সংবাদ সম্মেলনে আহলে সুন্নাত
    মুনিরিয়া’র চিহ্নিত উগ্রবাদি জঙ্গি-সন্ত্রাসীদের গ্রেপ্তার দাবি

    ????????????????????????????????????

    চট্টগ্রাম মেইল : রাউজান কাগতিয়ার জঙ্গি সংগঠন মুনিরিয়া যুব তবলীগ কমিটি নিষিদ্ধ করার দাবী জানিয়েছে আহলে সুন্নাত ওয়াল জমা’আত সমন্বয় কমিটি। এছাড়া আহলে সুন্নাত সদস্য সচিব অ্যডভোকেট মোছাহেব উদ্দিন বখতিয়ার এর বিরুদ্ধে করা মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার এবং রাউজানের ত্রাস পীর নামধারী সন্ত্রাসী ভ- মুনিরুল্লাহসহ মুনিরিয়া তবলীগের চিহ্নিত উগ্রবাদি জঙ্গি-সন্ত্রাসীদের গ্রেপ্তারের দাবিও জানায় সংগঠনের নেতৃবৃন্দরা।

    বৃহস্পতিবার দুপুরে চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের এস.রহমান হলে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলন এসব দাবী জানানো হয়।

    লিখিত বক্তব্যে আহলে সুন্নাত সমন্বয় কমিটি কেন্দ্রীয় সদস্য আল্লামা নূর মোহাম্মদ আল-কাদেরী বলেন, বাংলাদেশে ইসলামের শান্তির বাণী প্রচার-প্রসার করেছেন মহান আউলিয়া কেরাম ও হক্বানী পীর-মাশায়েখ। দেশে সূফিবাদী পীর-আউলিয়ারা গড়েছেন অহিংস ইসলামী মতাদর্শ ভিত্তিক সম্প্রীতির সমাজব্যবস্থা। এ অহিংস ইসলামধর্মকে কলঙ্কিত করছে একশ্রেণির উগ্রবাদি ভন্ডপীর।

    এরমধ্যে অন্যতম রাউজানের কাগতিয়ার পীর নামধারী এক সন্ত্রাসী প্রতারক মুনিরুল্লাহ। যার ক্যাডারবাহিনীর অত্যাচারে ক্ষুদ্ধ হয়ে সর্বস্তরের জনতা আজ গণআন্দোলনে নেমেছে। মুনিরিয়া যুব তবলীগের মত সন্ত্রাসী-জঙ্গী গোষ্ঠীর কারণে সূফীবাদ ও ত্বরিকত কলংকিত হচ্ছে। তারা রাউজানকে জিম্মি করে দীর্ঘদিন যাবত মানুষের জমি জবর দখল থেকে শুরু করে তাদের ভন্ডামির বিপক্ষদের খুন-জখম-অপহরণসহ এমন কোন সন্ত্রাসী কর্মকা- বাকি নাই, যা তারা করে নাই।

    তাদের ত্বরিকতের নামে ভন্ডামির প্রতিবাদ করায় দুই দশক আগে প্রবীণ আলেম অধ্যক্ষ মুফতি মফজল আহমদ নঈমীকে কুপিয়ে মারাত্মক জখম করেছিল তারা। তাদের গাউসুল আজম দাবির বিপক্ষে বক্তব্য রাখায় এক দশক আগে ছিপাতলী কামিল মাদ্রাসার প্রধান মুফাস্সির আল্লামা শফিউল আলম নিজামীর পায়ের রগ কেটে দিয়েছিল। আর এই ঘটনার গণপ্রতিবাদ সভা থেকে ফেরার পথে রাউজান উত্তর সর্তার গ্রামের কিশোর ছাত্রসেনা কর্মী নঈমুদ্দিনকে পিটিয়ে হত্যা করেছিল।

    এমন কোন সপ্তাহ মাস ছিলনা যখন মুনিরিয়া যুব তবলিগের রাউজান ১নং অফিসে ধরে নিয়ে গিয়ে সর্বসাধারণকে আহত করা হয়নি। অথচ, কয়েক’শ ঘটনায় জড়িত এসব সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে বিচারের বাণী নিরবে নিভৃতে কেঁদেছে-তাদের কিছুই হয়নি। বরং মামলার বাদী-সাক্ষীরাই পূনরায় জুলুমের শিকার হয়েছে। ফলে সন্ত্রাসীদের সাহস আরো বেড়ে যায় এবং এরা আরো বেপরোয়া হামলার মত ঘটনায় জড়িত হতে থাকে একের পর এক।

    গত বছরের ১৬ নভেম্বর গহিরা মোবারকখিলের মাহফিলে ৫০/৬০ জন সন্ত্রাসীদের মোটর সাইকেল বহর নিয়ে মিলাদ মাহফিলে অস্ত্র প্রদর্শন করে জোরপূর্বক প্রবেশ করে এবং মাহফিলের প্রধান বক্তা এডভোকেট মোছাহেব উদ্দিন বখতিয়ারের উপর বক্তব্যরত অবস্থায় সশস্ত্রভাবে ঝাঁপিয়ে পড়ে। এ সময় তিনিসহ মাহফিলের বেশ কয়েকজন আলেম ও কর্মি আহত হয়। এ ঘটনার বিচার চেয়ে করা রাউজান থানার মামলা নং ১৮(৪)২০১৯ এ কয়েকজন আসামি গ্রেপ্তার হলেও সব ঘটনার মূল ইন্ধন ও নির্দেশদাতা মুনিরুল্লাহ সহ অধিকাংশই এখনো ধরা ছোঁয়ার বাইরে রয়ে গেছে, ফলে ভুক্তভোগি রাউজানবাসী সহ চট্টগ্রামের নিরীহ জনতার নিকট কাগতিয়া সন্ত্রাসভীতি এখনো দূর হয়নি, বিধায় এখনো অনেকে তাদের বিরুদ্ধে মামলা করার সাহস পাচ্ছেনা।

    সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, জামাত-শিবিরের ক্যাডারদের সাথে নিয়ে খুন, গুম, অপহরণ, রগকাটা, জবর-দখলসহ নানা অপকর্ম করে রাউজানকে জিম্মি করে রেখেছিল এতদিন।  জঙ্গী সংশ্লিষ্টতার অভিযোগে সম্প্রতি আশুলিয়া থেকে গ্রেপ্তারকৃত জঙ্গী সূফিয়ান খাঁন ইরফান মুনিরিয়া তবলীগের ২৫ নং শাখার সক্রিয় কর্মি হিসেবে চিহ্নিত হয়। ফলে এখন মানুষ প্রশাসনের নিরপেক্ষতার আশ্বাস পেয়ে যখন তাদের বিরুদ্ধে মাঠে নেমেছে এবং ভুক্তভোগীরা মামলা করতে এগিয়ে আসছে, তখন তারা পাল্টা মিথ্যা মামলা দায়ের করে মামলার বাদী, সাক্ষী এবং আন্দোলনকারীদের দমানোর কৌশল নিয়েছে।

    এডভোকেট মোছাহেব উদ্দিন বখতিয়ারকে প্রধান এবং রাউজানের আহলে সুন্নাতনেতা অধ্যক্ষ মৌলানা ইলিয়াস নূরীকে ২নং আসামি করে তাদের রাউজান মোহাম্মদপুরস্থ অফিস লুট ও চুরির মত হাস্যকর মিথ্যা অভিযোগ করে। মামলাটি বর্তমানে সহকারী পুলিশ সুপার (পিবিআই) চট্টগ্রাম এর তদন্তাধীন। গত ১৫ মে আদালতে আরেকটি মিথ্যা মামলা দায়ের করলেও মামলার সত্যতা না পেয়ে আদালত তা খারিজ করে দেন।

    এই জঙ্গী সংগঠন নিষিদ্ধসহ ভন্ড পীর মুনির ও তার সন্ত্রাসীদের গ্রেপ্তারের দাবি জানাচ্ছি। একই সাথে ৭১’র রাজাকার ক্যাম্প খ্যাত কাগতিয়া মাদ্রাসাটি এই জঙ্গীদের হাত থেকে উদ্ধার করে স্থানীয় প্রশাসনের নিয়ন্ত্রণে আনার, কিংবা বীর মুক্তিযোদ্ধাদের দাবি মেনে এই কাগতিয়া মাদ্রাসাকে মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতিসৌধ নির্মাণের দাবি জানাচ্ছি। একই সাথে তাদের কোটি কোটি টাকার উৎস সন্ধানের গণদাবিকে আহলে সুন্নাত সমন্বয় কমিটি সমর্থন করছে।

    সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন, আহলে সুন্নাত ওয়াল জমা’আত সমন্বয় কমিটির প্রধান সমন্বয়ক মাওলানা এম.এ মতিন, সদস্য সচিব এডভোকেট মোছাহেব উদ্দীন বকতেয়ার, জামেয়া আহমদিয়া সুন্নীয়া আলীয়ার মুহাদ্দিস আল্লামা আশরাফুজ্জামান আলকাদেরী, এডভোকেট জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী, প্রফেসর সৈয়্যদ জালাল উদ্দিন আল-আজহারী, মাওলানা রেজাউল করিম তালুকদার, ইঞ্জিনিয়ার নূর হোসাইন, চট্টগ্রাম জেলা পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা কাজী এম এ ওয়াহাব, এরশাদ খতিবী, এস.এম লোকমান হাকিম, ফজলুল করিম তালুকদার, মাওলানা গিয়াসুদ্দীন নিজামী, নাছির উদ্দিন মাহমুদ, মাষ্টার আবুল হোসাইন, মাওলানা সোহাইল আনসারী, মাওলানা মোখতার আহমদ রজভী, মাওলানা আবুল কাশেম তাহেরী, জিম.এম শাহাদত হোসাইন মানিক, এডভোকেট আবদুল গফুর, মাওলানা ফজল আহমদ, আবদুল করিম সেলিম, মুহাম্মদ ফরিদুল ইসলাম, মুহাম্মদ আবুল হোসাইন, মুহাম্মদ শফিউল আলম, নুরুল হাসান শিহাব, ইয়াসিন আরাফাত, এখরামুল হক ছিদ্দিকী, এইচ এম মনিরুদ্দীন, শামসুর রহমান, আবদুর রহিম রকি, আবু জাফর, জিএম মামুন, গোলাম তাহের, জাবের হাসান, নুরুল কবীর, মুহাম্মদ ইফসুফ, আবদুল মালেক প্রমুখ।

    বিএম/এন এম রানা/রাজীব..