কিছু এনজিও রোহিঙ্গাদের ফেরত না যাওয়ার উস্কানি দিচ্ছে : তথ্যমন্ত্রী

    কক্সবাজারের রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলোতে বিভিন্ন কর্মসূচি পরিচালনারত কয়েকটি বেসরকারি সংস্থা (এনজিও) রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে ফেরত না যাওয়ার উস্কানি দিচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।

    তিনি বলেছেন, ‘দেশি-বিদেশি কিছু এনজিও ও তাদের কর্মকর্তারা রোহিঙ্গারা যাতে তাদের দেশে ফেরত না যায়, সেজন্য উস্কানি দিচ্ছেন এবং প্ররোচিত করছেন। কারণ রোহিঙ্গারা এখানে থাকলে তাদের ফান্ড আসে। সেই ফান্ড পেয়ে এনজিওগুলো হৃষ্টপুষ্ট হয়।’

    শুক্রবার (২৩ আগস্ট) রাত ৮টায় চট্টগ্রাম নগরীর আন্দরকিল্লাস্থ জেএমসেন হলে শ্রী কৃষ্ণের জন্মাষ্টমী উপলক্ষে আয়োজিত ধর্ম মহাসম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্য শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।

    হাছান মাহমুদ বলেন, ‘২২ আগস্ট রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন স্থগিত ঘোষণার কিছু আগে এনজিওদের একটি অ্যালায়েন্স বিবৃতি দিয়েছে, মিয়ানমারে নাকি সেই পরিবেশ নেই। তারা এক্ষেত্রে আগেও রোহিঙ্গাদের প্ররোচনা দিয়েছে, এখনও দিচ্ছে। রোহিঙ্গাদের মধ্যে আস্থার সংকট আছে, এটা সঠিক। কিন্তু আমরা দেখতে পাচ্ছি রোহিঙ্গাদের অনেকে উস্কানি দিচ্ছেন, যাতে তারা ফেরত না যান।’

    সরকার এসব উস্কানিদাতাদের চিহ্নিত করার কাজ শুরু করেছে। তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

    তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা মানবিক কারণে রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়েছিলেন। ১১ লাখ রোহিঙ্গা তখন বাংলাদেশে আসলেও এখন তা বেড়ে ১২ লাখ ছাড়িয়ে গেছে। সেখানকার পরিবেশ মারাত্মকভাবে ধ্বংস হয়েছে। উখিয়া টেকনাফের স্থানীয় জনগণ এখন সংখ্যালঘু।’

    ‘স্থানীয়রা প্রথমে রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেওয়ার ক্ষেত্রে নানাভাবে সহায়তা করেছিল। কিন্তু এখন রোহিঙ্গারা নানা অপরাধের সাথে যুক্ত হয়েছে। ইয়াবাসহ নানা ধরণের পাচারের সাথে যুক্ত হয়েছে। সেখানকার সামাজিক পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে। এজন্য স্থানীয় বাসিন্দারাও নানাভাবে বিরক্ত।’

    চীন ও ভারতকে ধন্যবাদ জানিয়ে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘তারা রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের ক্ষেত্রে সহায়তা করছে। তাদের সহায়তা ও উদ্যোগে বাংলাদেশ সরকারের নিরন্তর প্রচেষ্টার কারণেই কিন্তু রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনের দিনক্ষণ ঠিক করা হয়েছিল। কিছু এনজিও তাদের উস্কানি দিচ্ছে, যাতে তারা ফিরে না যায়।’

    সহসাই আবার রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন শুরু হবে- এমন আশাবাদ ব্যক্ত করে ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ‘রোহিঙ্গারা যাতে ফিরে যায়, সরকারের পক্ষ থেকে কুটনৈতিক তৎপরতা সহ নানা উদ্যোগ চলমান আছে। একই সাথে যারা উস্কানি দিচ্ছেন তাদের চিহ্নিত করতে সরকার কাজ করছে।’

    জন্মাষ্টমী উপলক্ষে আয়োজিত ধর্ম মহাসম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।

    এ সময় তিনি বলেন, সকল ধর্মের মর্মবাণী হচ্ছে মানুষের মধ্যে ভ্রাতৃত্ববোধ সৃষ্টি করা। বাংলাদেশ রচিত হয়েছিল মুসলিম হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান সবার রক্তের স্রোতের বিনিময়ে। এ দেশে কোনো সাম্প্রদায়িক শক্তি মাথা তুলে দাঁড়াতে পারবে না।

    জাতীয় জন্মাষ্টমী উদযাপন পরিষদের সহ-সভাপতি বাবুন ঘোষ বাবুলের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন রাউজান পৌরসভার মেয়র শ্রী দেবাশীষ পালিত, জন্মাষ্টমী পরিষদের সাবেক সাধারণ সম্পাদক অ্যাড. চন্দন তালুকদার প্রমুখ।

    বিএম/এমআর