নেশা জাতীয় দ্রব্য খাইয়ে গৃহবধূকে ধর্ষণের অভিযোগে পুলিশ সদস্য আটক

    নেশা জাতীয় দ্রব্য মিশ্রিত কোক পান করিয়ে নারায়ণগঞ্জে এক গৃহবধূকে ধর্ষণ ও অশ্লীল ছবি ধারণ করে অর্থ হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগে সাব্বির আহম্মেদ মেহেদী (২৭) নামের এক পুলিশ কনস্টেবলকে আটক করেছে নারায়ণগঞ্জ জেলা গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ।

    আটক সাব্বির আহম্মেদ মেহেদি ঢাকায় নৌ-পুলিশে কর্মরত আছেন বলে ডিবি পুলিশ নিশ্চিত করেছে।

    মেহেদির বিরুদ্ধে ধর্ষণ ও প্রতারণার অভিযোগে দায়েরকৃত সুনির্দিষ্ট মামলায় সোমবার (২৬ আগস্ট) বিকেলে সদর উপজেলার সিদ্ধিরগঞ্জ থানার সানাপাড় এলাকা থেকে জেলা গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ তাকে আটক করে।

    আটক সাব্বির আহম্মেদ মেহেদী চাঁদপুর জেলার হাজীগঞ্জ থানার মালিগাঁও গ্রামের মো. আনোয়ার হোসেনের ছেলে। নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জের সানারপাড় এলাকার পদ্মকুড়ি স্কুল সংলগ্ন মিজানুর রহমানের বাড়িতে তিনি ভাড়াটে হিসেবে বসবাস করেন বলে ডিবি পুলিশ সূত্রে জানা গেছে।

    এর আগে এদিন বিকেলে ধর্ষণ ও প্রতারণার শিকার গৃহবধূ বাদি হয়ে তার বিরুদ্ধে সদর মডেল থানায় মামলা দায়ের করেন। গত ৭ আগস্ট শহরের উত্তর চাষাড়া এলাকায় এই ধর্ষণের ঘটনা ঘটে বলে মামলার এজাহারে তিনি উল্লেখ করেন।

    নারায়ণগঞ্জ সদর মডেল থানা পুলিশের অফিসার-ইন-চার্জ (ওসি) মো. আসাদুজ্জামান মামলা দায়েরের বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, একজন নারী ধর্ষণের অভিযোগ এনে সাব্বির আহম্মেদ মেহেদি নামে এক ব্যক্তিকে আসামি করে মামলা দায়ের করেছেন।

    তিনি জানান, ডিবি পুলিশ মামলাটি তদন্ত করছে। তার ব্যাপারে ডিবি পুলিশ বলতে পারবে।

    মামলার এজাহারে ভুক্তভোগি ওই নারী জানান, তার সন্তান ঢাকার মতিঝিল আইডিয়াল স্কুলে লেখাপড়া করছে। ছেলেকে স্কুলে আনা নেওয়ার সময় সাব্বির আহম্মেদ মেহেদীর সাথে তার পরিচয় হয়। পরে ফোনে কথাবার্তাও হয়।

    এক পর্যায়ে চলতি মাসের ৭ আগস্ট সাব্বির তাকে ফোন করে দেখা করতে বলেন। তিনি চাষাড়ায় আছেন জানালে সাব্বির তার সাথে দেখা করে। পরে তাকে উত্তর চাষাড়ায় এক আত্মীয়ের বাড়িতে নিয়ে যায়। এ সময় মেহেদির হাতে একটি কোমল পানীয়ের বোতল ছিল।

    ওই নারীর দাবি, কোমল পানীয়ের ওই বোতলের মধ্যে আগের থেকেই নেশাজাতীয় দ্রব্য মিশিয়ে নিয়ে আসা হয়েছিলো। যা পান করানোর পর তিনি অচেতন হয়ে যান এবং এ অবস্থায় মেহেদি তাকে ধর্ষণ করে নগ্ন দৃশ্য ধারণ করে।

    পরে এসব অশ্লীল দৃশ্য ফেসবুকে ছড়িয়ে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে মেহেদি তার কাছ থেকে তিন লাখ টাকা দাবি করেন। এর মধ্যে একবার ২ লাখ টাকা এবং পরেরবার ত্রিশ হাজার টাকা তিনি মেহেদিকে দেন। এতেও মেহেদি সন্তুষ্ট না হয়ে আরো টাকা দাবি করলে তিনি মামলা করে আইনের আশ্রয় নিতে বাধ্য হন।

    এদিকে মামলা দায়েরের পর নারায়ণগঞ্জ জেলা গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ অভিযুক্ত সাব্বির আহম্মেদ মেহেদীকে সিদ্ধিরগঞ্জের সানারপাড় থেকে আটক করেছেন বলে ডিবি পুলিশ সূত্রে জানা যায়।

    এ ব্যাপারে জেলা গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের পরিদর্শক এনামুল হক সাব্বিরকে আটকের বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, আটক সাব্বির আহম্মেদ মেহেদি নৌ-পুলিশের একজন সদস্য। তিনি ঢাকায় কর্মরত আছেন।

    ডিবি পুলিশের পরিদর্শক এনামুল হক আরো জানান, তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। তার বিরুদ্ধে দায়েরকৃত মামলার অভিযোগের বিষয়গুলো খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

    বিএম/এমআর