সেবা সংস্থাসমূহকে আরো দায়িত্ববান হওয়ার আহবান জানিয়েছেন সুজন

    সেবা সংস্থাসমূহকে আরো দায়িত্ববান হওয়ার মাধ্যমে সরকারের উন্নয়নের সুফল জনগনের দোরগোড়ায় পৌঁছে দেওয়ার আহবান জানিয়েছেন জনদুর্ভোগ লাঘবে জনতার ঐক্য চাই শীর্ষক নাগরিক উদ্যোগের প্রধান উপদেষ্টা ও চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি খোরশেদ আলম সুজন।

    তিনি গতকাল ৩ জুলাই বুধবার সন্ধ্যায় নাগরিক উদ্যোগের আহবায়ক প্রফেসর ফজলুল হকের বাসভবনে নাগরিক উদ্যোগের এক সভায় উপরোক্ত মত প্রকাশ করেন।

    এ সময় জনাব সুজন বলেন, সেবা সংস্থাসমূহকে আরো দায়িত্ববান হতে হবে। প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে বর্তমান সরকার চট্টগ্রামের বিভিন্ন সেবা সংস্থাসমূহকে উন্নয়ন কর্মকান্ডের জন্য হাজার হাজার কোটি টাকা বরাদ্ধ প্রদান করেছে। এসব বরাদ্ধের সঠিক এবং কার্যকর ব্যবহার জনদূর্ভোগ দূর করতে সক্ষম হবে আর এসব উন্নয়ন প্রকল্পের কাজ শেষ হলে জনগন কাংখিত সুফল পাবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।

    উপস্থিত নেতৃবৃন্দ

    তবে বর্তমানে হঠাৎ করেই বিদ্যুৎ পরিস্থিতির কিছুটা অবনতি হওয়ায় এসব সমস্যা দ্রুত চিহ্নিত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করার জন্য তিনি বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের প্রধান প্রকৌশলীর নিকট আহবান জানান। এছাড়া নগরীর বেশ কিছু এলাকায় এখনো প্রিপেইড মিটার স্থাপন করা হয়নাই। ফলে ঐসব এলাকার গ্রাহকদের বিদ্যুৎ বিল নিয়ে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। তিনি এ ব্যাপারেও বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের প্রধান প্রকৌশলীর দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। তিনি বলেন, চট্টগ্রাম ওয়াসা প্রতিষ্ঠিত হয়েছে নগরবাসীর ঘরে ঘরে সুপেয় পানি পৌঁছে দেওয়ার জন্য। কিন্তু ওয়াসা নগরবাসীর সে চাহিদা পূরণে ব্যর্থ হয়েছে। এখনো নগরীর কিছু কিছু গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় ওয়াসার সংযোগ লাইন নেই। আবার দেখা যাচ্ছে যে সংযোগ লাইন থাকলেও দীর্ঘদিন ধরে পানির সরবরাহ নেই। এতে করে সরকারের উন্নয়নের সুফল প্রাপ্তি থেকে জনগন বঞ্চিত হচ্ছে। আবার কোন প্রকার ঘোষনা ছাড়াই কেটে ফেলা হচ্ছে নগরীর সড়কসমূহ। সিটি কর্পোরেশন নতুন রাস্তা নির্মান করে যাওয়ার পর ওয়াসা কেটে রাস্তাগুলোকে ক্ষতবিক্ষত করে ফেলছে। ফলে জনদূর্ভোগ বাড়ছে।

    তিনি এসব দূর্ভোগ লাঘবে ওয়াসার এমডি’র দৃষ্টি আকর্ষন করেন। উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নে রাস্তা কাটার কোন বিকল্প নেই। তবে একটি রাস্তা কেটে সে কাজটি পুরো শেষ না হওয়ার আগে অন্য রাস্তা না কাটার জন্য ওয়াসার এমডি’র নিকট আহবান জানান তিনি। নগরীর গ্যাস সংকট নিরসন, গ্যাসের চাপ বৃদ্ধি এবং গ্রাহকদের মাঝে নতুন গ্যাস সংযোগ লাইন প্রদানের জন্য কর্ণফুলী গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানী লিমিটেড (কেজিডিসিএল) এর ব্যবস্থাপনা পরিচালকের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেন তিনি।

    তিনি বলেন, এলএনজি আমদানি করার পর নগরীর গ্যাস সংকট নিরসন হওয়ার কথা থাকলেও এখনো পর্যন্ত নগরবাসী কাংখিত গ্যাস সরবরাহ থেকে বঞ্চিত। বছরের পর বছর বিল পরিশোধ করে গেলেও নগরীর অনেক এলাকায় চাহিদার অর্ধেক পরিমান গ্যাসও পাওয়া যায় না। ফলতঃ গৃহিনীদের গ্যাসের পাশাপাশি লাকড়ি চুলা এবং কেরোসিনের চুলার উপর নির্ভর করে থাকতে হয়। এতে করে একদিকে ভোগান্তি বাড়ছে অন্যদিকে অর্থের অপচয় হচ্ছে। তাই নগরবাসীকে গ্যাসের ভোগান্তি থেকে মুক্ত করতে ত্বড়িৎ ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য কেজিডিসিএল এর ব্যবস্থাপনা পরিচালকের প্রতি আহবান জানান তিনি।

    গ্যাসের নতুন মূল্য বৃদ্ধি পূর্ণবিবেচনা করার জন্যও সরকারের উচ্চ মহলের নিকট বিনীত আহবান জানান সুজন। এছাড়া নগরীর জলাবদ্ধতা নিরসনে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন এবং চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষকে গা ঝাড়া দিয়ে ত্বড়িৎ ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য চসিক মেয়র এবং চউক চেয়ারম্যানের প্রতি অনুরোধ জানান তিনি।

    বর্ষা মৌসুমে নগরবাসী যেন ভোগান্তিতে না পড়ে সেদিকে দৃষ্টি রেখে নগরীর নালা নর্দমাগুলো দ্রুত পরিস্কার করে পানি চলাচলের উপযোগী করার আহবান জানান তিনি।

    নাগরিক উদ্যোগের আহবায়ক প্রফেসর ফজলুল হকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় এ সময় অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন হাজী মোঃ ইলিয়াছ, আব্দুর রহমান মিয়া, মোঃ নিজাম উদ্দিন, সংগঠনের সদস্য সচিব হাজী মোঃ হোসেন, সাইদুর রহমান চৌধুরী, মোরশেদ আলম, মোঃ শাহজাহান, সমীর মহাজন লিটন, স্বরূপ দত্ত রাজু, জসীম উদ্দিন তালুকদার, মোঃ হোসেন, মীর মোহাম্মদ সাইফুর রহমান, মোঃ মহসিন প্রমূখ।

    বিএম/এমআর