নিজ সন্তানসহ ইমামের কক্ষ থেকে ৩ শিশুর মরদেহ উদ্ধার

    নিহত তিন মাদ্রাসাছাত্র

    চাঁদপুরের মতলবে এক মসজিদের ইমামের কক্ষ থেকে তিন শিশুর মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।

    শুক্রবার (৩০ আগস্ট) উপজেলার দক্ষিণের পূর্ব কলাদীর জামে মসজিদের কক্ষ থেকে দুপুর আড়াইটার দিকে এ মরদেহগুলো উদ্ধার হয়।

    মৃতদের সবাই মাদ্রাসাছাত্র। এদের মধ্যে একজন ওই মজসিদের ইমাম জামাল উদ্দিনের ছেলে আব্দুল্লাহ আল নোমান (৮)। বাকি দুজন হলো- মতলবের উত্তর নুলুয়া গ্রামের জসিম উদ্দিনের ছেলে রিফাত হোসেন (১৫) এবং নাটশাল গ্রামের কামাল পাটোয়ারির ছেলে ইব্রাহিম (১২)।

    ঘটনা শুনে আহাজারি

    পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, জুমার নামাজের পর মিলাদ শেষে মসজিদের ইমাম জামাল উদ্দিন তার কক্ষের সামনে যান। সেখানে গিয়ে রুম ভেতর থেকে বন্ধ পান। পরে ডাকাডাকি করে ভিতর থেকে কোনো সারা না পেয়ে রুমের জানালা দিয়ে দেখেন তার ছেলেসহ আরও দুই ছেলে খাটের ওপর পড়ে আছে।

    জানালা দিয়ে তাদের ডাকাডাকি করা হলেও কোনো সাড়া পাওয়া যাচ্ছিল না। একপর্যায়ে রুমের দরজা ভেঙে তিনজনকে উদ্ধার করে মতলব দক্ষিণ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসক দুইজনকে মৃত ঘোষণা করেন। কিছুক্ষণ পর আরও একজন মারা যায়।

    স্থানীয় অনেকে বলছেন, পানি মনে করে ব্যাটারির এসিড পান করেই তিন শিশুর মৃত্যু হতে পারে। আবার অনেকে বলছেন, কোনো খাবারের বিষক্রিয়ায় এমনটা ঘটতে পারে।

    তারা তিনজনই জুমার নামাজ পড়তে মসজিদে এসেছিলো বলে জানা যায়।

    মসজিদের ইমাম জামাল উদ্দিন বলেন, ‘জুমার নামাজের আগে বেলা পৌনে ১টার দিকে আমি বয়ান ও খুদবার জন্য মীমবরের দিকে যাই। নামাজ পড়ানো শেষে সমজিদে মিলাদ পড়িয়ে নিজের রুমে ফিরে আসি। ওই সময় আমার রুমের দরজা ভেতর থেকে আটকানো দেখে অনেক ধাক্কা-ধাক্কি করি। পরে মুসল্লিদের সহায়তায় দরজা ভেঙে দেখি আমার ছেলেসহ অপর দুই শিশু-কিশোর অচেতন হয়ে বিছানায় পড়ে আছে।’

    এ ব্যাপারে মতলব উপজেলা স্বাস্থ্য পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. একেএম মাহাবুর রহমান বলেন, ‘মৃত তিন শিশুর মুখ থেকে শুধু ফেনা বের হচ্ছিল। ফুড পয়জিনিং বা অন্য কোন কারণে তাদের মৃত্যু হয়েছে কিনা এ ব্যাপারে এখনি বলতে পারছি না।’

    মতলব দক্ষিণ থানার ওসি স্বপন আইচ জানান, মরদেহের শরীরে কোনো ধরণের আঘাত বা ক্ষতচিহ্ন দেখা যায়নি। ময়নাতদন্তের পর মৃত্যুর কারণ জানা যাবে।

    চাঁদপুরের পুলিশ সুপার জিহাদুল করিম পিপিএম বলেন, ‘এখনো কোনো কারণ খুঁজে পাওয়া যায়নি। ফুড পয়জনিং বা অন্য কোনো কারণে মৃত্যু হতে পারে। তদন্ত কার্যক্রম চলছে। মরদেহ ময়নাতদন্তের পর কারণ জানা যেতে পারে। যেহেতু ভেতর থেকে দরজা আটকানো ছিল, তাই কাউকে দোষারপ করা যাচ্ছে না।’

    তিনি আরও বলেন, ‘রুমের ভেতরে গ্যাস জাতীয় বিষাক্ত কিছুর গন্ধ পাওয়া যাচ্ছিল। এ বিষয়ে তদন্ত করে ঘটনার রহস্য উদঘাটন করা হবে।’

    বিএম/এমআর