প্রতারকচক্রের সদস্য গ্রেফতার
    সিম প্রতারণা : এক জনের আঙ্গুলের ছাপে রেজিস্ট্রেশন, অন্যজনের কাছে বিক্রি

    চট্টগ্রাম মেইল : চট্টগ্রাম শহরের গুরুত্বপূর্ণ প্রায় সড়কের মোড়ে মোড়েই এখন গড়ে উঠেছে ভ্রাম্যমান মোবাইল সিমের দোকান। গ্রাহকদের আকর্ষণ করতে ফ্রি অপারের নানা অপারের ডালি সাজিয়ে ফুটপাতের উপর একটি টেবিল ও একটি ডিভাইস নিয়ে ছাতার তলে বসেই চলছে সিম বিকিকিনি উৎসব।

    তবে অভিযোগ রয়েছে, এসব ভ্রাম্যমান সিম বিক্রির দোকানগুলোতে অধিকাংশ সিমই বিক্রি হয় যেনতেনভাবেই। বিক্রেতারা সাধারণ ক্রেতাদের আঙ্গুলের একটি ছাপ গ্রহণ করে হাতে ধরিয়ে দিচ্ছে সিম কার্ডটি।

    সঠিক নাম ঠিকানা বা ফরমে উল্লেখিত যাবতীয় তথ্যাদির প্রয়োজন হয়না এসব সিম কিনতে। ফলে এসব অবৈধ সিম ব্যবহার করে হুমকি,চাঁদাবাজি ও ভিওআইপি ব্যবসাসহ নানান অনৈতিক কর্মকান্ড ও অপরাধে জড়িয়ে পড়ছে অপরাধীরা।

    সুত্রে জানা গেছে, এসব ভ্রাম্যমান সিম বিক্রেতাদের সংঘবদ্ধ একটি চক্র রয়েছে। চক্রের কয়েকজন সদস্য শহরের বিভিন্ন পয়েন্টে অবস্থান করে সাধারণ নিম্নবিত্ত মানুষদের লোভনীয় অপারের ফাঁদে ফেলে। বিশেষত চক্রটির টার্গেট থাকে রিক্সা চালক, ভ্যান চালক, দিনমজুর, গার্মেন্টসকর্মী ও সাধারণ খেটে খাওয়া মানুষগুলো।

    এসব মানুষদের নাম মাত্র মূল্যে সিম দেওয়ার কথা বলে তাদের কাছ থেকে আঙুলের ছাপ ও জাতীয় সনদপত্রের তথ্যগুলো সংগ্রহ করে নেন চক্রটি। নেওয়ার পরে খুব শীঘ্রই তাদের ঠিকানায় মোবাইল সিমটি পৌছে যাবে বলে সেখান থেকে কেটে পড়েন।পরবর্তীতে গরীব নিম্নবর্তী মানুষদের আঙুলের ছাপে সিমটি সংগ্রহ করে তা বাজারে বেশিদামে বিক্রি করাটাই হলো এ চক্রের মূল লক্ষ্য।

    ঠিক এরকমই এক প্রতারককে গ্রেফতার করেছে চট্টগ্রাম রেলওয়ে পুলিশ। বিভিন্ন তথ্যের আলোকে গত সোমবার রাতে নগরীর বটতলী রেলওয়ে স্টেশনে অভিযান চালিয়ে এ প্রতারককে গ্রেফতার করা হয়।

    গ্রেফতার প্রতারকের নাম মুক্তার আহমেদ মুন্না (২৭)। সে কক্সবাজার রামু থানার সিরাজুল হকের ছেলে। চট্টগ্রামের পোর্ট সিটি ইউনিভার্সিটিতে পড়ালেখা করার সময় মোবাইল সিম প্রতিষ্ঠান রবির হয়ে বেশ কিছুদিন কাজ করেছেন বলে গ্রেফতারের পর পুলিশের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে মুন্না স্বীকার করেছে।

    চট্টগ্রাম রেলওয়ের পুলিশের ওসি মোস্তাফিজ ভূঁইয়া জানান, বিভিন্ন জনের কাছ থেকে অভিযোগ পেয়ে প্রতারক মুন্নাকে গ্রেফতার করা হয়।

    তিনি বলেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতার মুন্না জানিয়েছে সে দীর্ঘদিন ধরে সাধারণ নিম্ন আয়ের গরীব মানুষদেরকে লোভনীয় অপারের ফাঁদে ফেলতো। তাদেরকে কম দামে সিম দেওয়ার কথা বলে আঙ্গুলের ছাপ সংগ্রহসহ তাদের যাবতীয় তথ্য সংগ্রহ করে তাদের নামেই সিমটি রেজিস্ট্রেশন করতো এবং তা বাজারে বেশি দামে বিক্রি করতো।

    ওসি’র সন্দেহ এ প্রতারকের সাথে অপরাধীদের যোগসাজশ আছে। তাই তাকে মঙ্গরবার আদালতে তুলে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য বিচারকের কাছে ৭ দিনের রিমান্ড চাইবে বললেন ওসি মোস্তাফিজ ভূঁইয়া।

    বিএম/রাজীব সেন..