শর্ত পূরণ না হলে স্বদেশে ফিরতে রাজি না রোহিঙ্গারা
    রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন শুরু হচ্ছে না

    কক্সবাজার প্রতিনিধি : মিয়ানমারের রাখাইনে প্রত্যাবাসনের সহায়ক পরিবেশ না থাকায় বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের কেউ তাঁদের আদি নিবাসে ফিরতে রাজি হননি ।

    রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনপ্রক্রিয়া আজ শুরু হওয়ার কথা ছিল। এ নিয়ে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে কক্সবাজারের ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার মোহাম্মদ আবুল কালাম বলেন, রোহিঙ্গাদের দেওয়া শর্ত পূরণ না হলে তাঁদের একজনও স্বদেশে ফিরতে চান না। প্রত্যাবাসনের তৎপরতা শুরু হলে মিয়ানমারে নাগরিকত্ব, স্বাধীনভাবে চলার নিরাপত্তা, ফেলে আসা সম্পত্তি ফেরত ও নিরাপত্তা নজরদারির শর্ত দিয়েছিলেন বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গারা।

    কক্সবাজারের টেকনাফের জাদিমোরা শালবাগান রোহিঙ্গা শরণার্থীশিবিরে ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনারের সহকারীর কার্যালয়ের সামনে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন মোহাম্মদ আবুল কালাম।

    এ সময় চীনা প্রতিনিধিদলের দুজন সদস্য ও মিয়ানমারের প্রতিনিধিরা ছিলেন। বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন প্রতিনিধিও এ সময় উপস্থিত ছিলেন। আবুল কালাম বলেন, মিয়ানমার থেকে ৩ হাজার ৫৪০ জন রোহিঙ্গার নামের তালিকা বাংলাদেশ সরকারকে দেওয়া হয়েছিল। তাঁদের সাক্ষাৎকার নেওয়া হচ্ছে।

    দুপুর ১২টা পর্যন্ত ২৯৫ পরিবারের সাক্ষাৎকার নেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে শর্তবিহীনভাবে স্বদেশে ফেরত যাওয়ার মতো একজনকেও পাওয়া যায়নি। তবে বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে প্রত্যাাবাসন প্রক্রিয়ার জন্য যে নির্ধারিত সময় ছিল, তাতে সরকার যাবতীয় প্রস্তুতি সম্পন্ন করে রেখেছে। কোনো রোহিঙ্গা নাগরিক যদি বিনা শর্তে দেশে যেতে চান, তাহলে তাঁদের স্বদেশে ফেরত পাঠানো হবে। এখনও তাঁদের সাক্ষাৎকার নেওয়া হচ্ছে। প্রক্রিয়াটি চলমান।

    তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশ সরকার প্রথম থেকে বলে আসছিল, কোনো রোহিঙ্গা নাগরিককে জোর করে মিয়ানমারে পাঠানো হবে না।

    বেলা সাড়ে ১১টার দিকে ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার আবুল কালাম প্রতিতনিধিদলের তিনজনসহ শালবাগান শরণার্থীশিবিরে আসেন। এ সময় তারা প্রত্যাবাসন প্রত্যাশী রোহিঙ্গা নারী ও পুরুষের সঙ্গে কথা বলেন।

    প্রত্যাবাসনের প্রস্তুতিত হিসেবে টেকনাফের কেরণতলী থেকে উখিয়া হয়ে নাইক্ষ্যংছড়ি ঘুমধুম এলাকা পর্যন্ত নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়। সেখানে পুলিশ, র‌্যাবসহ অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে প্রস্তুত রাখা হয়েছিল।

    গত বছরের ১৫ নভেম্বর রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের প্রথম সময়সীমা ঠিক হয়েছিল। রোহিঙ্গারা রাজি না হওয়ায় সেবার একজনকেও রাখাইনে পাঠানো যায়নি। আজও কেউ রাখাইনে যেতে না চাওয়ায় এ নিয়ে দুই দফা রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের চেষ্টা দৃশ্যত ব্যর্থ হতে যাচ্ছে।

    বিএম/ইসলাম মাহমুদ/আরএস