটাকে কাজে লাগানো যায়। তাহলে তিস্তার পানি ন্যায্য হিস্যার ভিত্তিতে পাওয়া সম্ভব। এজন্য অবশ্যই কেন্দ্রীয় সরকার ও নরেন্দ্র মোদির সাথে বাংলাদেশের সম্পর্কটাকে আরও সুদৃঢ করতে হবে।’

    তিস্তা বাঁচাও-নদী বাঁচাও সংগ্রাম পরিষদের আহ্বায়ক ও রংপুর জেলা ওয়াকার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক অধ্যক্ষ নজরুল ইসলাম হক্কানী বলেন, তিস্তা চুক্তি পশ্চিমবঙ্গের সরকারের সাথে নয়, এ চুক্তি হবে ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে। তাই কেন্দ্রীয় সরকার প্রধান নরেন্দ্র মোদির ভূমিকাই এখানে মুখ্য। তার নতুন বিজয়ে তিস্তাপাড়ের মানুষ ভীষণ আশাবাদী। তারা মোদিও দিকে চেয়ে রয়েছে।
    সম্প্রতি অনুষ্ঠিত ভারতের লোকসভা নির্বাচনে বিজেপি নেতৃত্বাধীন জোট এনডিএ নিরষ্কুশ জয় লাভ করে। আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে টানা দ্বিতীয়বারের মতো প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব নিতে যাচ্ছেন জোটের প্রধান দল বিজেপি’র নরেন্দ্র মোদি।

    বিএম/সোহেল রশীদ/রনী