ব্যস্ততা বেড়েছে লোহার কামারদের

    তাড়াশ (সিরাজগঞ্জ) প্রতিনিধি : কোরবানির ঈদ সামনে রেখে সিরাজগঞ্জের তাড়াশে শেষ মুহুর্তে ব্যস্ততা বেড়েছে কামারদের। কামার পাড়ায় রাতদিন ঠুংঠাং শব্দে মুখরিত হয়ে পড়েছে। তাদের কাজের ব্যস্ততা দেখে বোঝা যাচ্ছে ইধ এসে গিছে। তারা দা, বঁটি, ছুরি, চাকু এবং চাপাতিসহ কোরবানির কাজে ব্যবহৃত শাণিত যন্ত্র তৈরি করে বিক্রী করছেন।

    ঈদ যত ঘনিয়ে আসছে ব্যস্ততা ততই বাড়ছে। আগে ৫শ টাকা আয় হলেও বর্তমানে প্রতিদিন ২ হাজার টাকা পর্যন্ত আয় হচ্ছে। ঈদের আগের দিন পর্যন্ত এমন ব্যস্ততা থাকবে বলে জানান স্থানীয় কামাররা। কামারের পাশাপাশি হার্ডওয়্যারের দোকানে, ফুটপাত, ভ্যানেও এখন বেশি দেখা যাচ্ছে বিভিন্ন ধারালো অস্ত্র।

    তাড়াশ উপজেলার সদরের মিলন কর্মকার মিলু জানান জানান, বছরের এ সময় এই খাতের ব্যবসা চাঙ্গা হয়। বেশি বিক্রি হয় ধারালো অস্ত্র। এর মধ্যে রয়েছে- বঁটি, দা, ছুরি, চাকু, রামদা এবং শান পাথর।

    এদিকে উপজেলার নওগাঁ বাজারের প্রভাত কর্মকার জানান, ঈদ আসার ৩-৪ মাস আগে থেকে তারা সাধ্যমতো বিনিয়োগ করেন। এ ঈদের আগে দম ফেলানোর ফুসরত নেই। তিনি আরও বলেন, কোরবানির ঈদের কাজ দিয়ে যে টাকা আয় হয় তাতে বছরের ছয় মাস কাজ না করে চলা যায়। বড় পশু কোরবানি করতে লাগে বড় ধারালো অস্ত্র। আর ছোট পশুর জন্য লাগে ছোট অস্ত্র। শুধু আকারে নয়, মানেও রয়েছে পার্থক্য। এসব পণ্যের দাম একেক রকম। বাজারভেদেও দামে পার্থক্য হয়।

    তাছাড়া একাধিক ব্যবসায়ীরা জানান, মালের মান ভালো হলে দাম একটু বেশিই পড়ে। ভালো মানের এসব জিনিস বহু বছর ব্যবহার করা যায়। এতে ধারও তেমন কমে না। অনেকে আবার কোরবানির জন্য এসব ধারালো অস্ত্রের পাশাপাশি বাড়ি এবং কৃষি কাজে ব্যবহৃত কুড়াল, কাস্তে, কাঁচি ও শাবলসহ বিভিন্ন পণ্য কিনে নেয়।

    তাড়াশ পৌর সদরের হাসান আলী নামের এক ব্যবসায়ী জানান, বিভিন্ন জিনিসের দাম বাড়ছে বলে কামারদের তৈরি জিনিসের দামও বাড়ছে। মাত্র এক বছরের মধ্যেই দাম শতকরা প্রায় ১০ থেকে ১২ শতাংশ বেড়ে যায়। দোকান ভাড়া, বিদ্যুতের দাম, কয়লার দাম, শ্রমিকের মজুরি এবং এসব বানানোর যন্ত্রপাতির দাম বাড়ছে। যেমন- যে মাল গত বছর বিক্রি হয়েছে ২০০ টাকায়, এ বছর তার দাম ২১০ থেকে ২২০ টাকা।

    তাড়াশ বাজারে দেখা গেছে, চাকু বিক্রি হচ্ছে ১৮০ থেকে ৩৫০ টাকা কেজি দরে। দা ৩০০ টাকা, চাপাতি ৩৮০ টাকা, রুটি ভাজা তাওয়া ৮০ থেকে ১৬০ টাকা ও কুড়াল ১৬০ টাকা কেজিদরে বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া ছোট চাকু ২৫-৩০ টাকা, বেন্ট চাকু ৫০ টাকায় বিক্রি হয়।

    বিএম/প্রদীপ কর্মকার /রাজীব..