সৌদি আরবে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত শাহ আলমের লাশ নিয়ে অনিশ্চয়তায় স্বজনরা

    সৌদি আরবে সড়ক দুর্ঘটনায় এক বাংলাদেশির মৃত্যু হয়েছে। গত ২৪ জুলাই, বুধবার সকালে তার মৃত্যু হয়।

    নিহত বাংলাদেশির নাম শাহ আলম (৪২)। নিহতের বাড়ি ফেনীর ফাজিলপুর।

    নিহতের ভাই শহিদ জানিয়েছেন, গত ২৪ জুলাই সকালে শাহ আলমের ব্যবহৃত প্রাইভেটকারটি দ্রুতগামী সড়কে দুর্ঘটনার শিকার হয় এবং ঘটনাস্থলেই তিনি মারা যান। বর্তমানে নিহতের লাশ সেখানকার একটি হাসপাতালের হিমাগারে রাখা আছে।

    দুর্ঘটনা কবলিত নিহত শাহ আলম’র প্রাইভেট কার

    তিনি আরো বলেন, নিহত শাহ আলমের কফিলের অসহযোগীতার কারণে লাশ কবে দেশ আসবে এ নিয়ে তারা দু:শ্চিন্তায় আছেন। তাদের একবার বলা হচ্ছে ঈদের আগে লাশ দেশে পাঠাবে আবার বলছে ঈদের পরে পাঠাবে।

    নিহত শাহ আলম গত দুই বছর আগে সৌদি আরবে যান। তার দুই মেয়ে বয়স যথাক্রমে ১০ এবং ৪ তারা বাবার জন্য অনবরত কান্না করছে। কোন সান্তনাতে তাদের থামানো যাচ্ছেনা।

    নিহতের লাশ দ্রুত যেন দেশে আসে সে জন্য সরকারের সহযোগিতা চেয়েছেন পরিবারের সদস্যরা।

    উল্লেখ্য, স্বজনরা লাশ দেশে আনতে মন্ত্রণালয়ের কোন সহযোগিতা পায় না। ফলে বেশীরভাগ সময় ওই লাশ আর দেশে আসে না। বিদেশে কাজ করতে গিয়ে কর্মীরা বিভিন্ন দুর্ঘটনার শিকার হন হরহামেশায়ই। মধ্যপ্রাচ্য, আফ্রিকা, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার মালয়েশিয়াসহ বিভিন্ন দেশে কাজ করছেন। সম্প্রতি সৌদি আরব ও মালয়েশিয়ায় সড়ক দুর্ঘটনায় বেশ কয়েকজন বাংলাদেশী কর্মী নিহত হন। যারা মারা গেছেন, প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের নিজ উদ্যোগে তাদের লাশ দেশে আনার কথা। কিন্তু লাশের স্বজনরা দিনের পর দিন মন্ত্রণালয়ে ঘুরেও তেমন কোন সহযোগিতা পাননি।

    এ বিষয়ে ইতিপূর্বে মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা জানান, লাশ আনা নিয়ে নানা বিষয় রয়েছে। এখানে অনেক আইনী জটিলতা আছে। বৈধ কর্মী হলে মন্ত্রণালয় থেকে লাশ আনা বাবদ তাৎক্ষণিকভাবে ৩০ হাজার টাকা দেয়া হয়। লাশ দেশে আনার পর পরিবারের পক্ষ থেকে যথাযথভাবে আবেদন করলে আরও ৩ লাখ টাকা ক্ষতি পূরণ দেয়া হয় পরিবারকে।

    শ্রম ও অভিবাসন বিশেষজ্ঞ হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ বলেন, বিদেশে মৃত কর্মীদের দুই জায়গা থেকে ক্ষতিপূরণ পাবার কথা। প্রথমত বিদেশে কর্মরত প্রতিষ্ঠান থেকে আর বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে। কিন্তু দুর্ভাগ্য বেশিরভাগ কর্মীই এই সুযোগ থেকে বঞ্চিত হন। কারণ আইনের নানা প্যাঁচে ক্ষতিপূরণের টাকা বেশির ভাগ পরিবার পান না।

    আমরা দাবি তুলেছি, বিদেশে কোন কর্মী দুর্ঘটনায় মারা গেলে তাদের পরিবারকে সরকার ঘোষিত ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। আবার যে সব কর্মী বিদেশ যাবেন তাদের নামে বাধ্যতামূলকভাবে ইন্স্যুরেন্স করতে হবে। যাতে পরিবারগুলো সরকারের কাছ থেকেও ক্ষতিপূরণের টাকা পান আবার ইন্স্যুরেন্স কোম্পানিগুলোর কাছ থেকেও ক্ষতিপূরণ পান। এটা হলে নিহত কর্মীর পরিবার একটা কিছু করে খেতে পারবেন। কারণ এমনও পরিবার আছে যার একমাত্র কর্মক্ষম ব্যক্তিরই মৃত্যু হয়েছে। ওই পরিবার যাতে ভালভাবে চলতে পারে তার জন্য আমরা যে দাবি তুলেছি তা বাস্তবায়ন করা জরুরী।

    বিএম/এমআর