ট্যানারি মালিকরা কাঁচা চামড়া রফতানির আদেশ প্রত্যাহার চান

    কাঁচা চামড়া রফতানির আদেশ প্রত্যাহার করার আহ্বান জানিয়েছে বাংলাদেশ ট্যানার্স অ্যাসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান শাহীন আহমেদ।

    বুধবার (১৪ আগস্ট) বেলা ১১টায় ধানমন্ডিতে সংগঠনের কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।

    চামড়া রফতানিতে এই শিল্প হুমকির মুখে পড়বে জানিয়ে তিনি বলেন, আমরা জেনেছি বাণিজ্য মন্ত্রণালয় কাঁচা চামড়া রফতানির সুযোগ দিতে যাচ্ছে, এতে শততভাগ দেশীও এই শিল্প হুমকির মুখে পড়বে। চামড়া শিল্পনগরীতে সাত হাজার কোটি টাকার বিনিয়োগ ঝুঁকির সম্মুখীন হবে। সাভারের আধুনিক চামড়া শিল্পনগরী প্রয়োজনীয় কাঁচা চামড়ার অভাবে সম্পূর্ণ অকেজো হয়ে পড়বে।

    তিনি বলেন, সাধারণত ট্যানারি মালিকরা কোরবানির এক সপ্তাহ পর দেশের বিভিন্ন হাট থেকে সরকার নির্ধারিত মূল্যে চামড়া কিনে থাকে। চামড়া সংরক্ষণে (পরিবহন, লবণ ও শ্রমিক) প্রতি বর্গফুটে ১০ টাকার বেশি খরচ হয়। বাজার ব্যবস্থাপনায় সরকার কর্তৃক নির্ধারিত মূল্যের কাঁচা চামড়া ক্রয় করা হচ্ছে না। এটা দুই একটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা। মৌসুমি ব্যবসায়ীদের প্রতি অনুরোধ তারা যেন লবণ দিয়ে চামড়া সংরক্ষণ করেন।

    তিনি আরও বলেন, সরকারের বেধে দেয়া দামে আমরা চামড়া ক্রয় করব। চামড়া কোনো ট্যানারি মালিক সরাসরি কেনা শুরু করেনি। কেনা শুরু করলে কিন্তু বাজার স্থিতিশীল থাকবে। আমরা লবণযুক্ত চামড়া ক্রয় করি, তাই আমাদের কোন সিন্ডিকেটের সুযোগ নেই। যারা চামড়া কিনেছেন তাদের উচিত ছিল লবণ দিয়ে সংরক্ষণ করা। তাহলে এই সমস্যা হতো না।

    বকেয়া পরিশোধের বিষয়ে তিনি বলেন, ২০১৭ সালে বন্ধ হওয়া ট্যানারির অধিকাংশ উৎপাদনে যেতে পারে নি। এ বছর অনেকে ১০০ ভাগ বকেয়া পরিশোধ করেছে, কেউ কেউ দিতে পারেনি, কারণ তাদের উৎপাদন বন্ধ করে দিতে হয়েছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে আমাদের ৬০০ কোটি টাকা দিয়েছে বলা হলেও দেয়া হয়েছে ১৫০ কোটি টাকা। সেগুলো আড়তদারদের দেয়া হয়েছে, তারা মৌসুমি ব্যবসায়ীদের টাকা না দিলে আমাদের কি করার আছে।

    ২০ আগস্ট থেকে ট্যানারি মালিকরা চামড়া কেনা শুরু করবে জানিয়ে তিনি বলেন, ২০ আগস্ট থেকে আমরা ট্যানারি মালিকরা চামড়া কেনা শুরু করব। ট্যানারি মালিকরা কম মূল্য দেবে না, সরকারি মূল্যে তারা ক্রয় করবে। আমরা চাই যাতে কাঁচা চামড়া রফতানির সিদ্ধান্ত বাতিল করা হয়।

    শাহিন আহমেদ বলেন, মধ্যসত্ত্বভোগীদের দৌরাত্ম্যের জন্য মৌসুমি ব্যবসায়ীরা মূল্য পায়নি। চামড়ায় লবণ দিয়ে রাখলে মধ্যসত্ত্বভোগীরা সুযোগ নিতে পারবে না। ট্যানারির প্রতিনিধিরা কেনাকাটা শুরু করলে সমস্যা থাকবে না।

    যেহেতু গতবারের ৫০ ভাগ চামড়া অবিক্রিত রয়ে গেছে তাহলে রফতানিতে আপত্তি কেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, এটা হলে দেশীয় শিল্প নষ্ট হবে। গতবারেটা চামড়ার গুনগত মান ভালো না। এবারের চামড়া সেই তুলনায় ভালো। ফলে সব চামড়া মিলিয়ে সমন্বয় করতে হবে। তবে চামড়া রফতানির আদেশ দিলে বিষয়টি কঠিন হয়ে যাবে।

    চামড়া রফতানি করলে আড়তদাররা লাভবান হবে জানিয়ে তিনি বলেন, রফতানির সিদ্ধান্তে আড়তদাররা লাভবান হবে। এমন সিদ্ধান্ত নিতে হলে একমাস বা দুই মাস আগে নেয়ার দরকার ছিল। আর বকেয়া টাকার দোহাই দিয়ে কেউ কেউ ফায়দা লোটার চেষ্টা করছে। তারা কিন্তু কম মূল্য চামড়া সংগ্রহ করছে। মধ্যসত্ত্বভোগীরা বাজার প্রভাবিত করছে।

    বিএম/এমআর